ফরিদপুর প্রতিনিধি: ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা আইসলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মুক্তিযোদ্ধা ও শহরের পুরাতন কালিবাড়ির সেবাইত কমলেশ চক্রবর্তী ভানু রবিবার সকালে মারা গেছেন। ধর্মীয় অনুসারে শহরের অম্বিকাপুর শশ্মানে করোনায় মৃত ব্যক্তির লাশ দাহ্য করতে গেলে এতে বাধা প্রদান ও অবরোধ করে স্থানীয় এলাকাবাসী। অবশেষে ফরিদপুর জেলা পুলিশ স্থানীয়দের অবরোধ সড়িয়ে লাশ দাহ্য করতে ব্যবস্থা গ্রহন করেন নিজেরাই।
এর আগে মৃতের লাশটি হিন্দু নিয়মে দাহ্য করার জন্য কেউ এগিয়ে আসেনি। এমনকি হিন্দু ধর্মের কোন সদস্য বা পরিবারের কেউ এগিয়ে আসেনি। একটি পর্যায়ে জেলা পুলিশ সুপার মোঃ আলিমুজ্জামান এর নির্দেশে সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ রাশেদুল ইসলাম এর নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যরা ও সদর উপজেলা ইউএনও মোঃ মাসুম রেজা লাশ দাহ্য করতে এগিয়ে আসে। এমনকি তাদের তত্বাবধানে মৃতের পুত্র আগুন দিয়ে মুখাগ্নি করার পর পুলিশ সদস্যরা লাশ দাহ্য করার পুরো নিয়ম মেনে লাশটি দাহ্য কার্য শুরু করে।
এ বিষয়ে সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ রাশেদুল ইসলাম এশিয়ান টাইমসকে রাতে জানান, বীর মুক্তিযোদ্ধা কমলেশ চক্রবর্তী ভানুর লাশ দাফনে শশ্মানের সামনে বাধা প্রদান করছে স্থানীয় এলাকাবাসী। এমন খবর পেয়ে এসপি স্যারের নির্দেশে পুলিশ সদস্যদের নিয়ে সেখানে পৌঁছে স্থানীয় এলাকাবাসীর অবরোধ সড়ানো হয়। এরপর পুলিশের সদস্যরা তার লাশটি হাসপাতাল থেকে গাড়ীতে করে নিয়ে গিয়ে লাশ সৎকারের করার ব্যবস্থা করা হয়। এর আগে তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সদর উপজেলা ইউএনও মোঃ মাসুম রেজা গার্ড অব অনার প্রদান করেন। তিনি বলেন আমরা পুলিশ প্রশাসন থাকতে করোনায় মৃত কোন ব্যক্তির লাশ পড়ে থাকবে এটা কিছুতেই হবে না।
এ বিষয়ে কোতয়ালী থানার কর্মকর্তা মোঃ বেলাল হোসেন সত্যতা স্বীকার করে বলেন, দুঃখজনক আমরা আমাদের পুলিশ সুপার আলীমুজ্জামান বিপিএম-এর নির্দেশে এই বীর মুক্তিযোদ্ধার মরদেহ যথাযথ সম্মান জানিয়ে শেষকৃত্য সম্পন্ন করেছে পুলিশ।
এ বিষয়ে অম্বিকাপুর শ্মশান কমিটির সভাপতি দত্তের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন আমি বিষয়টি শুনেছি কিন্তু যেতে পারিনি। তিবে জানতে প্রেরেছি করোনা ছড়িয়ে পড়ার ভয়ে এলাকার স্থানীয়রা লাশটি দাহ করতে বাঁধা দিয়েছিল।
উল্লেখ্য, শহরের পুরাতন কালিবাড়ির সেবাইত মুক্তিযোদ্ধা কমলেশ চক্রবর্তী ভানু গত ২৪ মে করোনা নিয়ে হাসপাতালে এসে ভর্তি হন। এরপর তার শ্বাসকষ্ট বেশি হলে তাকে করোনা আইসলেশন ওয়ার্ডে নিয়ে রাখা হয়। পরে তার অবস্থার উন্নত হলে তিনি নিজ থেকে ওয়ার্ডে ফিরে আসেন। গত শুক্রবার ২৯ মে সকালে তার অবস্থার আবার অবনতি হলে তাকে করোনা আইসলেশন ওর্য়াডে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছিলো। এ চিকিৎসা চলাকালীন সময়ে রবিবার সকালে তার মৃত্যু হয়।