২৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে ইউজিসি

আইন অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। অথচ আইনের তোয়াক্কা না করেই অস্থায়ী ক্যাম্পাসে চলছে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়। আইন মানার ক্ষেত্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) উদারনীতির কারণেই এমনটি হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ।

জানা গেছে, এক যুগেও স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে পারেনি এমন ২৮টি বিশ্ববিদ্যালয়কে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে ইউজিসি। অধিকাংশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গেই প্রভাবশালীরা জড়িত। ফলে আইন অমান্যকারী ঐসব বিশ্ববিদ্যালয়কে আইন মানতে বাধ্য করতে গিয়ে ইউজিসির কর্মকর্তারা নানা সময়ে হুমকির মুখে পড়ছেন। এখন কর্মকর্তারা খতিয়ে দেখছেন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানটিতে প্রভাবশালী কে কে জড়িত আছেন।

ইউসিজির সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিত্ চন্দ বলেন, যেসব বিশ্ববিদ্যালয় সাময়িক সনদ ও নবায়ন এই দুটি মিলিয়ে ১২ বছরেও স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে পারেনি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এ লক্ষ্যে কমিটিও গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি সংশ্লিষ্ট আইন না মানা বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে তাদের আয়-ব্যয়ের হিসাবও খতিয়ে দেখবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন প্রণয়নের পর থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাওয়ার জন্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে একাধিকবার সময় দেয় সরকার। কিন্তু এর মধ্যে মাত্র ২৮টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী ক্যাম্পাসে গেছে। বর্তমানে দেশে অনুমোদিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ১০৭টি। এর মধ্যে একাডেমিক কার্যক্রম চলছে ৯৮টির। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর সাত বছরের মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে হবে। সে অনুযায়ী সাত বছর অতিক্রম করছে ৭৮টি বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু এই ৭৮টির মধ্যে মাত্র ২৮টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সে হিসাবে এখনো ৫০টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে না বলে ইউজিসি জানিয়েছে।

এছাড়া আইন অনুযায়ী, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সাত বছরের মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে গিয়ে স্থায়ী সনদ নিতে ব্যর্থ হলে নবায়নের জন্য আবেদন করতে হবে। সরকার পাঁচ বছর নবায়ন বৃদ্ধি করতে পারে। কিন্তু নবায়নেও আগ্রহ দেখাচ্ছে না বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। সব মিলিয়ে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাওয়ার সময় পাওয়া যায় ১২ বছর। এমন সুযোগ পেয়েও ২৮টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী ক্যাম্পাসে যায়নি। এবার তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হলো।

ইউজিসির তথ্য অনুযায়ী ১২ বছরেও স্থায়ী ক্যাম্পাসে যায়নি এমন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে রয়েছে :ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি,সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়, সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটি, মানারত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি. ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি, প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি, স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, প্রাইম ইউনিভার্সিটি, সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি, গ্রিন ইউনিভার্সিটি, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি, শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি, দি মিলেনিয়াম ইউনিভার্সিটি, উত্তরা ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব সাউথ এশিয়া, ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি, প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সায়েন্সস, প্রাইম এশিয়া, রয়েল ইউনিভার্সিটি ও ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

Title