নিজস্ব প্রতিবেদক: আসন্ন রমজানে দেশের ১ কোটি দরিদ্র পরিবারের মধ্যে বিনামূল্যে ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করবে সরকার।
বৃহস্পতিবার দুপুরে খাদ্য মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রীর কক্ষে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, রমজান মাসে দেশের দরিদ্র মানুষের যাতে কষ্ট না হয়, সে জন্য সরকার বিনামূল্যে ভিজিএফ কর্মসূচির মাধ্যমে ১ কোটি পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল দেবে। রমজানের শুরুতে ৫০ লাখ এবং রমজানের শেষ ভাগে ৫০ লাখ পরিবারের মধ্যে এই চাল বিতরণ করা হবে বলেও জানান তিনি।
খাদ্যমন্ত্রী আরও জানান, ভিজিএফ কর্মসূচিতে বিনামূল্যে চাল বিতরণ করার প্রক্রিয়া আগে থেকেই চালু আছে। তবে এই রমজানে পণ্যের চরা দামের কারণে মানুষকে বিনামূল্যে বিতরণ করা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, এবার দেশে আমনের ভালো ফলন হলেও চালের বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়েনি। উল্টো দাম বেড়েছে। কারণ, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ বিভিন্ন কারণে অসাধু ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত মুনাফার আশায় ধান, চাল গুদামজাত করে রেখেছে। ফলে বিপাকে পড়েছে স্বল্প আয়ের মানুষ। অথচ মৌসুমের সময় স্বাভাবিকভাবেই চালের দাম কম থাকার কথা।
কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে দেশে ৫৯ লাখ হেক্টর জমিতে আমনের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও উৎপাদন হয়েছে ৫৯ লাখ ৫৬ হাজার হেক্টর জমিতে। আর উৎপাদন হয়েছে ১ কোটি ৭০ লাখ টন। কিন্তু এর প্রভাব নেই চালের বাজারে।
কারা পাবেন ভিজিএফ? সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সরকারের বেঁধে দেওয়া ১২ শর্তের মধ্যে চারটি পূরণ করে এমন ব্যক্তি বা পরিবারকে দুস্থ হিসেবে গণ্য করে ভিজিএফ সহায়তা দিতে হবে। যেমন- ১. যে পরিবারের মালিকানায় কোনো জমি নেই বা ভিটাবাড়ি ছাড়া কোনো জমি নেই ২. যে পরিবার দিনমজুরের আয়ের ওপর নির্ভরশীল ৩. যে পরিবার মহিলা শ্রমিকের আয় বা ভিক্ষাবৃত্তির ওপর নির্ভরশীল ৪. যে পরিবারে উপার্জনক্ষম পূর্ণ বয়স্ক কোনো পুরুষ সদস্য নেই ৫. যে পরিবারে স্কুলগামী শিশুকে উপার্জনের জন্য কাজ করতে হয় ৬. যে পরিবারে উপার্জনশীল কোনো ব্যক্তি নেই ৭. যে পরিবারের প্রধান স্বামী পরিত্যক্তা বা তালাকপ্রাপ্ত মহিলা রয়েছে ৮. যে পরিবারের প্রধান অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা ৯. যে পরিবারের প্রধান অসচ্ছল ও অক্ষম প্রতিবন্ধী ১০. যে পরিবার কোনো ক্ষুদ্রঋণ প্রাপ্ত হয়নি ১১. যে পরিবার প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার হয়ে চরম খাদ্য বা অর্থ সংকটে পড়েছে এবং ১২. যে পরিবারের সদস্যরা বছরের অধিকাংশ সময় দুই বেলা খাবার পায় না।