ঢাকা ০১:০১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

করোনা: নোয়াখালীতে বাড়ছে লাশের সারি!

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১০:৪৫:০৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ মে ২০২০
  • / 47

 

ইয়াকুব নবী ইমন: নোয়াখালীতে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। গত ২৪ ঘন্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে । এ নিয়ে জেলায় মোট ১০ জনের মৃত্যু হলো। এছাড়া জেলায় নতুন করে ২৪ ঘন্টায় ৫৯ জনের করোনা ভাইরাস সনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৪২৭ জন। এর মধ্যে সব চেয়ে বেশি আক্রান্ত বেগমগঞ্জ উপজেলায়। আর করোনার হটস্পট এখন বৃহত্তর নোয়াখালীর প্রধান বানিজ্যিক শহর চৌমুহনী। জেলায় জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট, পুলিশ, সাংবাদিক, আইনজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ আক্রান্ত হওয়ায় সর্বত্র আতঙ্ক, উদ্বেগ, উৎকন্ঠা বিরাজ করছে। ফলে সংক্রমন ঠেকাতে জেলায় ২য় দফার কঠোর লকডাউন চলছে।

সূত্র জানায়, জেলায় করোনা সনাক্ত হওয়ার পর গত ২ মাসে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১০ জন। তারা হলেন-সোনাইমুড়ী উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের ইটালী ফেরত মোরশেদ আলম (৪৫), সেনবাগে রাজমেস্ত্রী আক্কাস আলী(৪৮), বেগমগঞ্জ উপজেলার মীরওয়ারিশপুর গ্রামের বেচার দোকান এলাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী তারেক হোসেন (৩০), চৌমুহনী পৌর এলাকার গনিপুর গ্রামের ব্যবসায়ী আমিনুল ইসলাম মিন্টু (৪৭), সোনাইমুড়ীর কৃষক ফখরুল ইসলাম বাচ্চু (৫৯), বেগমগঞ্জের কুতুবপুরে শহিদুর রহমান (৬৬), চৌমুহনী পৌরসভা করিমপুরের লোল উদ্দিন (৫৭) চৌমুহনী পৌরসভার পশ্চিম গনিপুর গ্রামের হাজী আবুল খায়ের পাটোয়ারী (৭৪) ও সুবর্নচর উপজেলার এক গৃহবধুসহ ২ জন। এছাড়াও জেলায় করোনা উপসর্গ নিয়ে এ পর্যন্ত মারা গেছেন ২০ জনের মতো। যাদের অনেকের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
বুধবার দুপুরে জেলা সিভিল সার্জন মোমিনুর রহমান জানান, জেলায় মোট আক্রন্ত হয়েছেন ৪২৭ জন, মৃত্যু হয়েছে ১০ জন, সুস্থ হয়েছেন ২৯ জন।।

তিনি আরো জানান, আক্রান্তদের মধ্যে বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ রয়েছেন। শনাক্ত হওয়া প্রায় সবাই জ্বর ও কাশিতে ভুগছিল। তাদের মধ্যে ২৪ জনকে মাইজদী শহীদ ভুলু স্টেডিয়ামে স্থাপিত অস্থায়ী করোনা ভাইরাস হাসপাতালের আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। ৩৬০ জন নিজ নিজ বাড়ীতে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন। ৩৩ জন সুস্থ হয়ে বাড়ী ফিরে গেছেন।
আক্রান্তদের মধ্যে নোয়াখালী সদর-৬০ জন, সুবর্ণচর-১৪ জন, হাতিয়া-০৬ জন, বেগমগঞ্জ -২২৪ জন, সোনাইমুড়ী-১৯ জন, চাটখিল-৩০ জন, সেনবাগ-১১ জন, কোম্পানিগঞ্জ -০৭ জন ও কবিরহাট-৫৬ জন। আক্রান্তের হার ১৩.২৭% ও সুস্থতার হার ৬.৭৯%।

এদিকে দিন জেলায় করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। পাশাপাশি বাড়ছে লাশের সারি। ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসনের একনজ নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট, সদর, বেগমগঞ্জ, চৌমুহনী পুলিশ ফাঁড়ির একাধিক পুলিশ সদস্য, ৭১ টিভির ক্যামরাপার্সন জয় ভূঁইয়াসহ ২ জন সাংবাদিক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। করোনা ভাইরাসের সংক্রমন হার বেড়ে যাওয়ায় জেলাজুড়ে দ্বিতীয় দফার কঠোর লকডাউন চলছে। এর মধ্যে চৌমুহনী শহরকে রেডজোন হিসেবে ঘোষনা করেছে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন।
তবে একাধিক সচেতন মহল মনে করেন, প্রশাসন যতোই কঠোর হোকনা কেন সাধারণ মানুষকে আরো সচেতন হতে হবে। চৌমুহনী শহরকে আরো আগে ১৪৪ ধারার আওতায় আনলে এখানে সংক্রমন এতো বাড়তো না।

নোয়াখালী জেলা প্রশাসক তন্ময় দাস জানান, করোনার সংক্রমন ও মৃত্যুর হার ঠেকাতে আমরা সব রকম চেষ্টা করে যাচ্ছি। তিনি সবাই বিনা প্রয়োজনে বাসা বাড়ি থেকে বের না হওয়ার আহবান জানান।

নতুন প্রজন্মের অনলাইন টিভি

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

করোনা: নোয়াখালীতে বাড়ছে লাশের সারি!

