ওবায়দুল ইসলাম রবি,রাজশাহী প্রতিনিধি: রাজশাহী চারঘাট উপজেলার পরানপুরে এক নারী (২৩) কে ধর্ষণের অভিযোগে কাজির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন মেয়ের মা। পরে ওই নারী সামাজিক লোকলজ্যার কারণে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। চারঘাট মডেল থানায় মামলা না নেয়ার কারণে বাদী পক্ষ রাজশাহী আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। বর্তমান অভিযুক্তের পক্ষের আত্মীয় স্বজনরা বাদীকে মামলা তুলে নেয়ার হুমকি দিচ্ছে।
মঙ্গলবার সকালে নিহতের মা আনজেরা বেগম দৈনিক ভোরের কাগজকে বলেন, নিকাহ ও তালাক রেজিষ্টার জহুরুল ইসলাম (৪৫) এর মাধ্যমে তার কণ্যাকে ৫ বছর পূর্বে উপজেলার পরানপুর গ্রামের হায়াতুল্লার ছেলের সাথে বিবাহ দেয়া হয়। বিবাহর পর থেকেই তার মেয়েকে অশ্লীল কথাবার্ত ও কুপ্রস্তাব দিতে থাকে ওই কাজী। আনজেরা, তার মেয়ের কাছ থেকে সকল ঘটনা জানার পরে অভিযুক্ত জহুরুলকে অনুরোধ করে বলেন, তার মেয়ের যেন কোন ক্ষতি না করে। কিন্ত সব কিছু উপেক্ষা করে গত সেপ্টম্বর মাসের ১ তারিখে অর্থ এবং বিয়ের প্রলোভন দিয়ে অজ্ঞাত কোন এক স্থানে নিয়ে যায় ওই কাজী। এক পর্যায়ে অভিযুক্তের তথ্যের ভিত্তিতে নিরুর্দেশ মেয়েকে বাঘা পৌরসভার মান্নান পিওনের বাড়ি থেক অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরে চারঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়।
নিহতের মা বলেন, মেয়ের দেয়া তথ্য মতে অভিযুক্ত জহুরুল তার মেয়েকে বিয়ে না করেই জোড়পূর্বক দৈহিক সর্ম্পক করে। ওই বিষয় গুলো গ্রামের মানুষের মুখে মুখে প্রচার হওয়ার কারনে সেপ্টেম্বর মাসের ৯ তারিখ সকাল অনুমান ৬.৩০ টার সময় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে আনজেরার মেয়ে। সম্পূর্ন বিষয়ে জানার পরে চারঘাট মডেল থানায় জহুরুলে বিরুদ্ধে মামলা করতে গেলে এসআই ইকবাল অকথ্য ভাষায় কথা বলে থানা থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। এবিষয়ে, এসআই ইকবাল বলেন, তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগটি বানোয়াট। তার মেয়ের আত্মহত্যার বিষয়ে থানায় একটি ইউডি মামলা হয়েছে।
অভিযুক্তের স্ত্রী নুসরাত জাহান সুমি এবং ফুপা সিরাজ মন্ডল বলেন, বাদী পক্ষের অর্থের দাবি না মানার কারনে কাজীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন। তাছাড়া মৃত নারী তাদেও পরিবারের সাথে খুব ভাল সর্ম্পক ছিল। মূলত ভাতিজি ও চাচা ও চাচীর সর্ম্পকের বন্ধন ছিল তাদের মধ্যে। প্রকৃত পক্ষে ওই আনজেরা অর্থ নেয়ার কারনে তাদের পরিবারের সন্মান নষ্ট করেছে। মামলা তুলে নেয়ার বিষয়ে কোন ধরনের হুমকি দেয়া হচ্ছে না।
ন্যায্য বিচারের দােিবতে নিহতের মা আনেজেরা সেপ্টেম্বর মাসের ২০ তারিখে রাজশাহী জর্জ কোর্টে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা রুজু করেন। এই মামলটি তদন্ত করনে রাজশাহী পুলিশ তদন্ত বুরে্যা (পিবিআই)। অভিযুক্ত মামলার বিষয়টি জানার পর থেকেই পলাতক থাকে। প্রসঙ্গত, অপরাধী ও তার পরিবার বিভিন্ন ভাবে ভয় ভীতি ও মামলা তুলে নেয়ার হুমকি দিয়ে আসছে বাদীকে। একপর্যায়ে পিবিআই আসামী জহুরুলকে নভেম্বর মাসের ২৭ তারিখ গ্রেফতার করেন। তবে আসামীর পক্ষের লোকজন মামলা তুলে নেয়ার জন্য নানা কৌশল অবলম্বন করছেন। আইন শৃঙ্খলা বাহীনিকে অর্থের বিনিমিয়ে তদন্ত রির্পোট নষ্ট করার পায়তারাও করছে তারা। আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে অভিযুক্ত কাজী জহুরুলের দৃষ্টান্ত স্বাস্তির দাবি জানিয়েছে নিহতের মা।