নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর সঙ্গে রেলপথে যুক্ত হলো পদ্মা সেতু। প্রথমবারের মতো শনিবার বেলা সোয়া ১১টায় পদ্মা সেতু রেলসংযোগ প্রকল্পের ঢাকা-ভাঙ্গা অংশ পাড়ি দিয়ে পরীক্ষামূলক রেলট্র্যাক কার মুন্সীগঞ্জের মাওয়ায় পৌঁছায়। পরে ট্র্যাক কারটি সেখান থেকে সেতু পাড়ি দিয়ে পদ্মার ওপারে ফরিদপুরের ভাঙ্গায় যায়।
এর আগে ঢাকার গেণ্ডারিয়া রেলস্টেশন থেকে ট্র্যাক কারটি সকাল সাড়ে ৯টার দিকে রওনা হয়। চলতি পথে রেলট্র্যাক কারে থাকা পর্যবেক্ষক দল ঢাকা-মাওয়া অংশে স্থাপিত রেল লাইনের বিভিন্ন পয়েন্টে ও স্টেশনের ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলো পর্যবেক্ষণ করে।
১৭২ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা রেলসংযোগ প্রকল্পের ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ৮১ কিলোমিটার রেলপথে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু করতে পরীক্ষামূলকভাবে এই কার্যক্রম চালানো হয়।
জানা গেছে, গেণ্ডারিয়া স্টেশন থেকে বুড়িগঙ্গা ও ধলেশ্বরী নদী অতিক্রম করে মাওয়া স্টেশনে পৌঁছাতে ট্র্যাক কারটির সময় লেগেছে পৌনে দুই ঘণ্টা।
এ সময় ট্র্যাক কারে ছিলেন রেলওয়ের মহাপরিচালক কামরুল হাসান, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প পরিচালক আফজাল হোসেন, প্রকল্প ব্যবস্থাপক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ জামিউল ইসলামসহ দেশি-বিদেশি প্রকৌশলীরা।
মাওয়া স্টেশনে পৌঁছে এক ঘণ্টার যাত্রা বিরতিতে সংশ্লিষ্টরা বৈঠক করেন। পরে ট্র্যাক কারটি দুপুর সোয়া ১২টার দিকে সেতু অতিক্রম করে সোয়া ১টার দিকে ভাঙ্গায় পৌঁছায়। সেখান থেকে বিকেলে কর্মকর্তারা সড়ক পথে ঢাকায় ফেরেন।
প্রকল্প পরিচালক আফজাল হোসেন বলেন, ঢাকা-পদ্মা সেতু রেলপথে এখন চলছে ফিনিশিংয়ের কাজ। মাসখানেক পর ঢাকা থেকে ভাঙ্গা যাত্রীবাহী ট্রেন চালু হবে। ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত প্রকল্পের ১৭২ কিলোমিটার রেলপথে ট্রেন চলাচল চালু হবে ২০২৪ সালে।
প্রকল্পের জুনিয়র স্ট্রাকচার প্রকৌশলী নীলাকর বিশ্বাস জানান, আগামী মাসে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ৮২ কিলোমিটার রেলপথে যাত্রীবাহী ট্রেন চালু করতে শনিবার পরীক্ষামূলক ট্র্যাককার চালানো হলো।
প্রকল্প সূত্র জানায়, পদ্মা সেতু রেল সংযোগকে দুটি ভাগে ভাগ করে কাজ চলছে। একটি ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ৮১.৮৭৫ কিলোমিটার, অপরটি ভাঙ্গা জংশন থেকে যশোর পর্যন্ত ৭৯ কিলোমিটার। কাজের সুবিধার জন্য এই দুই ভাগকে আবার তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে– ঢাকা থেকে মাওয়া, মাওয়া থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ভাঙ্গা ও সেখান থেকে যশোর। গত জুলাই পর্যন্ত ঢাকা থেকে মাওয়া অংশের নির্মাণকাজের অগ্রগতি হয়েছে ৮০ শতাংশ। একইভাবে মাওয়া-ভাঙ্গা অংশের ৯৬ শতাংশ ও ভাঙ্গা-যশোর অংশের নির্মাণকাজের অগ্রগতি ৭৬ শতাংশ। জুলাই পর্যন্ত প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৮১ শতাংশ।