নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতীয় পার্টি (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, দেশে একটি দল আছে; সেই দল স্বৈরাচারী কায়দায় দেশ শাসন করছে। বিচার বিভাগ, প্রশাসন, নির্বাচন কমিশন (ইসি), আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) ও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সবাই ঐ দলের সদস্য। সংসদ ও সংসদের স্পিকার সেই দলের হয়েই কথা বলছেন। সবাইকে সেই দলই রক্ষা করছে। তারা সবাই আওয়ামী লীগের এবং তাদের নেতা একজন। সেই নেতা যা বলেন, সবাই তাই করেন। তাহলে নির্বাচন কীভাবে সুষ্ঠু হবে? গতকাল শনিবার নরসিংদী শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে জেলা জাপার দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জি এম কাদের বলেন, বিচার বিভাগ নিয়ে আমরা গর্ব করতাম। কিছুদিন আগে সরকারি দলের এক প্রভাবশালী ব্যক্তি বলেছেন—প্রধান বিচারপতিকে আমরা নামিয়ে দিয়েছি। কে নামিয়ে দিয়েছে? আওয়ামী লীগ নামিয়ে দিয়েছে। তার মানে বিচার বিভাগকেও ঐ দলের সদস্য হতে হবে। সেখানে দুর্নীতিবাজরা কীভাবে শাস্তি পাবে? কীভাবে মেধাবিরা চাকরি পাবে? সবাই দলীয় চাদরের মধ্যে আছেন। যে নির্দেশ আসে সবাই সেটি মেনে চলেন।
তিনি বলেন, যেভাবে বাকশাল গঠন করা হয়েছিল, সেভাবেই বাকশালের মতো সরকার গঠন করা হয়েছে। আমাদের অজান্তেই দেশে বাকশাল গঠন করা হয়েছে। শাসন ব্যবস্থার সকল প্রতিষ্ঠান একটি দলের সদস্য হয়ে গেছে। দেশের বাকি মানুষ যেন মানুষ নয়। সাধারণ মানুষ খেল কী খেল না—তা দেখার কেউ নেই। বাকশালের মতো একদলীয় শাসন ব্যবস্থাকে স্থায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সামনের নির্বাচনে বাকশালের মতো সরকারকে চির স্থায়িত্ব দেওয়ার পরিকল্পনা চলছে। দেশে বাকশালের মতো দল হয়েছে, এখানে সাধারণ মানুষের কোনো স্থান নেই। সাধারণ মানুষ বিচার পায় না, তাদের কথা গ্রাহ্য করা হয় না, তারা নির্বাচন করতেপারে না, নির্বাচন করে জিততে পারবে না, এটাই বাস্তবতা।
জাপা চেয়ারম্যান বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে—আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন করছি, আমরা নির্বাচন ছাড়া ক্ষমতায় আসিনি। সরকারের কথা দেশের মানুষ বিশ্বাস করে না। একদলের হাত থেকে দেশকে মুক্ত করতে হবে। তাহলেই দেশের মানুষ বেঁচে থাকার অবলম্বন পাবে। দেশকে মুক্ত করা না গেলে হাজার-হাজার কোটি টাকা আবারও বিদেশে পাচার হয়ে যাবে। সরকারের বিপক্ষে সত্য কথা বললে কোনো গণমাধ্যম প্রকাশ করতে পারে না। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করা হয়েছে গণমাধ্যমের গলা টিপে রাখার জন্য। শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে, আগামীতে ফাঁসির ব্যবস্থা করা অস্বাভাবিক কিছু নয়। আইন করে, নির্যাতন-নিপীড়ন চালিয়ে দেশে লুটপাটের ব্যবস্থা হচ্ছে। তিনি বলেন, বাজেটের কারণে সামনের দিনগুলো আরো কঠিন হয়ে উঠবে। সরকার জান বাঁচাতে নির্বাচন পার করতে চাচ্ছে। তারপর তারা দেখিয়ে দেবে তারা কোথায়, আর জনগণ কোথায়।