আপডেট সময় : ১০:৪৫:০৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ মে ২০২০

 

ইয়াকুব নবী ইমন: নোয়াখালীতে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। গত ২৪ ঘন্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে । এ নিয়ে জেলায় মোট ১০ জনের মৃত্যু হলো। এছাড়া জেলায় নতুন করে ২৪ ঘন্টায় ৫৯ জনের করোনা ভাইরাস সনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৪২৭ জন। এর মধ্যে সব চেয়ে বেশি আক্রান্ত বেগমগঞ্জ উপজেলায়। আর করোনার হটস্পট এখন বৃহত্তর নোয়াখালীর প্রধান বানিজ্যিক শহর চৌমুহনী। জেলায় জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট, পুলিশ, সাংবাদিক, আইনজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ আক্রান্ত হওয়ায় সর্বত্র আতঙ্ক, উদ্বেগ, উৎকন্ঠা বিরাজ করছে। ফলে সংক্রমন ঠেকাতে জেলায় ২য় দফার কঠোর লকডাউন চলছে।

সূত্র জানায়, জেলায় করোনা সনাক্ত হওয়ার পর গত ২ মাসে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১০ জন। তারা হলেন-সোনাইমুড়ী উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের ইটালী ফেরত মোরশেদ আলম (৪৫), সেনবাগে রাজমেস্ত্রী আক্কাস আলী(৪৮), বেগমগঞ্জ উপজেলার মীরওয়ারিশপুর গ্রামের বেচার দোকান এলাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী তারেক হোসেন (৩০), চৌমুহনী পৌর এলাকার গনিপুর গ্রামের ব্যবসায়ী আমিনুল ইসলাম মিন্টু (৪৭), সোনাইমুড়ীর কৃষক ফখরুল ইসলাম বাচ্চু (৫৯), বেগমগঞ্জের কুতুবপুরে শহিদুর রহমান (৬৬), চৌমুহনী পৌরসভা করিমপুরের লোল উদ্দিন (৫৭) চৌমুহনী পৌরসভার পশ্চিম গনিপুর গ্রামের হাজী আবুল খায়ের পাটোয়ারী (৭৪) ও সুবর্নচর উপজেলার এক গৃহবধুসহ ২ জন। এছাড়াও জেলায় করোনা উপসর্গ নিয়ে এ পর্যন্ত মারা গেছেন ২০ জনের মতো। যাদের অনেকের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
বুধবার দুপুরে জেলা সিভিল সার্জন মোমিনুর রহমান জানান, জেলায় মোট আক্রন্ত হয়েছেন ৪২৭ জন, মৃত্যু হয়েছে ১০ জন, সুস্থ হয়েছেন ২৯ জন।।

তিনি আরো জানান, আক্রান্তদের মধ্যে বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ রয়েছেন। শনাক্ত হওয়া প্রায় সবাই জ্বর ও কাশিতে ভুগছিল। তাদের মধ্যে ২৪ জনকে মাইজদী শহীদ ভুলু স্টেডিয়ামে স্থাপিত অস্থায়ী করোনা ভাইরাস হাসপাতালের আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। ৩৬০ জন নিজ নিজ বাড়ীতে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন। ৩৩ জন সুস্থ হয়ে বাড়ী ফিরে গেছেন।
আক্রান্তদের মধ্যে নোয়াখালী সদর-৬০ জন, সুবর্ণচর-১৪ জন, হাতিয়া-০৬ জন, বেগমগঞ্জ -২২৪ জন, সোনাইমুড়ী-১৯ জন, চাটখিল-৩০ জন, সেনবাগ-১১ জন, কোম্পানিগঞ্জ -০৭ জন ও কবিরহাট-৫৬ জন। আক্রান্তের হার ১৩.২৭% ও সুস্থতার হার ৬.৭৯%।

এদিকে দিন জেলায় করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। পাশাপাশি বাড়ছে লাশের সারি। ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসনের একনজ নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট, সদর, বেগমগঞ্জ, চৌমুহনী পুলিশ ফাঁড়ির একাধিক পুলিশ সদস্য, ৭১ টিভির ক্যামরাপার্সন জয় ভূঁইয়াসহ ২ জন সাংবাদিক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। করোনা ভাইরাসের সংক্রমন হার বেড়ে যাওয়ায় জেলাজুড়ে দ্বিতীয় দফার কঠোর লকডাউন চলছে। এর মধ্যে চৌমুহনী শহরকে রেডজোন হিসেবে ঘোষনা করেছে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন।
তবে একাধিক সচেতন মহল মনে করেন, প্রশাসন যতোই কঠোর হোকনা কেন সাধারণ মানুষকে আরো সচেতন হতে হবে। চৌমুহনী শহরকে আরো আগে ১৪৪ ধারার আওতায় আনলে এখানে সংক্রমন এতো বাড়তো না।

নোয়াখালী জেলা প্রশাসক তন্ময় দাস জানান, করোনার সংক্রমন ও মৃত্যুর হার ঠেকাতে আমরা সব রকম চেষ্টা করে যাচ্ছি। তিনি সবাই বিনা প্রয়োজনে বাসা বাড়ি থেকে বের না হওয়ার আহবান জানান।