শেরপুর জেলা প্রতিনিধিঃ শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তর্তী গ্রামগুলোতে বন্য হাাতির মহড়া শুরু হয়েছে। এতে চলতি বোরো ফসল নিয়ে আতংকে রয়েছেন ওই এলাকার কৃষকরা। ফসল রক্ষায় গত কয়েক দিন ধরে মশাল জ্বালিয়ে নির্ঘুম রাত কাটছে এলাকাবাসীর।
উপজেলার ডালুকোনা ও খলচান্দা এলাকার পাহাড়ের টিলা থেকে সন্ধ্যা হলেই হাতি নেমে আসে পাকা ধান খেতে। বোরো ফসল রক্ষায় এলাকাবাসী হাতি তাড়াতে মশাল জ্বালিয়ে নিজের জমিতে অবস্থান করেন।
পোড়াগাও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি বন্দনা চাম্বু গং বলেন, বর্তমানে পাহাড়ের সমতলে বোরো ধান পাকা শুরু হয়েছে। প্রতিবছরই ধান ও কাঁঠাল পাকার মৌসুমে হাতির পালটি সন্ধ্যার দিকে খাদ্যের সন্ধানে লোকালয়ে চলে আসে। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ২০-২৫টি বন্য হাতির পাল উপজেলার আন্ধারুপাড়া গ্রামের ডালুকোনা এলাকার পাহাড় ধান ক্ষেতে নেমে আসে। সীমান্ত এলাকায় হাতি তাড়াতে একটি দল টের পেয়ে মশাল জ্বালিয়ে ও হৈ-হুলোøর করে হাতি তাড়িয়ে দেয়। দিনের বেলা হাতি গুলো সীমান্তের শুণ্য রেখায় জঙ্গলে অবস্থান করে আর সন্ধ্যা হলেই সমতলে ধান খেতে নেমে আসে।
সংশ্লিষ্ট পোড়াগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজাদ মিয়া জানান, প্রায় ১৫ বছর আগে বন্য হাতির দল ভারতের মেঘালয়ের পিক পাহাড় থেকে দলছুট হয়ে বাংলাদেশের গারো পাহাড়ে চলে আসে। ভারত সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের বাঁধার কারণে হাতিগুলো পুনরায় তাদের আবাসস্থলে ফিরে যেতে পারেনি। প্রথম দিকে গারো পাহাড়ে অবস্থান নেওয়া ওই হাতির সংখ্যা ছিল ২০-২৫টি। বর্তমানে এ সংখ্যা ৫০-৬০টির বেশি। এই দলটি সীমান্ত এলাকা চষে বেড়ায়।
তিনি আরো বলেন, এই কয়েকদিন ধরে পাহাড়ী গ্রামের মানুষের ঘুম নাই। সন্ধ্যা হলে ফসল রক্ষার জন্য লোকজন নিয়ে মশাল জ্বালিয়ে ক্ষেতেই রাইত কাটাই। ধান পাকলেই প্রতিবছর আমগর এই ভাবেই ধান ক্ষেত রক্ষা করি। আমরা ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্থদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি।
এ ব্যাপারে নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হেলেনা পারভীন বলেন, খবর পেয়ে আমি ওই এলাকায় গিয়েছিলাম। গ্রামবাসীদের বন্য হাতি তাড়ানোর জন্য মশাল জ্বালাতে ৫১ জনের মাঝে পাঁচ লিটার করে কেরোসিন তেল বিতরণ করা হয়েছে। সেইসাথে ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকাও করা হচ্ছে।