অনলাইন ডেস্ক: জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকটকে তীব্র করতে সাহায্য করেছে। আর এই সংকটে চোখ না ফেললে তা বছরের পর বছর স্থায়ী হতে পারে। তবে বিশ্ব ব্যাংক এই সংকটের ‘ধ্বংসাত্মক প্রভাব’ লাগবে অতিরিক্ত ১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থ সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে।
জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস বলেছেন, যুদ্ধের কারণে শস্য ও সারের ঘাটতি এবং উষ্ণ তাপমাত্রা ও মহামারিতে পণ্যদ্রব্য সরবরাহ সমস্যা লাখ লাখ মানুষকে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ফেলার হুমকিতে পড়েছে। কারণ মুদ্রাস্ফীতি এবং বিশ্বব্যাপী মন্দার শঙ্কায় আর্থিক বাজারগুলোতে শেয়ারের মূল্য ব্যাপকভাবে পড়ে গেছে। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।
নিউইয়র্কে বিশ্ব খাদ্য নিরাপত্তার ওপর জাতিসংঘের এক বৈঠকে মহাসচিব বলেন, আর এই খাদ্য সংকটের ফলে অপুষ্টি, ক্ষুধা এবং দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে এবং তা বছরের পর বছর স্থায়ী হতে পারে। বৈঠকে তিনি এবং অন্যরা ইউক্রেনকে শস্য রপ্তানি করতে দিতে রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানান।
ইউক্রেনে চালানো মস্কোর সামরিক অভিযান এবং রাশিয়ার ওপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞায় উভয় দেশ থেকে সার, গম এবং অন্য পণ্যদ্রব্য সরবরাহ ব্যাপকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। যা খাদ্য, জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি করে, বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ব্যাপক মূল্যবৃদ্ধি ঘটে। যুদ্ধরত এই দুই দেশ বিশ্বের ৩০ শতাংশ গম উৎপাদন করে।
গত ফেব্রুয়ারিতে যুদ্ধ শুরুর আগে ইউক্রেনকে বিশ্বের রুটির ঝুড়ি হিসেবে দেখা হতো। দেশটি প্রতি মাসে ৪.৫ মিলিয়ন টন কৃষিপণ্য নিজেদের বন্দরগুলো দিয়ে রপ্তানি করতো। এর মধ্যে বিশ্বের ১২ শতাংশ গম, ১৫ শতাংশ ভুট্টা এবং অর্ধেক সূর্যমুখি তেল দেশটির বন্দরগুলো দিয়ে রপ্তানি হতো। কিন্তু রাশিয়ান আক্রমণের ফলে দেশটির ওডেসা, চোরনোমোরস্কসহ অন্যান্য বন্দরগুলো দিয়ে পণ্যদ্রব্য সরবরাহে প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। যা বিশ্বব্যাপী মূল্য বৃদ্ধিতে প্রভাব রেখেছে।
গুতেরেস বলেন, ইউক্রেনের খাদ্য উৎপাদন পুনরায় শুরু করা ছাড়া এই খাদ্য সংকটের কোনো কার্যকর সমাধান নেই। রাশিয়াকে অবশ্যই ইউক্রেনের বন্দরগুলোতে থাকা পণ্যদ্রবগুলোকে নিরাপদে এবং সুরক্ষিতভাবে রপ্তানি করার অনুমতি দিতে হবে।
এদিকে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির নির্বাহী পরিচালক ডেভিড বিসলে বলেছেন, বিশ্ব ভয়াবহ সংকটে আছে। আমাদের কাছে সমাধান আছে। আমাদের পদক্ষেপ নিতে হবে এবং এখনই এই পদক্ষেপ নিতে হবে।