এলএলবিতে ৭৫ শিক্ষার্থীর বেশি ভর্তি নয়

নিজস্ব প্রতিবেদক: বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের এলএলবি (ব্যাচেলর অব ল) প্রোগ্রাম এবং সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি আসন সংখ্যা পুনরায় নির্ধারণ করেছেন আপিল বিভাগ। বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে ৬ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ রায় দেন।

এতে বলা হয়, রূপান্তরিত পদ্ধতিতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আইন বিভাগে শিক্ষার্থী ভর্তি আসন ৫০ থেকে বাড়িয়ে ৭৫ করা হয়। এর বেশী শিক্ষার্থী ভর্তি করা যাবেনা। একইসঙ্গে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে এ সংখ্যা ১০০ এর বেশী না।

এছাড়া রায়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে ৫০ জনের অধিক ভর্তিকৃত শিক্ষার্থী প্রতি ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন সর্বোচ্চ আদালত। এ জরিমানারা টাকার ৮০ শতাংশ বাংলাদেশ বার কাউন্সিলকে ও ২০ শতাংশ সুপ্রিম কোর্টের ডে কেয়ার সেন্টারকে দিতে বলা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই জরিমানার টাকা পরিশোধ করবে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে অতিরিক্ত ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের রিভিউ আবেদনের শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন।

এর আগে ১৩ এপ্রিল দেশের কোনো সরকারি বা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইনে প্রতি সেমিস্টারে ৫০ জনের বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করতে পারবে না বলে মতামত দিয়েছিলেন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ। এছাড়া বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চার বছর মেয়াদী আইনের ডিগ্রি ব্যতীত অন্য কোনো ডিগ্রি গ্রহণযোগ্য হবে না।

দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের মামলার আপিলের পূর্ণাঙ্গ রায়ে এমন পর্যবেক্ষণ দেন আপিল বিভাগ।

আপিল বিভাগের পর্যবেক্ষণে আরও বলা হয়, জেলা জজ আদালত ও হাইকোর্ট বিভাগে আইনজীবী হিসেবে (রেজিস্ট্রেশন) নিবন্ধিত হওয়ার ক্ষেত্রে বয়স নির্ধারণের ব্যাপারে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল একটি রুলস করতে পারে।

এর আগে গত ৭ ফেব্রুয়ারি মৌখিক রায়ে নিবন্ধনের জন্য ৪০ বছর বয়স নির্ধারণের ব্যাপারে আদালত মত দিয়েছিলেন বলে আইনজীবীরা জানিয়েছিলেন। তবে পূর্ণাঙ্গ রায়ে সুনির্দিষ্টভাবে কোনো বয়সসীমা উল্লেখ করা হয়নি।

রায়ে আইন পেশার মান নিয়ন্ত্রণের জন্য বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের বিষয়ে বেশ কিছু পর্যবেক্ষণ দেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে আইনের সিলেবাস প্রণয়নের ক্ষেত্রে বার কাউন্সিল তদারকি করতে পারবে।

বার কাউন্সিল যেভাবে নির্দেশনা দেবে সেই অনুযায়ী যথেষ্ট পরিমাণ শিক্ষক নেই এমন কোনো সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বা ল’ কলেজ আইন পড়াতে পারবে না। বার কাউন্সিল অ্যাডভোকেট হিসেবে সনদ প্রদানের ক্ষেত্রে প্রতি বছর এনরোলমেন্ট পরীক্ষার কার্যক্রম শেষ করবে।

গত ৭ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগ এই মামলায় দারুল ইহসানের আপিল খারিজ করে দেন। তাই দারুল ইহসানের পাঠদানের আর কোনো সুযোগ নেই।

দারুল ইহসান বন্ধ সংক্রান্ত রায়েই হাইকোর্ট বিভাগ আইনজীবী হিসেবে নিবন্ধিত হওয়ার ক্ষেত্রে কিছু শর্তও বেঁধে দিয়েছেন। আপিল বিভাগ সে রায় কিছুটা সংশোধন করে নতুন এই পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন।

বার কাউন্সিলের সনদ গ্রহণের পরীক্ষায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই বছর মেয়াদী ডিগ্রিধারীদের সনদ নিয়ে জটিলতার পরিপ্রেক্ষিতে হওয়া রিটের রায়ে ২০১৬ সালের ২৫ জুলাই এলএলবি কোর্স সম্পর্কে কিছু নির্দেশনা দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের নির্দেশও দেন আদালত।

হাইকোর্টের সেই রায়ের বিরুদ্ধে দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় আপিল করে। ওই মামলায় দারুল ইহসানের আপিল খারিজ করেছেন আদালত। এছাড়া একই মামলায় অন্য যেসব বিশ্ববিদ্যালয় পক্ষভুক্ত হয়েছিল সেসব আবেদনও নিষ্পত্তি করেছেন আপিল বিভাগ।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

Title