কালীগঞ্জে আ’লীগ নেত্রীর বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধী, বয়স্ক ও বিধবা ভাতার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
কালীগঞ্জ (গাজীপুর) গাজীপুরঃ গাজীপুরের কালীগঞ্জে জাংগালিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী মহিলা লীগের সহ-সভাপতি শেফালী খানমের বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধি, বিধবা ও বয়স্কদের সরকারি ভাতার কয়েক লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে ।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: শিবলী সাদিক বলেন, অভিযোগ পেয়ে অভিযুক্তদের রবিবার অফিসে ডাকা হয়েছে। এছাড়া বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা সমাজসেব অফিসার শাহাদাত হোসেন বলেন, মাঠ পর্যায়ে তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এঘটনায় আমাদের কোন অফিসার জড়িত নয়।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ইউনিয়ন আওয়ামী মহিলা লীগের সহ-সভাপতি শেফালী খানম জানান- আমি চেয়ারম্যান, মেম্বার নই। আমি মানুষের উপকার করার চেষ্টা করেছি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শেফালী খানম ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে এলাকা গিয়ে বিধবা, প্রতিবন্ধী ও বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দেয়ার আশ^াস দিয়ে ৩০-৪০টি পরিবারের নিকট থেকে ৫শ থেকে ১৫শ টাকা করে হাতিয়ে নেয়। পরবর্তীতে ভাতার টাকা ব্যাংক থেকে উত্তলোন করা সময় অভিযুক্ত ওই মহিলা নেত্রী সু-কৌশলে ভুক্তভোগীদের নিকট থেকে কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। ওই নেত্রীর অপকর্মের দায়ে দরিদ্র অসহায় মানুষ গুলো খালি হাতে ফিরতে হয়েছে বাড়ী। বিষয়টি নিয়ে গ্রামে বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
এমন সংবাদের খবর পেয়ে গণমাধ্যম কর্মীরা ওই গ্রামে গেলে বয়স্ক ফেলাল উদ্দিন ফেলা, রাসিদা বেগম, হাওয়া বেগম, বিধবা সাজেদা বেগম, আমেনা বেগম, প্রতিবন্ধী ঈমান আলী, আওলাদ, সুমন চন্দ্র শীল, ববিতা রানীসহ আরো অনেকে ছুটে আসেন। কষ্টে-দু:খের জীবন কাহিনী শুনিয়ে ছলছল চোখে শেফালীর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগসহ সরকারি ভাতার টাকা আত্মসাতের বিষয়টি তুলে ধরেন। আবার ভয় পাচ্ছেন মুখ খোলাতে নেত্রী শেফালী খানম কখন তাদের ক্ষতি করে ফেলে।
এবিষয়ে ভুক্তভোগী বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী মিনহাজের মা পেয়ারা বেগম জানান, মহিলা আওয়ামলী লীগ নেত্রী শেফালী খানম তাদের বাড়িতে এসে তার ছেলেকে প্রতিবন্ধী কার্ড করে দেয়ার আশ^াস দেন। পরে তার কাছ থেকে সংশ্লিষ্টসকল কাজপত্রসহ খরচ বাবদ ১ হাজার টাকা চেয়ে নেয়। পরবর্তীতে সরকারি প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ডটি এনে দেয়। ওই কার্ডের ভিত্তিতে সরকারি ভাবে নয় হাজার টাকার একটি চেক দেয় কালীগঞ্জ উপজেলা সমাজ সেবা অধিদপ্তর। চেক ভাঙ্গাতে গেলে শেফলী খানম সাথে যায় এবং টাকা উত্তোলনের পর ৫শটাকা দিয়ে বাকি ৮হাজার ৫শ টাকা সে নিয়ে নেয়।
আরো এক ভুক্তভোগী প্রতিবন্ধী জিয়াসমিনের মা হাসনেয়ারা জানান, তার কাছ থেকেও কার্ড করে দেয়ার কথা বলে প্রথমে কিছু টাকা নেয়। পরে ওই কার্ডের ভিতিতএত চেক দেয় উপজেলা সমাজ সেবা অধিপ্তর। কিন্তু ব্যাংক থেকে টাকা তুল্লে ৫শটাকা দিয়ে বাকি সব টাকা নিয়েছে নেত্রী শেফালী বেগম। জিজ্ঞেস করলে সে জানায় অফিসের খরচ লাগবে। পরবর্তীতে টাকা দিলে সেই টাকা আপনি নিবেন।
বিধবা আমেনা বেগম ও সাজেদা বেগম দু:খ প্রকাশ করে জানান, দরিদ্র সংসারে অনেক কষ্ট করে খেয়ে না খেয়ে জীবন যাবন করছেন। তার মধ্যেও নেত্রী শেফালীকে ভাতার কার্ড করার জন্য মানুষের কাছ থেকে চেয়ে এনে খরচ বাবদ কিছু টাকা এনেদেন। কার্ড পাওয়ার পর ভেবে ছিলেন ভাতার টাকা পাওয়ার পর ঐ ঋণের টাকা পরিশোধ করবেন। কিন্তু তা আর হলো না ব্যাংক থেকে ভাতার টাকা উত্তলনের পর নিচে নামার সাথে সাথে ছয় হাজার টাকার মধ্যে ৫শ টাকা দিয়ে বাকী সাড়ে ৫ হাজার টাকা শেফালী নিয়ে নেয়।
এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান গাজী সারওয়ার হোসেন বলেন, আমার কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। বিভিন্ন মাধ্যমে অভিযোগটি শুনেছি তবে বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে।