সৈয়দপুরে মাস্কের কোন বালাই নেই

সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধিঃ  নীলফামারীর সৈয়দপুরে মাস্ক ব্যবহারে কোন বালাই নাই। রিকশা-ভ্যানসহ সব পরিবহন চালক-যাত্রী, বাজারের ক্রেতা-বিক্রেতা, হকার-পথচারী সকলের মাঝেই উদাসীনতা বিরাজ করছে। লকডাউন ঘোষণার পরও সাধারণ মানুষের মাঝে এ নিয়ে বিন্দুমাত্র সচেতনতা সৃষ্টি হয়নি। করোনা টিকা কার্যক্রম শুরুর পর থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়ে দায়িত্ব জ্ঞানহীন হয়ে পড়েছে উপজেলাবাসী।  ফলে সড়ক, হাট-বাজার, মার্কেট, গণপরিবহনে মাস্ক ব্যবহার না করেই অধিকাংশ মানুষ চলাচল করছে। বিশেষ করে শহরে জনসমাগম স্থানগুলোতেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কিঞ্চিত চেষ্টা নেই কারই।

উপজেলায় গণ টিকাদান কার্যক্রম শুরুর পর থেকে সরকারের ‘নো মাস্ক-নো সার্ভিস’ নীতি শিথিল হয়ে পড়েছে। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সেবা গ্রহীতাদের মাঝে মাস্ক পরার প্রবণতা হ্রাস পেয়েছে। একই অবস্থা বিরাজ করছে সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যেও। এতে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার প্রতি চরম উদাসিন হয়ে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।

উপজেলার হাট-বাজার, মার্কেট, জনসমাবেশ, গণপরিবহনে মাস্ক পরিধান না করে অধিকাংশ মানুষ চলাচল করছে। অনেকে মাস্ক পরলেও সঠিকভাবে তা পরিধান করছে না। তারা মাস্ক থুতনির নীচে নামিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন সর্বত্র। ফলে গুরুত্ব হারাচ্ছে মাস্ক পরিধান বজায় রাখার সরকারি পরামর্শ।

আবার টিকা গ্রহণকারীদের মাঝেও দেখা যাচ্ছে উদাসীনতা। এখন খুব নগণ্য সংখ্যক মানুষ মাস্ক পরিধান করে চলাফেরা করছে। এতে টিকা না পাওয়া মানুষের করোনা সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে। এমনকি ঝুঁকিতে থাকছেন টিকা গ্রহীতারাও। মানুষজনের মাঝে স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলাসহ মাস্ক পড়ার প্রবণতা কমে যাওয়ায় তাদের কাছে মনে হচ্ছে করোনাকে তারা ভয় পান না। কিন্তু দিনের পর দিন যে অবস্থা যাচ্ছে তাতে করোনা পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে।

শহরের বাসটার্মিনাল ও রেলওয়ে স্টেশনে দেখা যায়, টার্মিনালে ও প্লাটফর্মে যাত্রীদের ভীড়। অথচ কারো মুখে মাস্ক নেই। মাস্ক ছাড়াই গণপরিবহনে যাতায়াত করছে মানুষ। এ নিয়ে কোন ভাবান্তরও দেখা গেল না পরিবহন সংশ্লিষ্ট লোকজনসহ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের।

শহরের পৌরসভা কাঁচা বাজার, মাছ বাজারেও দেখা গেল একই চিত্র। এমনকি পাড়া-মহল্লার মুদি দোকানেও মাস্কের তোয়াক্কা করছেন না কেউ।

স্থানীয় চিকিৎসকরা জানান, করোনা ভাইরাস ঠেকাতে ভ্যাকসিন নেয়ার পাশাপাশি মাস্ক পরিধান করা বেশি কার্যকর। অথচ সরকারের পরামর্শ মানছে না বেশীর ভাগ মানুষ। এর জন্য মাঠ পর্যায়ে আরও প্রচার-প্রচারণা দরকার।

সৈয়দপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আবু মোঃ আলেমুল বাশার বলেন, মাস্ক ব্যবহারে উদাসীনতা দেখা যাচ্ছে লোকজনের মাঝে। যা করোনা সংক্রমণের জন্য খুবই বিপদজনক। কারণ করোনা প্রতিরোধে মাস্কের বিকল্প নেই। টিকা গ্রহণ ও মাস্ক পরিধান করতে মাঠ পর্যায়ে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। তবে করোনা নির্মূল করতে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন বলে জানান তিনি।

সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মোখছেদুল মোমিন সৈয়দপুরকে করোনামুক্ত রাখতে মাস্ক ব্যবহারসহ স্বাস্থ্যবিধি পালনে সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি দোকানদার, পরিবহন শ্রমিক ও সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা কর্মচারীদের প্রতি মাস্ক ছাড়া সেবা প্রদান না করার পরামর্শ দেন। এতে মানুষের মাঝে বাধ্যতামূলক হলেও মাস্ক ব্যবহার ও স্বাস্থ্যবিধি পালনের প্রভাব পড়বে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

Title