নিজস্ব প্রতিবেদক: ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে অভিযান-১০ লঞ্চে আগুনে এ পর্যন্ত ৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে। দুর্ঘটনায় দগ্ধ কমপক্ষে ১৫ জন রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন। অগ্নি দুর্ঘটনায় দগ্ধ ও আহতদের সর্বোচ্চ চিকিৎসার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক অধ্যাপক ডা. সামন্ত লাল সেন জানিয়েছে, মালদ্বীপ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অগ্নিদগ্ধদের চিকিৎসার খবর রাখছেন। সর্বোচ্চ চিকিৎসার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
নৌ-পথে স্মরণকালের ভয়াবহ দুর্ঘটনায় নিখোঁজদের স্বজনরা হাসপাতালে ভিড় করছেন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে। যেমন, ৩৮ বছর বয়সী বশির উদ্দীন, অসুস্থ শ্বশুরের চিকিৎসা শেষে ঢাকার ক্যান্সার হাসপাতাল থেকে বরগুনার নিজ গ্রামে ফিরছিলেন। আগুন থেকে বাঁচতে ১১ বছরের সন্তান তাইফাকে কোলে নিয়ে লাফিয়ে পড়েন পানিতে। দেড় ঘন্টা সাঁতরে তীরে ফিরলেও মেয়েকে বাঁচাতে পারেননি। বশির এখন ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটে চিকিৎসাধীন।
এই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন একই পরিবারের তিন সদস্য সত্তুর বছর বয়সী মমতাজ, তার ১৩ বছরের নাতি এবং এক ছেলে। মমতাজ বেগমের আরেক ছেলের বউ এবং তার মেয়ে এখনো নিখোঁজ। আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অগ্নিদগ্ধ রাসেল। এ অবস্থায় স্বজনরা খুঁজে ফিরছেন রাসেলের নিখোঁজ স্ত্রী ও ছেলেকে। শুক্রবার দিবাগত রাতেই এই হাসপাতালে হাবিবুর রহমান নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে অগ্নিদগ্ধদের স্বজনদের আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠছে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণ। লঞ্চ দুর্ঘটনা এড়াতে ফিটনেস মনিটং করা এবং দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছে স্বজনরা।
উল্লেখ্য, ঢাকা থেকে বরগুনাগামী যাত্রীবাহী লঞ্চ অভিযান-১০’এ অগ্নিকাণ্ডে এখন পর্যন্ত মোট ৩৯ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ৭০ জনের বেশি ব্যক্তিকে দগ্ধ অবস্থায় চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।