রোববার পহেলা ফাল্গুন দিয়ে শুরু হবে ঋতুরাজ বসন্ত

রোববার পহেলা ফাল্গুন দিয়ে শুরু হবে ঋতুরাজ বসন্তের। একইসঙ্গে বাংলা সনের তারিখে পরিবর্তন আনায় পয়লা ফাল্গুনের দিনে পড়েছে বিশ্ব ভালোবাসা দিবসও।

আগের বছরগুলোতে এ দুটি দিবস এক দিন আগে–পরে আসত। আগের দিন, অর্থাৎ ১৩ ফেব্রুয়ারি বাসন্তী রঙে রঙিন হয়ে যেত পুরো নগরী। এক দিন পর, অর্থাৎ ১৪ ফেব্রুয়ারি ভালোবাসার রং লাল ছড়িয়ে পড়ত নগরীতে। বসন্ত এমনিতেই ভালোবাসার ঋতু।

ভালোবাসার দু-দুটি দিবসে ফুল দেয়া-নেয়ার মধ্য দিয়ে চলবে ভালোবাসার আদান-প্রদান। লাল-হলুদ-বেগুনি গোলাপ, ডালিয়া, ডায়ানথাস, চন্দ্রমল্লিকা, গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধা, জারবেরা, গাঁদাসহ নানা ফুল শোভা পাবে মানুষের হাতে, কিশোরী-তরুণীদের খোঁপায় কিংবা মাথার টায়রায়।

এদিকে করোনার কারণে বাণিজ্য মুখ থুবড়ে পড়লেও এবার পয়লা ফাল্গুন আর ভালোবাসা দিবসকে ঘিরে ব্যবসার আশা করছেন ফুল ব্যবসায়ীরা। ফাল্গুন মাস আসার প্রায় চার-পাঁচদিন আগে থেকেই ফুলে ফুলে ভরে উঠেছে নগরীর ফুলবিতানগুলো।

প্রতিবছর পয়লা ফাল্গুনকে ঘিরে ফুলের ব্যবসা জমজমাট হলেও এবার করোনার কারণে উৎসব পালনে স্বাস্থ্যবিধির নির্দেশনা আছে। এরপরও পয়লা ফাল্গুন আর ভ্যালেন্টাইন ডেতে ফুলের বাণিজ্য জমে উঠবে বলেই আশা করছেন ব্যবসায়ীরা।

শুক্রবার ঢাকার শাহবাগের ফুলের দোকানগুলো আগাম প্রস্তুতি দেখা গেছে। দোকানগুলোতে থরে থরে সাজানো হয়েছে নানা রকম ফুলের সাজি। বানানো হচ্ছে মেয়েদের মাথায় পড়ার ফুলের রিংসহ হাত ও গলার হার। সবমিলিয়ে ফুলের ঘাটতি নেই দোকানে। ক্রেতার ঘাটতি হবে না বলেও মনে করছেন দোকানিরা।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, এবারের ফাল্গুনের দিন তাদের কাছে ভিন্ন। প্রতি বছর এ মৌসুমে ফুলের ব্যবসা ভাল হলেও এ বছর করোনার কারণে ক্রেতা সংকট আছে। তাই আয়োজন অন্যবারের চেয়ে কম। তবুও প্রস্তুতিতে ঘাটতি রাখছেন না তারা।

অরকিড ফ্লাওয়ার শপের মালিক মমিন হোসেন বলেন, ফাল্গুন আর ভালবাসা দিবস একদিনে পড়ছে। এসময় ফুলের দাম একটু বেশিই থাকে। দুই দিন আগেই ফুলের দাম বেড়েছে। গত ফাল্গুনের পর করোনা আসার পর ব্যবসার অবস্থা খারাপ। আশা করছি এবার কাস্টমার আসবে।

শাহবাগে দেখা গেছে, প্রতিটি গোলাপ বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা, ক্যালেনডোলা ১০ টাকা। তবে ফাল্গুনের দিন দাম বেড়ে ৩০ টাকা থেকে চল্লিশ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হতে পারে বলে ব্যবসায়ীদের ভাষ্য। যদিও পাইকারি দরে ফুলের দাম অনেকটা কম। গোলাপের ‘শ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ৩০০ টাকায়। এছাড়া গাঁদা ফুলের মালা বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। জারবেরা ২০ থেকে ২৫ টাকা পিস। হলুদ রঙের ক্যালেনডোলা বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ টাকা পিস দরে।

ফাল্গুনসহ উৎসবাদিতে মেয়েদের মাথায় পরা ফুলের রিংয়ের চাহিদা থাকে সবচেয়ে বেশি। সচরাসচ ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হলেও রোববার ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হতে পারে বলে চানাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

শুক্রবার শাহবাগের ফুটপাতে বসে একদল নারীকে এসব রিংসহ ফুলের বিভিন্ন উপহার তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাতে দেখা গেছে। দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে তারা বিভিন্ন ফুলের দোকানের হয়ে এই কাজ করেন। এসব আয়োজন দেখে বলাই যায় ঋতুরাজ বসন্ত ও ভালোবাসা দিবসকে রাঙাতে ভরে উঠছে ফুলের দোকান।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

Title