নিজস্ব প্রতিবেদক : শোকের মাস আগস্ট শুরু আগামীকাল শনিবার থেকে। ঘাতকরা এ মাসের ১৫ তারিখ সপরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। সেই থেকে দিনটি মানবসভ্যতার ইতিহাসে ঘৃণ্য ও নৃশংসতম হত্যাকাণ্ডের কালিমালিপ্ত শোকের দিন। প্রতি বছর আওয়ামী লীগসহ পুরো জাতি আগস্ট মাসকে শোকের মাস হিসেবে পালন করে। এ বছর মাসটির প্রথম দিনে ঈদুল আজহা উদযাপন হবে।
এছাড়া মহামারি করোনাভাইরাসের কারণেও শোকের মাসের কর্মসূচি বাস্তবায়ন হবে সীমিত পরিসরে এবং যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে। তবে অনলাইনে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে শোকের মাস পালন করবে আওয়ামী লীগ এবং তার সহযোগী সংগঠনসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনগুলো।
আওয়ামী লীগএক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে জানায়, প্রতি বছরের মতো এবারও শোকের মাসে মাসব্যাপী কর্মসূচি পালন করবে দলটি। তবে করোনাভাইরাস সংকটের কারণে এবার প্রায় সব আয়োজন হবে ভার্চুয়াল মাধ্যমে। পাশাপাশি সীমিত উপস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে জাতির পিতার সমাধি ও প্রতিকৃতি এবং বনানীতে ১৫ আগস্টের শহীদদের কবরে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন পর্ব থাকবে।
কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সহযোগী সংগঠন এবং তৃণমূল আওয়ামী লীগও স্বাস্থ্যবিধি মেনে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে আগস্ট মাসের কর্মসূচি পালন করবে। এছাড়া ৫ আগস্ট জাতির পিতার জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামালের জন্মদিন, ৮ আগস্ট বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মদিন, ১৭ আগস্ট সিরিজ বোমা হামলা দিবস এবং ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা দিবসে কর্মসূচিটি পালন করবে আওয়ামী লীগ।
সঙ্গে তার সহধর্মিণী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, বঙ্গবন্ধুর একমাত্র ভাই শেখ আবু নাসের, জ্যেষ্ঠ পুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন শেখ কামাল, দ্বিতীয় পুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা লেফটেন্যান্ট শেখ জামাল, কনিষ্ঠ পুত্র শিশু শেখ রাসেল, নবপরিণীতা পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক শেখ ফজলুল হক মনি ও তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বেগম আরজু মনি, স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম সংগঠক ও জাতির পিতার ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাত, তার ছোট মেয়ে বেবী সেরনিয়াবাত, কনিষ্ঠ পুত্র আরিফ সেরনিয়াবাত, নাতি সুকান্ত আবদুল্লাহ বাবু, ভাইয়ের ছেলে শহীদ সেরনিয়াবাত, আবদুল নঈম খান রিন্টু, বঙ্গবন্ধুর প্রধান নিরাপত্তা অফিসার কর্নেল জামিল উদ্দিন আহমেদ ও কর্তব্যরত অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী নিহত হন। ৭৫-এর ১৫ আগস্ট নরপিশাচরূপী খুনিরা শুধু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি, হত্যার বিচার বন্ধ করতে ঘৃণ্য ইনডেমনিটি আইন জারি করে। এ কারণে দীর্ঘ ২১ বছর বাঙালি জাতি বিচারহীনতার কলঙ্কের বোঝা বহন করতে বাধ্য হয়।
প্রসঙ্গত, ১৫ আগস্টের নিষ্ঠুরতম হত্যাকাণ্ডে বঙ্গবন্ধুর ১৯৯৬ সালে জাতির পিতার জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠিত হলে এ বিচারের উদ্যোগ নেয়া হয়। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে নিয়মতান্ত্রিক বিচারিক প্রক্রিয়ায় ২০১০ সালে ঘাতকদের ফাঁসির রায় কার্যকর হওয়ায় বাঙালি জাতি কলঙ্কমুক্ত হয়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালির স্বাধীনতা ও মুক্তির প্রতীক। বাংলার ইতিহাসের মহানায়ক, স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা, স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা। বাঙালি জাতির পিতা। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি। তিনি চেয়েছিলেন ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের জনগণের মুক্তির যে স্বপ্ন দেখেছিলেন তা বাস্তবায়নে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন তারই কন্যা শেখ হাসিনা। তার (শেখ হাসিনা) বলিষ্ঠ নেতৃত্বে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যকে জয় করে বিশ্বসভায় একটি উন্নয়নশীল, মর্যাদাসম্পন্ন জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ।