নিজস্ব প্রতিবেদক: করোনা আতঙ্কের আবহেই এবার দেবীপক্ষের সূচনা হয়েছে। আর মহামারির দুর্যোগ মাথায় নিয়েই এবার হচ্ছে মাতৃবন্দনা। ভক্তরা এ বছর পৃথিবীর সব মানুষকে করোনামুক্ত রাখার জন্য দেবীর কাছে প্রার্থণা জানাবেন। ষষ্ঠী পূজার মধ্যমে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। সকালে কল্পারম্ভ এবং সন্ধ্যায় বোধন আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মধ্যদিয়ে উৎসবের প্রথম দিনে শুরু হয়েছে ষষ্ঠী পূজা। তাই সকল মণ্ডপ এলাকা সকাল থেকে চণ্ডিপাঠে মুখরিত।গত ১৭ সেপ্টেম্বর শুভ মহালয়ায় পিতৃপক্ষের সমাপ্তিতে দেবীপক্ষের শুভ সূচনা হলেও এ বছরের আশ্বিন মাস ‘মল মাস’ হওয়ায় দেবীপক্ষের প্রায় এক মাস পাঁচ দিন পর হেমন্তের কার্তিকে আজ বৃহস্পতিবার ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হলো। পাঁচ দিনের পূজা শেষ হবে ২৬ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে।
পঞ্জিকা মতে, এবার দেবী দুর্গার আগমন হচ্ছে দোলায়। দোলায় চড়ে বাপের বাড়ির উদ্দেশ্যে স্বামীর ঘর থেকে রওনা দেবেন তিনি। তবে, মায়ের গমন এবার গজে। অর্থাৎ হাতিতে চড়ে মা বাপের ঘর ছেড়ে পাড়ি দেবেন স্বর্গে।
শরৎকালের দুর্গাপূজায় বোধনের বিধান রয়েছে। বোধন শব্দের অর্থ জাগরণ বা চৈতন্যপ্রাপ্ত। পূজা শুরুর আগে বেলশাখায় দেবীর বোধন দুর্গাপূজার অত্যাবশ্যকীয় অঙ্গ। পুরাণ অনুসারে, রাক্ষসরাজ রাবণকে বধের উদ্দেশ্যে ভগবান রামচন্দ্র শরৎকালে দুর্গাপূজা করেন। অকালে দেবীকে তিনি বোধন করেন বলে একে অকালবোধনও বলা হয়।
দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেন, দুর্গাপূজার সাথে মিশে আছে চিরায়ত বাংলার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি। রয়েছে প্রকৃতির সাথে নিগূঢ় সম্পর্ক। সে সম্পর্ক শরতের শুভ্রতা আর নীলিমাকে ধারণ করে হৃদয়ে এনে দেয় পূণ্যের শ্বেতশুভ্র আবহ। শুধু তাই নয়, ধর্মীয় উৎসবের পাশাপাশি দুর্গাপূজা দেশের জনগণের মাঝে পারস্পরিক সহমর্মিতা ও ঐক্য সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, শারদীয় দুর্গোৎসব সত্য-সুন্দরের আলোকে ভাস্বর হয়ে উঠুক, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার মধ্যে সম্প্রীতি ও সৌহার্দের বন্ধন আরো সুসংহত হোক-এ কামনা করি।
বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দুর্গাপূজা শুধু হিন্দু সম্প্রদায়ের উৎসবই নয়, এটি এখন সার্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে। অশুভ শক্তির বিনাশ এবং সত্য ও সুন্দরের আরাধনা শারদীয় দুর্গোৎসবের প্রধান বৈশিষ্ট্য।
তিনি বলেন, আবহমানকাল ধরে বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। ‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার’-এ মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে বাংলাদেশে আমরা সব ধর্মীয় উৎসব একসঙ্গে পালন করে থাকি। আমাদের সংবিধানে সকল ধর্ম ও বর্ণের মানুষের সমান অধিকার সুনিশ্চিত করা হয়েছে।