মন্দিরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় করা মামলার বিচার হবে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে

নিজস্ব প্রতিবেদক: কুমিল্লায় মন্দিরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় করা মামলার বিচার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে হবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেন, ‘দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে কোনো মামলা যাওয়ার অর্থ হলো এটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তি হওয়া।’

শনিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। বাংলাদেশ রেজিস্ট্রেশন সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত নবাগত সাব-রেজিস্ট্রারদের সংবর্ধনা এবং মতবিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন আইনমন্ত্রী।

আনিসুল হক বলেন, ‘কুমিল্লার সহিংসতার ঘটনায় ভিডিও ফুটেজ দেখে ইতিমধ্যে আসামি শনাক্ত করা হয়েছে। দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে ভিডিও ধারণ করার যে এভিডেন্স আছে সেটা গ্রহণ করার একটা ধারা আছে, সেই ধারায় বিচার করতে কোনো অসুবিধা হবে না। এই মামলার যখন পুলিশ প্রতিবেদন পাওয়া যাবে, তখন এটাকে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের ঘটনার তদন্ত এখনও শেষ হয়নি। যতক্ষণ পর্যন্ত তদন্ত শেষ না হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত কিন্তু আদালতের বিচারিক এখতিয়ার হয় না। আদালতের হয়তো অনেকগুলো ইন্টারিম (অন্তর্বর্তীকালীন) আদেশ দেয়ার ক্ষমতা থাকে, কিন্তু যতক্ষণ পর্যন্ত পুলিশ প্রতিবেদন না আসে ততদিন পর্যন্ত আদালত বিচারিক কাজ শুরু করতে পারে না।’

তিনি বলেন, ‘যে মুহূর্তে তদন্ত শেষ হয়ে এটা বিচারিক আদালতে আসবে এরপর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলা শেষ করা হবে। কোনো ঘটনাতেই বিলম্ব করার ইচ্ছা বা ইচ্ছাকৃত বিলম্ব হচ্ছে না। একটা ঘটনায় আইনসঙ্গতভাবে সাজা দিতে অনেক প্রক্রিয়া শেষ করতে হয়।’

এর আগে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, ‘যে যেই ধর্ম পালন করুক না কেন, তাকে ধর্ম পালনের স্বাধীনতা ও তার ধর্ম রক্ষা করার অধিকার সংবিধানে রয়েছে। বর্তমানে শান্তিপূর্ণ উন্নয়নকে ব্যাঘাত করার জন্য অনেক রকম ষড়যন্ত্র করার চেষ্টা হচ্ছে। যারা উন্নয়নকে ব্যাহত করার চেষ্টা করছে, তাদের সমষ্টিগতভাবে রুখে দিতে হবে।’

রেজিস্ট্রারদের বিভিন্ন দাবি প্রসঙ্গে আনিসুল হক বলেন, ‘আপনারা যদি সঠিকভাবে কাজ করেন, তাহলে হতাশ হবেন না। কোনো ডিপার্টমেন্ট সমস্যার ঊর্ধ্বে নয়। একটা সমস্যার সমাধান হয়, পরে আরেকটা সমস্যার উদ্ভব হয়। সমস্যা এবং সমাধান নিয়েই আমাদের পথচালা। সমস্যা আছে, সমাধানও হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সারাদেশে মামলার উৎপত্তি হয় দুটা কারণে, জমি সংক্রান্ত আরেকটা ব্যক্তিগত কারণে। মানুষের প্রাণের ধন জমি, জীবন দিয়ে হলেও সেটা মানুষ রক্ষা করতে চায়। সে অর্থে আপনারা সেটার কিছুটা হলেও রক্ষক। সেইভাবেই জনগণকে আপনাদের সেবা দিতে হবে।’

জমির ই-রেজিস্ট্রেশন চালু প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে আমাদের ই-রেজিস্ট্রেশনের পাইলট প্রকল্প চলমান আছে। আগামী ৩১ অক্টোবর সেটার রিপোর্ট পাবো, তার ওপর ভিত্তি করে সারাদেশে ই-রেজিস্ট্রেশন চালু করা হবে।’

নারায়ণগঞ্জের জেলা রেজিস্ট্রার মো. জিয়াউল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার, লেজিসলেটিভ বিভাগের সচিব মো. মইনুল কবির, নিবন্ধন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক (জেলা ও দায়রা জজ) শহীদুল আলম ঝিনুক, রেজিস্ট্রেশন সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব জাহিদ হোসেনসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

Title