মামলাবাজ কাদের এর অত্যাচারে অতিষ্ঠ জয়পুরহাটের জামতলি কুশলিয়া বাসিন্দারা

আবু রায়হান, জয়পুরহাটঃ আমরা সাধারণত মামলা মোকদ্দমার ঝামেলা থেকে দূরে থাকতে চাই কিন্তু কারও কাছে আবার এটা একটা নেশা বা অভ্যাস। কথায়- কথায় মামলা ঠুকে দেন!

এরকম মামলাবাজ কাউকে দেখেছেন?জয়পুরহাট জেলার সদর থানাধীন জামতলি কুশলিয়া গ্রামের কাদের এর বিরুদ্ধে মামলাবাজি করে স্থানীয় বাসিন্দাদের বিভিন্নভাবে চরম হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে। এতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে স্থানীয় বাসিন্দারা।

অভিযোগে জানা গেছে, তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে তিলকে তাল বানিয়ে কখনো নিজে, আবার কখনো একজনের বিরুদ্ধে আরেকজনকে উসকে দিয়ে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রামের লোকজনদের হয়রানি করায় তার নেশা ও পেশা।

এ পর্যন্ত অনেক মিথ্যা মামলার মাধ্যমে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করে অর্থ আদায়সহ জেলও খাটিয়েছেন গ্রামের অনেক নিরীহ লোকদের।

গ্রামটির সহজ সরল বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে পান থেকে চুন খসলেই মামলা ঠুকে দেয়। তার এসব মিথ্যা ও ভুয়া মামলার ফাঁদে পড়ে আদালতের বারান্দায় দৌড়াদৌড়ি করে  আর্থিকভাবে গ্রামবাসীদের অনেকেই নি:স্ব হয়ে চরমভাবে হয়রানি ও ক্ষতির শিকার হচ্ছেন।

কোন অপরাধ না করেও মিথ্যা মামলায় কারো বাবা-মা, কারো ভাই, কারো স্বামী, কারো স্ত্রী কারাবন্দী জীবন যাপন করছেন, আবার কেউ কেউ ঘর-বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে সহায়-সম্বলহীন হয়ে পরেছেন।

প্রমান স্বরূপ জয়পুরহাটের বিষ্ণপুর এলাকার মোঃ রবিউল ইসলামের স্ত্রী মুন্নুজান বিবি কাদেরের বাড়িতে গৃহ পরিচারিকার কাজ করতেন।

ওইসময়  অত্র এলাকার মারুফ হোসেনসহ আরো ৪ জন যুবকের বিরুদ্ধে অর্থের লোভ ও বিভিন্ন কলাকৌশলের ফাঁদ পেতে মুন্নুজান বিবির মেয়ে অষ্টম শ্রেণীর মাদ্রাসা পড়ুয়া ছাত্রী চলতি বছরের গত পহেলা ফেব্রুয়ারি মাদ্রাসায় যাওয়ার সময় তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করার অভিযোগে মুন্নুজান বিবিকে বাদি করে একটি মিথ্যা ধর্ষণ মামলা করিয়েছিলেন।

উক্ত ধর্ষণ মামলার পরিপ্রেক্ষীতে গত ৬ অক্টোবর মঙ্গলবার বিকেলে আদালতে আইনজীবীদের পাল্টাপাল্টি যুক্তিতর্ক এবং বাদী ও স্বাক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে উদ্ঘাটন হয় পূর্ব শত্রুতার জেরে এই মামলার আসামিদেরকে জব্দ করতেই মিথ্যা ধর্ষণ মামলাটি করা হয়েছে।

ধর্ষণের এমন মিথ্যা মামলা করায় জয়পুরহাট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের বিচারক মোঃ রুস্তম আলী মুন্নুজান বিবিকে ৫ বছরের কারাদণ্ড ও একই সাথে মারুফ হোসেনসহ বাকি ৪ জন যুবকদের মামলা থেকে অব্যাহতির আদেশ দেন।

এসকল কারণে এলাকায় স্থানীয়ভাবে তার নামের আগে মামলাবাজ কাদের হিসাবে ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে।

সরেজমিনে অনুসন্ধানে গেলে উক্ত এলাকার বাসিন্দা মিঠু হোসেন, রাজিয়া সুলতানা, ইয়াকুব, জহুরুল, সামছুল, মোবারকসহ  আরও অনেকেই আক্ষেপ করে জানান, কাদের  অনেক খারাপ প্রকৃতির লোক। অযথা মানুষের সঙ্গে ঝগড়া করা তার স্বভাব। আর এসবের প্রতিবাদ করলেই মামলার হুমকি আসে। তার আচরণে আমরা অতিষ্ঠ।

তাই অবিলম্বে প্রশাসন এই মামলাবাজ কাদেরের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন এমনটাই কামনা করেছেন ভুক্তভোগী স্থানীয় বাসিন্দারা।

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কাদেরের ছেলে আলামিন হোসেন সুমন জানান, অনেকের বিরুদ্ধে তার বাবা মামলা করেছেন তা সত্য। বিপদগ্রস্ত হয়ে কেউ তার কাছে সহযোগিতা বা পরামর্শ নিতে চাইলে তাদের উপকার ও ন্যায় বিচারের জন্য তিনি এসব করেছেন।

অপরদিকে কাদের এর সাথে যোগাযোগ করলে  তিনি উগ্র মেজাজে সবকিছু অস্বীকার করে অশালীন ভাষায় উল্টো প্রতিবেদককে প্রশ্ন করেন আপনি কি ফেরেশতা হয়ে এসেছেন?

তিনি আরো বলেন, তার প্রতিক্ষরাসহ গ্রামের লোকজনেরা শত্রুতা করে এসব মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে তো কি হয়েছে?  আমি এগুলোকে কোন তোয়াক্কা করিনা।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

Title