নারায়নগঞ্জ প্রতিনিধিঃ করোনা ভাইরাস একটি প্রাণঘাতিক সংক্রামণ ব্যাধি ভাইরাস যা একজন মানুষ থেকে অন্যজনে সংক্রামণ হয়। ইতোমধ্যে বাংলাদেশের মধ্যে সব থেকে ঝুঁকিপূর্ণ জেলা হিসেবে নারায়ণগঞ্জকে ঘোষণা করা হয়েছে। যেখানে এই পর্যন্ত ৫০ জন মৃত্যু বরণ করেছেন আর আক্রান্ত হয়েছে ১০৫৩ জন। যা দিনের পর দিন বেড়ে চলেছে। এমন সঙ্কটাপন্ন মূহূর্তে জীবণের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন র্যাবের সদস্যরা। তাঁরা দিনের বেলায় তপ্তরোদে লকডাউন মেনে সাধারণ মানুষকে ঘরে রাখতে যতটা কঠোর হচ্ছেন, তেমনি রাতের বেলায় অনাহারী মানুষের জন্য খাবার ঘরে ঘরে পৌঁছে দিচ্ছে । ফলে করোনা ভাইরাসে এই পর্যন্ত ৫৫ র্যাব সদস্য আক্রান্ত হয়েছে। নিজেদের মৃত্যুর ঝুঁকি জেনেও থেমে নেই তাঁরা। অব্যাহত রেখেছেন তাদের কর্মযজ্ঞ।
তাদের ত্রান বিতরন কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ১০০ অন্ধ ও প্রতিবন্দ্বীদের খাদ্য সামগ্রী ও নগদ অর্থ প্রদান করা হয়েছে। সোমবার অন্ধ ও প্রতিবন্ধীদের মাঝে এসব উপহার সামগ্রী বিতরন করেন
র্যাব-১১ এর সিনিয়র সহাকারী পরিচালক ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) আলেপ উদ্দিন।
তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জ একটি জনবহুল এলাকা। এখানে করোনার প্রভাবটা অত্যন্ত প্রকট। এ প্রকট হওয়ার কারণে আমরা নারায়ণগঞ্জকে লকডাউন করে দিয়েছি। এ লকডাউন করতে গিয়ে আমরা দেখলাম এই অন্ধ ও প্রতিবন্ধী মানুষ গুলো খাদ্য সংকট ও অনাহারে দিন কাটাচ্ছে। আমরা সেই পরিমাণে না পারলেও ক্ষুদ্র পরিসরে চেষ্টা করছি তাদের পাশে দাঁড়াতে। এ কারণেই অন্ধ ও প্রতিবন্ধী মানুষ গুলোকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে আমাদের যতটুকু সম্ভব র্যাব ১১ এর পক্ষ থেকে খাদ্য সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি।
আলেপ উদ্দিন (পিপিএম) জানান, র্যাব সব সময় মানুষের কল্যাণে কাজ করছে। এ দুর্যোগে অসহায় মানুষের পাশে থাকা আমাদের কর্তব্য। তাই ঝুঁকি জেনেও আমরা পিছপা হচ্ছি না। আমাদের প্রত্যেক সদস্য অসহায় মানুষদের কাছে খাবার পৌঁছে দিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
তিনি জানান, দিনে আইন-শৃংখলা রক্ষা ও লকডাউন মানার জন্য ডিউটি করতে হয়। এছাড়া দিনে ত্রাণ দিলে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাও সম্ভব হয় না। এজন্য আমরা রাতেই ত্রাণ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে এখন কিছু কিছু প্রয়োজনীয় জায়গায় দিনের বেলাতেও ত্রাণ দিয়ে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন ইতোমধ্যে মানবিক অফিসার খেতাব পাওয়া এ কর্মকর্তা।
র্যাবের ত্রাণ দেয়ার বিষয়টি নারায়ণগঞ্জের সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। বিভিন্ন মানুষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের এমন কর্মকাণ্ডের ছবি দিয়ে উৎসাহ দিচ্ছেন। ভবিষ্যতে এ ধরনের কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখতে র্যাবের প্রতি আহ্বান জানান বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।