প্রাইমটিভি বাংলাঃ
মহামারী করোনা – অতীত বর্তমান ও ভবিষ্যত
. এস এম জাহাঙ্গীর আলম সরকার
“দুর্ভিক্ষ শ্রাবস্তীপুরে যবে/জাগিয়া উঠিল হাহারবে/,
বুদ্ধ নিজভক্তগণে শুধালেন জনে জনে/ক্ষুধিতেরে অন্নদানসেবা /তোমরা লইবে বল কেবা?’/ শুনি তাহা রত্নাকর শেঠ/করিয়া রহিল মাথা হেঁট।/কহিল সে কর জুড়ি, “ক্ষুধার্ত বিশাল পুরী,/এর ক্ষুধা মিটাইব আমি /এমন ক্ষমতা নাই স্বামী”!
যখন মানবতার বিপর্যয় বা করোনা মহামারী চলছে তখন রবীন্দ্রনাথের অবিনাশী কবিতা আমাকে বার বার আহত করছিল এই জন্য যে,
আমরা অভ্যস্ত হয়েছি এ বিশ্বাস নিয়ে সৃষ্টির যা কিছু পরিবর্তন হয় তা মানুষের মঙ্গলে বা কল্যানের স্বার্থেই হয়। কল্যানে হোক সেটাই চাই কিন্তু অকল্যাণের মুক্তির জন্য মানবজাতি যে খুব বেশি প্রস্তুত নয় তা আমরা বুঝলাম যখন এসে বিশ্ব বর্তমান সময়টাতে করোনার সাথে যুদ্ধ করছে ; তাকে ঠেকানোর জন্য প্রতিরোধ করার জন্য। সেই সাথে প্রতিশেধক আবিস্কারে গবেষণায় ব্যস্ত বিশ্বখ্যাত এক ঝাঁক নবীন প্রবীন বিজ্ঞান কর্মি।
পৃথিবী এসে রীতিমত আটকে গেছে সময়ের বির্বতনে । তাও আবার যে যেখানে আছে সেখানেই। চলমান বর্তমানে খুব একটা দেখা না দিলেও সহজে অনুমেয় এই মহামারি বা মানবিক বিপর্যয় গড়াতে গড়াতে পৃথিবীকে খাদ্য সংকটের মুখোমুখি করে আরো দুর্বল করে ফেলতে পারে। সে বিষয় মাথায় রেখে খাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থাপনায় আনতে হবে ব্যাপক পরিবর্তন। খাদ্যাভ্যাসেও আসবে কিছু পরিবর্তন, যা পুরাতনের অনিবার্য পরিবর্তনেই সৃষ্টি হবে। নতুন খাদ্য সংস্কৃতি অতপর এটি নতুন করে পথ চলতে থাকবে দীর্ঘ পথ।
মহামারী এই পৃথিবীতে নতুন কিছু নয়। সৃষ্টির শুরু থেকেই সময়ে সময়ে এই পৃথিবীতে নেমে আসে প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা মহামারী। যেমন ১৬৬৪ সালে লন্ডন শহরে গুডওমেন ফিলিপ্স নামে এক ইংরেজ মহিলা তার নিজ গৃহে হঠাৎ মৃত্যুর পর পরীক্ষা-নীরিক্ষা করে দেখা গেল সেই ইংরেজ মহিলা আক্রান্ত হয়েছিলেন প্লেগে। সঙ্গে সঙ্গে সে বাড়িটি সিলগালা করা হয়েছিল। ১৬৬৪ সালে প্লেগ রোগটির শুরু এভাবেই এবং কিছু লোকের প্রাণহানি হলো প্লেগে। ১৬৬৫ প্লেগ রোগটি মহামারি আকার ধারণ করেছিল এমন করে রোগটি শুরু হওয়ার পর থেকে ১৮ মাসে মধ্য শুধুমাত্র লন্ডন শহরে মৃতের সংখ্যা অবিশ্বাস্য রকম বেড়ে দাঁড়ালো ১ লক্ষে যা তখনকার সংখ্যায় লন্ডন শহরের মোট জনসংখ্যার তিন ভাগের এক ভাগ প্রায়। শুধু তাই নয় যুগে যুগে লক্ষ কোটি মানুষকে প্রাণ হারাতে হয়েছে মানবিক বিপর্যয়ে বা মহামারীতে। অনেক পন্ডিত বা মুণীষী ব্যাক্তিও আক্রান্ত হয়েছেন এসব রোগে।অনেকেই ছিলেন কোয়ারেন্টাইনেও বা গৃহবন্দি হয়ে। ফ্রান্সের রাজা অষ্টম চার্লস, খ্রিষ্টোফার কলম্বাস, হার্নেন কার্তেজ, লিও তয়েস্তয়, নিৎসে, বদলেয়ার, মোপাঁসা, জার্মান কবি হাইনরিক হাইনে, মুসোলিনী, হিটলার, লেলিন, বিখ্যাত ডাচ চিত্রকর রামব্রেন্ড সহ শরৎ চন্দ্র ও রবি ঠাকুর পর্যন্ত। সেই মনবিক বিপর্যয়ের দিনগুলিতে তাঁদের রচনা বিশ্বসাহিত্যে অনন্য স্থান করে নিয়েছে।
বলার বিষয় শেক্সপিয়র, নিউটনের এই অনিচ্ছা নির্বাসন বিশ্বসাহিত্য তাঁদের জন্য আশির্বাদ ছিল। জেফ্ররি চসার তার বিখ্যাত লেখা ‘দ্য ক্যন্টারবারি টেলস্’ মেরি শেলী’র উপন্যাস ‘ফ্রাঙ্কেস্টাইন’র ‘দ্য বেল জার’ উইলিয়াম কেনেডির ‘আয়রণউইড’। আইরিস লেখক জেমস্ জয়েসের ‘উইলিসিস’ এমন মহামারী বা মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যেই লিখেছেন। বিশ্ব বিখ্যাত ইডিপাস নাটকেও আমরা পেয়েছি এক ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় বা মহামারীর কথা। এই গ্রন্থগুলি যুগে যুগে মহামারী বা মানবিক বিপর্যের অখন্ড দলিলও বটে । তাঁরা সাহিত্যসৃষ্টি বা সাহিত্য কর্মের মধ্যদিয়ে এতটুকু জানান দিয়ে গেছেন যুদ্ধ মানব সভ্যতার জন্য কখনোই কল্যাণকর নয়, বিধায় যুদ্ধ খাতে অর্থ ব্যয় কম করে স্বাস্থ্য খাতে অর্থ ব্যয় বেশি করেই মানব সভ্যতাকে টিকিয়ে রাখার জয়গান গেয়েগেছেন। তা যদি আমরা যথার্থ রপ্ত করতে পারতাম তাহলে আজকের এমন মানবিক বিপর্যয় এমন পরিসরে নাও ঘটতে পারতো।
বলে রাখা দরকার গত ৭ এপ্রিল ‘নিরাপদ থাকুক কর্মরত পুলিশ সদস্যরাও’ শিরনামে দৈনিক ও অললাইনে একটি লিখা প্রকাশিত হয়েছিল , তাতে ছোট্ট একটি আর্জি রেখে বলার চেষ্টা করেছি ডাক্তার নার্সদের সঙ্গে পুলিশ সদস্যরাও রাতদিন মানবতার এই বিপর্যয়ে লড়াই করে যাচ্ছে। পুলিশ সদস্য’রাও নিরাপদ হোক সেইফটি ফার্ষ্ট নীতি অনুসরণ করে।
বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষে তৎকালীন পুলিশ প্রধান মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে কিছু অর্থ জমা করেছেন। সত্যিই খুব প্রসংসনীয় ভূমিকা এবং তাতে বাংলাদেশ পুলিশ আজীবন সমাদ্রিত হবেন। স্যারের প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা। সেই সাথেই যদি নিজ সদস্যদের প্রোরক্ষার বিষয়টি আর একটু গুরুত্ব দেয়া যেত সেক্ষেত্রে ধারাবাহিকতায় এতদিনে এসে বাস্তবায়নও পূর্ণতা পেত এমনকি কৃতকাজটি তাঁর জন্য বয়ে আনত ইতিহাসের অনন্য উচ্চতা। ফল স্বরুপ পেশাগত দায়িত্ব পলন কালে পুলিশের যে সংখ্যক সদস্যরা করোনা আক্রান্ত হয়েছেন সংখ্যাটি আরও কম হতে পারতো যা তাঁর প্রশাসনিক দক্ষতারই জয়গান হতো, বেড়ে যেত সেবাদাতা সদস্যদের মনোবল।
যাহোক মহামারী কালীন পন্ডিতগনের লেখা গ্রন্থাদি সাক্ষ্য দিচ্ছে সুদূর অতীতেও মহামারী দেখা দিয়েছে প্রাণহানি ঘটেছে তার মাঝেও তাঁরা মানবতার জয়গান গেয়েছেন। যুগে যুগে মানবিক বিপর্যয় ছিল, আছে থাকবে তার পরেও মানব সভ্যতা কিন্তু বিলীন হয়ে যাবেনা। আমরা আশাবাদী হতাশাগ্রস্থ নই কোনভাবেই। বিশ্বনেতাদের মাথানূয়ে পড়লেও বিজ্ঞান কিন্তু বসে নেই,তাদের শ্রম বৃথা যেতে পারেনা সে প্রত্যাশাই দৃঢ়। আমরা ধরেই নিতে পারি খুব শীঘ্রই করোনার প্রতিশেধক বা ভ্যাকসিন আবিস্কার হবে। কিন্তু তা যথাযথ সম বন্টন হবে কি না তা নিয়ে শংকাও কম নয়।
বাজার অর্থনীতি’র চরিত্র বলে ধনী রাষ্ট্রগুলি তা দখলে নেওয়ার জন্য অপ্রত্যাশিত প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হতে পারে। সেটিও ভেবে দেখার প্রয়োজন এখনি। অন্যথায় পুঁজিবাদী বাজার ব্যবস্থার কারনে আরও একটা মানবিক বিপর্যয় দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যায়না। প্রযোজ্য ক্ষেত্রে অর্থনীতিতে পুজিবাঁদ আর সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থাপনার যৌক্তিক সমন্বয়ে নতুন কিছু বাজার বৈশিষ্ট্য অভিযোজিত করার প্রয়োজন হতে পারে।
এরকম প্রতিটি রাষ্ট্রকাঠামোয় বিদ্যমান প্রতিটি সূচকেই কমবেশি পরিবর্তিত রুপ অভিযোজিত হবে।
পরিবর্তন যখন বাধ্যতামূলক হয়ে যায় তখন এমনটা আলোচনায় আরো বেশি প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয় কেননা যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্থ আফ্রিকার অনেক দেশ যারা মার্সিটিজ বেঞ্জ’র মত গাড়ী সংযোজন করতো তদুপরি শিল্প সাহিত্য সংস্কৃতির পুরোটাই ছিল ইউরোপীয়। বেলজিয়াম কলোনী থাকায় লাইফ স্টাইল রীতিসই আধুনিক কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ পরীক্ষায় হেরে গিয়ে অর্থনৈতিক কাঠামো ভেঙ্গে চুরমার।
এক কথায় Give me a biscuit বলে শিশুরা পেটের তাগিদে হাত বাড়ায় সে দেশে এটি যুদ্ধের পরবর্তি অবস্থার চলমান সময়ের কথা ব্যক্ত করছি। তার চেয়েও বড় জিজ্ঞাসার যায়গা টা হল মানুষ হিসেবে একটি বিস্কুট চাই বলে আর কতটা সময় চিৎকারই করবে তারা। যদি জনসংখ্যার একটা বিশাল অংশের কারো চিৎকার স্রষ্ঠার দৃষ্টি আকর্ষণে বিচার্য বিষয় বলে মনোনিত হয়েই থাকে সেক্ষেত্রে আজ যারা বিশ্বকে অচেনা শত্রুর সাথে যুদ্ধ করতে গিয়ে হাপিয়ে পড়ছেন তাদের অনেক দেশকে একই পথ অনুসরণ করতে হতে পারে পরিবর্তিত ভবিষ্যতে।
দৃশ্যত ক্ষমতা চর্চা সভ্য অসভ্য সকল শ্রেনির শাসকগনের মজ্জাগত সুখ। কাজেই ক্ষমতা নামক মরিচিকা নতুন পৃথিবীর ব্যবস্হাপনায় সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রপঞ্চ হিসেবে কাজ করবে তাতে কোন সন্দেহ নাই।সেই সাথে বিবেচনায় রাখতে হবে নতুনভাবে ক্ষমতার মেরুকরণ যুদ্ধও আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে কিনা। সেটির সমাধানও শান্তিপূর্ন পথে হোক সেটি কাম্য কিন্তু আশাবাদী হওয়ার মত বিশ্বনেতাদের দৃশ্যমান কোন পদক্ষেপ দৃশ্যমান নয় অন্তত এখনও । সকল আন্তর্জাতিক সংস্থা ইতোমধ্যেই ক্ষমতাকেন্দ্রিক দেশগুলোর প্রতি নিঃশর্ত মোহ প্রদর্শন করায় মানুষ সে সব সংস্থা সমূহের প্রতি অশ্রদ্ধা প্রদর্শন করেছে বারংবার অবশ্য সময়ের ব্যবধানে সংস্থাগুলো তাদের কার্যকারিতাও হারিয়ে ফেলেছে ।
রাষ্ট্র নায়করা কাউকে অভিযুক্ত করে ক্ষতিপূরণ আদায়ের চাপ দেয়ার পথকে সমর্থন করবে অনেকেই কিন্তু ভুলে গেলে চলবেনা কারন হুমকি খুব একটা কাজে আসবেনা বিশেষ করে পশ্চিমাদের। কারণ করোনাই শেষ না আরো কিছু আছে এটি পশ্চিমাদের ভাবাবে যেমন তেমনি বিপরীত মেরুর লোকজনের সাহসও যোগাতে পারে। রাশিয়া এশিয়া আরবরা একে অপরের সাথে বিদ্যমান সম্পর্কে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেবার মত নয়। আর সেটা অনুমান থেকে বাস্তবে রুপ নিলে বিশ্বক্ষতার ভারসাম্যে নতুন মাত্রা যোগ হবে। আর সে ভারসাম্য শুধু যদি ক্ষমতার বিপরীতে ক্ষমতা সংরক্ষণ ও প্রদর্শনের জন্য জোটভূক্ত হয় তাহলে কোন ভালো ফলাফল বয়ে আনবেনা।
মহান সৃষ্টিকর্তা তো সমগ্রের। সারা বিশ্ব আন্তরিক হলে যতটুকু সময় পার হয়েছে এরই মধ্যে ক্ষুধার্ত আফ্রিকানদের খাবার দাবারের নিশ্চয়তাটুকু ফিরিয়ে দেয়া প্রয়োজন অনুভব করাই ছিল মানবিক উদারতা বিশ্ব নেতাদের । তাদের বিপরীত মুখী চিন্তার কারনে তাদেরকে দিনের পর দিন ক্ষূধার্ত করে রেখে খনি সম্পদ গুলো উত্তোলন করেছেন ক্ষমতাধর রাষ্ট্র নায়কেরা। হয়তো করোনা প্রভাবক হিসেবে কাজ করছে ক্ষুধার্ত মানুষের আত্নচিৎকার ও প্রকৃতির পক্ষে সৃষ্টিকর্তার প্রান
নেয়ার এজেন্ট হিসেবে। তাই ধনী দরিদ্র সকলের প্রতি সমআচরণ প্রদর্শন করে অস্থির করে ফেলছে ফলশ্রুতিতে সকলেই আজ একই অবস্থায় নিরাপদ থাকতে গৃহবন্দীত্ব মেনে নিতে হয়েছে।
যুদ্ধে হেরে আফ্রিকার অনেক এলাকায় অর্থনীতি ভঙ্গুর হওয়ার কারণে আর বৃদ্ধলোক খুঁজে পাওয়া দু:স্কর বিশেষ করে ষাটোর্ধ । যেমনটা করোনাকালীন ইটালি চিকিৎসা দেয়ার ক্ষেত্রে বৃদ্ধদের প্রতি নিরুৎসাহিত নীতি গ্রহণ করেছেন কারণ তারা বুঝতে পেরেছে যুদ্ধের
পরে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অনিশ্চিত চরিত্রের বিপদ আসবে হয়তো । নতুন পৃথিবীর জন্য যাদের শারিরিক পরিশ্রম করার মত শক্তি নাই তাদেরকে আর প্রয়োজন নাই। বিধায় মহামারী কালিন ডক্টর পুত্র নীতিমালার কারনে মনবিক ও জন্ম সত্ত্বার বিসর্জন দিয়ে আর করোনার থাবার ভয়ে বাবার চিকিৎসা না করেই অন্তিমের জন্য অশ্রু শিক্ত বিদায় জানালো; আর মনে মনে ক্ষমা চাইল বাবা মাফ করে দিও।
আফ্রিকার মানুষের গড় আয়ু যা ছিল যুদ্ধত্তোরকালে এসে গড় আয়ু কমিয়ে নিতে বাধ্য হল তারা কারণ এইডস চিকিৎসায় বিশ্ববাসি তাদের কাঙ্খিত চিকিৎসার ব্যবস্থা করেনি বলে। পেটে ভাত নাই বলে পরিপূর্ণ চিকিৎসা ব্যয় করার মত রাষ্ট্রীয় সামর্থও নাই তাদের । ফলে আনন্দ ফুর্তি করে এইড’সকে সঙ্গী করে নিয়েই চলছে তারা। এই জীবানু নিয়েও পঞ্চাশ বছর জীবনায়ু চলে ধরে এক সময়ের ৬০ বছরের গড় আয়ু এসে নতুন করে ৫০ বছরে বাধতে হয়েছে। সুবিধা একটা হয়েছে যে ষাটোর্ধ মানুষের সংখ্যা খুব নগন্য কারণ এইডস জীবাণু ওদের দেহে বাস করে গড় আয়ু দশ বছর কমিয়ে এনেছে। সেখানে বর্তমানে ৫০ বছরই তাদের স্বাভাবিক আয়ু জীবনযাপনে মেনে নিয়েছে একরকম বাধ্য হয়েই।
বর্তমান করোনাক্রান্ত পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে মন্দা শুরু হবে আশংকা করছে সবাই আর সে ব্যবস্থাপনায় যারা যতটা সফল হবে তারা ততটা আয়ু ধরে রাখতে পারবে। আর যারা পারবেনা তারা আফ্রিকার মত প্রস্তুতি নিতে হবে করোনা নিয়েই তাদের বাস করতে হবে। করোনার বিচিত্র চরিত্র যদি মানুষের সাথে চলতে গিয়ে সবশেষে দশ বছরের আয়ু কমানো চরিত্রের জীবাণু হিসেবে পৃথিবীতে বাস করতে থাকে আর পৃথিবীতে নতুন ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা দেখিয়ে সফলভাবে যে সকল রাষ্ট্র মাজা সোজা করে চলতে শিখবে সে দেশ গুলোর নেতৃত্ব যদি নতুন করে দরিদ্র রাষ্ট্রের পাশে না দাঁড়ায় সেক্ষেত্রে পৃথিবীর অনেক দেশের মানুষের এই গড় আয়ু কমে যাবে আশংকাজনক ভাবে। কারো কারো জন্য পরিনতি কল্পনার চেয়েও ভয়াবহ হতে পারে। কারণ একটাই মানুষের সাথে এই পৃথিবীতে করোনার বাস অভিযোজিত হল নতুন করে যেমনটা যক্ষা কিংবা ক্ষতিকর ফ্লু মানুষের বসবাসের সাথে পৃথিবীতে থাকার চিরস্থায়ী ব্যবস্থা করে নিয়েছে ঠিক তেমনি নতুন করে আামাদের সাথে করোনা জীবাণু পৃথিবীতে বাস করার নাগরিকত্ব পেল। পরিচয় তার বন্ধু নয়; শত্রু। আজ থেকে পৃথিবির মানুষকে প্রানঘাতি এ শত্রু নিয়েই বাস করতে হবে হয়তো; মনুষ্য জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত!
লেখক – পুলিশ সুপার, গীতিকবি, কন্ঠশিল্পী ও প্রবন্ধকার।