স্বামীর যৌতুকের টাকা দিতে না পারায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা

গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি: নাটোরের গুরুদাসপুরে স্বামীর নির্যাতনের শিকার হয়ে দ্বিতীয় স্ত্রীও আত্মহত্যা করল। উপজেলার খুবজীপুর বড়পাড়া এলাকায় স্বামীর যৌতুকের ২০ হাজার টাকা ও গয়না দিতে না পারায় গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেছে বাল্যবধূ আকলিমা (১৪)। ঘটনার পর থেকে আকলিমার স্বামী সাগর ও তার বড়ভাই আপাল, দুলাল ও মা আছিয়া বেগম পলাতক রয়েছে।

সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, উপজেলার খুবজীপুর বড়পাড়া এলাকার লিয়াকত সরকারের ছেলে রাজমিস্ত্রি সাগর সরকারের সাথে সাড়ে তিনমাস আগে আকলিমার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের দাবিতে শ^াশুড়ী আছিয়া ও স্বামীর নির্মম নির্যাতনের শিকার হয় আকলিমা। আত্মহত্যার তিনদিন আগে বাপের বাড়ি থেকে যৌতুকের টাকা ও গয়না না আনায় স্বামী শ্বাশুড়ীর ভৎসনার শিকার হয় সে। একপর্যায়ে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে পাশর্^বর্তী দুলাভাই টিক্কা প্রামাণিকের বাড়িতে যায় আকলিমা। দুলাভাইকে না পেয়ে তার বাড়ির ঘরের ডাবের সাথে গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করে সে। স্থানীয়রা তাকে স্থানীয় চিকিৎসক মুক্তার হোসেনের কাছে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করেন। এসময় আকলিমার লাশ ডাক্তারের চেম্বারের সামনেই পড়েছিল। তখন বৃষ্টিতে ভিজছিল আকলিমার নিথর দেহ। খবর পেয়ে রাত ১০টার দিকে আকলিমার লাশ উদ্ধার করে থানা নিয়ে আসে পুলিশ।

আকলিমার দুলাভাই টিক্কা জানান, বিয়ের পর থেকেই তার শ্যালিকাকে সাগর অত্যাচার করত। মাঝে মধ্যে মারধরও করত। ঘটনার দিন আকলিমা আমার বাসায় এসে সবার অজান্তে ঘরের দরজা বন্ধ করে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করে। প্রতিবেশিরা জানায়, সাগরের মা আছিয়ার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে তার স্বামী লিয়াকত আলী তাকে তালাক দিয়ে অন্যত্র বসবাস করছেন। এছাড়া যৌতুকলোভি সাগরের অত্যাচারের কারণে প্রথম স্ত্রী পুর্ণিমা (১৪) বিষ খেয়ে আট মাসের মাথায় আত্মহত্যা করেছিল। দ্বিতীয় স্ত্রী আকলিমাও বিয়ের চার মাসের মাথায় আত্মহত্যা করল। দুটোই ছিল বাল্যবিয়ে। আকলিমা হত্যায় প্ররোচিতকারীদের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু বিচার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় খুবজীপুর ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম দোলন।

গুরুদাসপুর থানার ওসি মোজাহারুল ইসলাম বলেন, লাশটি নাটোর মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। আকলিমার পক্ষে স্বজনরা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। পুলিশ তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেবে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

Title