হলমুখী দর্শক, ভালো চলছে বঙ্গবন্ধুর বায়োপিক

নিজস্ব প্রতিবেদক: গত শুক্রবার থেকে প্রেক্ষাগৃহে চলছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনী অবলম্বনে নির্মিত সিনেমা ‘মুজিব : একটি জাতির রূপকার।’ সিনেমাটি নির্মাণের ঘোষণার পর থেকেই এটি নিয়ে দর্শক আগ্রহ ছিল ব্যাপক। জাতির পিতাকে সেলুলয়েডের পর্দায় দেখার এই অপেক্ষা যেন শেষ হলো। মুক্তির পর থেকেই ভালো দর্শক পাচ্ছেন বলে জানান প্রেক্ষাগৃহের মালিকরা।

রাজধানীর কয়েকটি প্রেক্ষাগৃহে খোঁজ নিয়ে এমন তথ্যই পাওয়া গেছে।
মতিঝিলের মধুমিতার কর্ণধার ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ বলেন, মুজিব সিনেমাটি আমার এখানে খারাপ যাচ্ছে না। ভালোই যাচ্ছে। পার্টির লোক একসঙ্গে আসছে, বেশি টিকেট বিক্রি হচ্ছে।

আমাদের ৪টা শো চলছে। এর মধ্যে সকাল সাড়ে ১১টার স্পেশাল শো এবং বিকেলের শো’তে দর্শক বেশি হচ্ছে। ছবিটি নিয়ে দর্শকের আগ্রহ দেখা যাচ্ছে, সাধারণ অন্য ছবি যেমন যায় তার থেকে ভালো যাচ্ছে। আমাদের নেতার জীবনী নিয়ে ছবি সবার মধ্যেই একধরনের উন্মাদনা কাজ করছে।

সিনেপ্লেক্সেও দর্শকের চাপ আছে বলে জানান স্টার সিনেপ্লেক্সের জ্যেষ্ঠ বিপণন ব্যবস্থাপক মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ। তিনি জানান, মুজিব সিনেমাটি দীর্ঘ প্রত্যাশিত সিনেমা, মানুষের অপেক্ষা ছিল। প্রচুর ভালো রেসপন্স পাচ্ছি। বেশ কিছু শো হাউসফুল যাচ্ছে।

সিনেপ্লেক্সের সব গুলো শাখা মিলে প্রায় ২১টা শো চলছে, দর্শকের চাপে আরও কয়েকটি শো বাড়ানো হচ্ছে। বিকেল, সন্ধ্যার শো অনেক দর্শক হচ্ছে। সব মিলিয়ে খুবই ভালো যাচ্ছে।

অন্যদিকে, প্রত্যাশার তুলনায় তেমন দর্শক পাচ্ছেন না বলে জানান লায়ন সিনেমা হলের কর্ণধার মির্জা আব্দুল খালেক। তিনি বলেন, আমার এখানে খুব ভালো যাচ্ছে না। যে পরিমাণ দর্শক হওয়ার কথা, আমাদের যে প্রত্যাশা ছিল সেটা পূরণ হচ্ছে না। যেমন আজকের দুপুর ১২ টা ১০ মিনিটের শো’তে টিকেট বিক্রি হয়েছে ১৮ থেকে ২০টা এবং বিকেল ৩ টা ৩০ মিনিটের শো’তে ৩০ থেকে ৩৫ টা টিকেট বিক্রি হয়েছে। খুব আহামরি দর্শক বা ভালো বলার মতো টিকেট কিন্তু বিক্রি হচ্ছে না। কেন হচ্ছে না তার কারণটা খুঁজে পাচ্ছি না। তবে তরুণ দর্শক খুব কম, গতকাল সারাদিন আমি হলে ছিলাম, দেখেছি ষাটোর্ধ দর্শকই বেশি। তবে মাত্র দুইদিন তো, হয়তো দর্শক বাড়তে পারে।

তবে সিনেমাটি দেখার পর দর্শকের চোখে মুখে তৃপ্তির ছোঁয়া দেখা যাচ্ছে। পর্দায় যেন জীবন্ত বঙ্গবন্ধুকে দেখতে পারছেন। বঙ্গবন্ধু চরিত্রে আরিফিন শুভকে নিয়েও বেশ প্রশংসা করছেন। স্টার সিনেপ্লেক্সে আসা এক দর্শক বলেন, বঙ্গবন্ধুর জীবনটাকে আরও ভালোভাবে দেখার জন্য সিনেমাটি দেখতে এসেছি। আমি তৃপ্ত। যারা বঙ্গবন্ধুকে দেখেনি, তারা পর্দায় তার চরিত্রাভিনেতার (আরেফিন শুভ) মধ্য দিয়ে তাকে উপলব্ধি করতে পারবেন। বইয়ের পড়াগুলো পর্দায় অনুভব করলাম। আরও আগে এই সিনেমা নির্মাণ করার দরকার ছিল।

সিনেমাটি দেখে আবেগপ্রবণ হয়ে উঠছেন অনেক দর্শক। এক দর্শক জানায়, শেষ ১৫ আগস্ট এই দৃশ্যটা আমার কাছে খুবই হৃদয়বিদারক লেগেছে। আমার চোখে পানি নিয়ে এসেছে।

বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত হয়েছে সিনেমাটি। ভারতের খ্যাতিমান পরিচালক শ্যাম বেনেগালের পরিচালনায় সিনেমাটিতে বঙ্গবন্ধুর চরিত্রে অভিনয় করেছেন আরিফিন শুভ এবং ফজিলাতুন নেছা মুজিবের চরিত্রে নুসরাত ইমরোজ তিশা। আরও অভিনয় করেছেন নুসরাত ফারিয়া, চঞ্চল চৌধুরী, দিলারা জামান, সিয়াম আহমেদ, জায়েদ খান, খায়রুল আলম সবুজ, ফেরদৌস আহমেদ, প্রার্থনা ফারদিন দীঘি, রাইসুল ইসলাম আসাদ, গাজী রাকায়েত, তৌকীর আহমেদ, মিশা সওদাগরসহ দেশের শতাধিক শিল্পী।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

Title