নিজস্ব প্রতিবেদক: দেবীর বোধন ও ষষ্ঠী পূজার মাধ্যমে আজ শুরু হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব। তিথি অনুযায়ী আজ সোমবার (১১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হবে দুর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গার বোধন, আমন্ত্রণ ও অধিবাস।
ভক্তের ভক্তি, নিষ্ঠা আর পূজার আনুষ্ঠানিকতায় মাতৃরূপে দেবী দুর্গা অধিষ্ঠিত হবেন মণ্ডপে মণ্ডপে। তিথির কারণে একই দিনে মহাষষ্ঠী পূজা হবে। দেবী দুর্গার আগমনে উচ্ছ্বসিত ভক্তকুল। দেশজুড়ে উৎসবের আমেজ।
পুরাণ মতে, রাজা সুরথ প্রথম দেবী দুর্গার আরাধনা শুরু করেন। বসন্তকালে তিনি এই পূজা আয়োজন করেছিলেন বলে এ পূজাকে বাসন্তী পূজা বলা হয়। কিন্তু রাজা রাবণের হাত থেকে স্ত্রী সীতাকে উদ্ধারের জন্য রাজা দশরথের পুত্র রামচন্দ্র শরৎকালে দুর্গাপূজার আয়োজন করেছিলেন। তাই শরৎকালের এই পূজাকে অকাল বোধনও বলা হয়। বাঙালির হূদয়ে শরৎকালের দুর্গার অধিষ্ঠান কন্যারূপে। প্রতিবছর বিভিন্ন বাহনে সপরিবারে শ্বশুরবাড়ি কৈলাস থেকে কন্যারূপে দেবী মর্তলোকে আসেন বাপের বাড়ি বেড়াতে। তাই দেবীকে বরণে আয়োজনের কমতি থাকে না। এরই মধ্যে পাঁচ দিনব্যাপী পূজার সব প্রস্তুতি শেষ। মহালয়ার মধ্য দিয়ে পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। আজ মহাষষ্ঠীর পর আগামীকাল মহাসপ্তমী।
শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে গতকাল রবিবার দুপুরে ঢাকেশ্বরী মন্দিরের নিরাপত্তাব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম। পূজামণ্ডপের নিরাপত্তাব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা সতর্ক অবস্থানে আছি। শারদীয় দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে কোনো ঝুঁকি দেখছি না। তবে আশঙ্কার কথাও উড়িয়ে দিচ্ছি না। দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে জঙ্গিরা অনলাইনে সক্রিয়। তবে কেউ তাদের পোস্ট দেখে উদ্বুদ্ধ হয়েছে এমন কোনো তথ্য নেই।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা মন্দিরগুলোকে সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় এনেছি। এ ছাড়া ঢাকা শহরের বড় মন্দিরগুলোয় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হবে। সিসিটিভি কন্ট্রোল রুম করা হবে। ছোট মন্দিরগুলোয় পুলিশের মোবাইল টিম কাজ করবে।’
করোনা মহামারির কারণে উৎসবসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো পরিহার করে সাত্ত্বিক পূজায় সীমাবদ্ধ রাখতে ভক্তদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে পূজা উদযাপন পরিষদ। এ ছাড়া মেলা, আলোকসজ্জা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আরতি প্রতিযোগিতা, বিজয়া দশমীর দিন শোভাযাত্রা পরিহার করে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে।
পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার চ্যাটার্জি জানান, রাজধানী ঢাকাসহ দেশজুড়ে প্রতিটি পূজামণ্ডপের নিরাপত্তা রক্ষায় পুলিশ, আনসার, র্যাব ও বিডিআর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। পাশাপাশি প্রতিটি মণ্ডপে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী দায়িত্ব পালন করবে। ঢাকেশ্বরী মন্দির প্রাঙ্গণে মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটির উদ্যোগে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে।