নিজস্ব প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামীকাল বুধবার ১৪ দলীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে করবেন। প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে সন্ধ্যা সাতটায় শুরু হতে যাওয়া এই বৈঠকে আগামী দিনে ঐক্যবদ্ধ রাজনৈতিক কৌশল নির্ধারণ নিয়ে আলোচনা হতে পারে বলে আভাস দিয়েছেন জোটের শরিক দলগুলোর নেতারা। তাঁরা বলছেন, পশ্চিমা কূটনীতিকদের কার্যক্রমে চাপে পড়ায় আওয়ামী লীগের কাছে শরিকদের গুরুত্ব বেড়েছে।
শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটেরও নেত্রী। সর্বশেষ গত বছরের ১৫ মার্চ গণভবনে প্রধানমন্ত্রী এই জোটের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে তিনি আগামী নির্বাচনও জোটগতভাবে করার সিদ্ধান্ত জানিয়েছিলেন। ১৪ দলের শরিক দলের নেতারা বলছেন, সামনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। বুধবার জোটের নেত্রীর সঙ্গে বৈঠকে সব দলের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হলে জোটের কৌশল, আসন বণ্টন নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা আসতে পারে। একই সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ (ইইউ) পশ্চিমা দেশগুলোর অবস্থানে সরকারের প্রতি অদৃশ্য যে চাপ তৈরি হয়েছে, তা মোকাবিলার কর্মপন্থা নিয়েও আলোচনা হবে।
আগামী নির্বাচন সামনে রেখেই জোটের নেতাদের বৈঠকে ডাকা হয়েছে বলে জানান আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম। তিনি বলেন, জোটের অবস্থান, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট এবং আগামী দিনের কর্মপরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হবে।
১৪ দলের শরিক সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া বলেন, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে তিনি (শেখ হাসিনা) দিকনির্দেশনা দেবেন।
জোটের এক নেতা বলেন, জোটের প্রতিটি শরিক দল থেকে দুজন সদস্য বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন। তবে বৈঠকের অ্যাজেন্ডার বিষয়ে তাঁদের কিছু জানানো হয়নি। পরিস্থিতি দেখে বোঝা যাচ্ছে, আগামী দিনের রাজনৈতিক কৌশল নির্ধারণের বিষয়ে বিশদ আলোচনা হবে।
টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকায় আওয়ামী লীগের কাছে ১৪ দলীয় জোটের শরিকদের গুরুত্ব কমে গেছে বলে বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ করেছেন শরিক দলের নেতারা। জোটের দুটি দলের শীর্ষ দুই নেতা সংসদেও বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জোটের এক নেতা বলেন, পশ্চিমা কূটনীতিকদের কার্যক্রমে চাপে পড়ায় আওয়ামী লীগের কাছে তাঁদের গুরুত্ব বেড়েছে। প্রধানমন্ত্রী কী কারণে ডেকেছেন তা শুনবেন, এরপর তাঁরা তাঁদের কথা বলবেন।
গত ৬ জুন বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে ১৪ দলীয় জোট আলোচনা সভা করে। ৪ জুন জোটের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র এবং আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমুর বাসভবনে জোটের বৈঠকে মার্কিন ভিসা নীতিকে দুরভিসন্ধিমূলক দাবি করা হয়।
জাতীয় পার্টির (জেপি) মহাসচিব শেখ শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘বিএনপি দলীয় কর্মসূচি দিচ্ছে। সে জন্য আওয়ামী লীগ বলতে চায়, তাদেরটা তারা মোকাবিলা করবে। যাতে বলতে না পারে, ১৪ দল মিলিয়ে এত লোক হয়েছে।’ তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি বুধবারের বৈঠকে দিকনির্দেশনা দেবেন। এরপর ১৪ দলীয় জোট বৈঠক করে কর্মসূচি ঠিক করবে।
বাংলাদেশ সফর করেছে মার্কিন একটি প্রতিনিধিদল। ৮ জুলাই ১৬ দিনের সফরে আসা ইইউ প্রতিনিধিদল আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, জামায়াত এবং এবি পার্টির সঙ্গে বৈঠক করেছে। তবে ১৪ দলের অন্য শরিকদের সঙ্গে কথা বলেনি। এতে দলগুলোর মধ্যে অস্বস্তি আছে বলে জানা গেছে।
তবে গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘আমরা হলাম ১৪ দলীয় জোটের অংশ। আমাদের জোট নেত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর সঙ্গে আলোচনা করাটাই আমাদের সঙ্গে আলোচনা করা। সেখানে ভিন্ন কিছু দেখি না।’