বগুড়া প্রতিনিধি: বগুড়ায় করোনায় লকডাউনে গরীর দুস্থ ও কর্মহীনদের সাহায্য দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির নাম ভাংগিয়ে অভিনব প্রতারণায় লক্ষ লক্ষ খোয়ানোর অভিযোগ উঠেছে। আর এ প্রতারণার শিকার হয়েছে বগুড়ার শেরপুর পৌরসভার কাউন্সিলর ফারুক ফয়সাল সোহাগসহ বেশ কয়েকজন কাউন্সিলর। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে শেরপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে বলে থানা পুলিশ জানিয়েছেন।
অভিযোগে জানা যায়, করোনার ভয়াবহ থাবায় সারাবিশে^র সাথে বাংলাদেশও এখন তালমাতাল অবস্থা। দীর্ঘদিন ধরে করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ প্রকটাকার ধারণ করেছে। ইতিমধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে এ ভাইরাসের প্রকোটতারোধে লকডাউন ঘোষণাসহ গরীব দুস্থ ও কর্মহীন মানুষের জন্য আর্থিক সহযোগীতার ঘোষণা দিয়েছে। আর এই সুযোগে কিছু অসাধু চক্র বা সিন্ডিকেট প্রতারণা করে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার কৌশলে মেতে উঠেছে। এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির এমডি পরিচয়ে মোবাইল ফোনে অসহায় মানুষদের আর্থিকসহ বিভিন্ন সহযোগীতা প্রদানের প্রতিশ্রæতি দিয়ে প্রতারণা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এরপ্রেক্ষিতে গত ১৭ এপ্রিল সন্ধ্যায় ৭টার দিকে শেরপুর পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফারুক ফয়সাল সোহাগের ব্যক্তিগত ০১৭১২ ১৯২৫৮৪ মোবাইল ফোনে গরীব দুস্থদের আর্থিক সহযোগীতা করার প্রতিশ্রæতি দিয়ে জনপ্রতি পনেরশত টাকা অগ্রিম প্রদানের শর্ত পূরনের জন্য বলে। তাদের প্রতিশ্রæতি অনুযায়ী জনপ্রতি নগদ ৪ হাজার টাকা ও ৫ হাজার টাকার নিত্য প্রয়োজনীয় মালামাল সামগ্রী কিনে দেয়া হবে।
এতে এলাকার গরীব দুস্থ ও কর্মহীন মানুষের অভাব অনটনের কথা চিন্তা করে ওই সংস্থা(রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি)র শর্তে নিজেকে সামিল করেন সংশ্লিষ্ট পৌর কাউন্সিলর। এর প্রেক্ষিতে কথিত ওই দাতা সংস্থার এমডি পরিচয়দানকারী ব্যক্তির দেয়া ০১৮৮২-০৮৯৮৬৭,০১৮২৩ ০১৯৫৩৪, ০১৯৪৮ ৫৭০২৯৯, ০১৫৩৭ ৩৬৬৫৬৬,০১৭৮৯ ২৬৮৯৭৫ মোবাইল নম্বরে ধাপে ধাপে মোট ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা প্রদান করে প্রতারণার শিকার হয়েছেন তিনি। পরবর্তীতে ওই সংস্থার এমডি’র পরিচয়দানকারী ব্যক্তির একাধিক মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে উল্টো কাউন্সিলর সোহাগকে প্রাণনাশসহ নানা হুমকী-ধামকি দিয়ে আসছে। বিশ^স্ত সুত্রে জানা যায়, শুধু ওই কাউন্সিলরই নয় এমন প্রতারণার শিকার হয়েছে এ পৌরসভার বেশ কয়েকজন কাউন্সিলরও। তবে কথিত (রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি)’র কৌশলে নগদ টাকা খুইয়ে প্রতারণার শিকার হলেও তা অস্বীকার করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কাউন্সিলররা। এ কথিত রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির এমডি পরিচয়কারীসহ সংশ্লিষ্ট সিন্ডিকেট চক্রকে গ্রেফতার পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য শেরপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন প্রতারণার শিকার ওই কাউন্সিলর ফারুক ফয়সাল সোহাগ।
এ বিষয়ে শেরপুর পৌরসভার কাউন্সিলর ফারুক ফয়সাল সোহাগ বলেন, পৌর এলাকার গরীব, দুস্থ ও কর্মহীন মানুষের সাহায্য সহযোগীতা করবে, এমন প্রতিশ্রæতিতেই আমি সরল বিশ^াসে প্রলুব্ধ হয়ে এ প্রতারণা শিকার হয়েছি।
রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির এমডি’র পরিচয়ে ফোন প্রাপ্তির এমন সত্যতা স্বীকার করে শেরপুর পৌরসভার মেয়র আলহাজ¦ জানে আলম খোকা বলেন, গরীব দুস্থদের তারা কিছু সহযোগিত করতে চান, এ বিষয়ে মেয়রের সহযোগীতা চেয়ে পরদিন সাক্ষাতের কথা বলেছেন তারা। কিন্তু পরে আমার সাথে যোগাযোগ হয়নি।
এ বিষয়ে শেরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম অভিযোগ প্রাপ্তি স্বীকার করে বলেন, ইতোমধ্যে ঘটনার অনুসন্ধানে পুলিশ কাজ করছে, আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।