ইয়াকুব নবী ইমন, নোয়াখালী প্রতিনিধি :সম্প্রতি সময় ব্যাপক আলোচিত নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচন জমে উঠেছে। এখানে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদের নির্বাচনী এলাকা হওয়ায় সবসময় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে বসুরহাট। এবার নির্বাচনে ইসতেহার ঘোষনা থেকে শুরু করে মির্জা কাদেরের রাজনৈতিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বক্তব্যের কারণে নির্বাচন হয়ে উঠেছে টপ অব দ্যা কান্টি। বসুরহাট পৌরসভার নির্বাচনে মেয়র আওয়ামীলীগ থেকে নৌকা, বিএনপি থেকে ধানের শীষ ও স্বতন্ত্র থেকে মোশারফ হোসেন মোবাইল ফোন প্রতিকে ভোট করছেন। এছাড়া কাউন্সিলর পদে ২৫ জন ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৭ জন সহ মোট ৩৫ জন প্রার্থী যার যার অবস্থান থেকে দিনরাত চালিয়ে যাচ্ছেন ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা।
প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে ভোটারদের মন জয় করতে প্রার্থীরা দিচ্ছেন নানান প্রতিশ্রæতি। পুরো নির্বাচনী এলাকা ছেঁয়ে গেছে ব্যানার-ফেস্টুন। চলছে মাইকিং, মিটিং-মিছিল, পথসভা। ভোটারদের ধারে ধারে ছুটছেন প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থীরা।
ভোটারা জানান, ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ থাকলে ভোট দিবেন যোগ্য প্রার্থীকে। তবে প্রথমবারের মতো এ পৌরসভায় ভোট ইভিএম পদ্ধতিতে হওয়ার কারনে ভোটারদের মাঝে নানা কৌতুহল দেখা গেছে।
এদিকে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ জানায়, ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই বর্তমান মেয়র আবদুল কাদের মির্জা বারবার পৌরসভার মেয়র থাকায় সাধারণ নাগরিকের জীবন-মান উন্নয়নে ব্যাপক কাজ করেছেন। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার জন্য কাদের মির্জাকে পুনরায় মেয়র করা প্রয়োজন।
অপরদিকে বিএনপির নেতাকর্মীরা জানায়, এখন পর্যন্ত নির্বাচনের পরিবেশ ভালো রয়েছে । তারা প্রচার প্রচারনা চালালে কোন বাঁধা দেয়া হচ্ছেনা। নির্বাচন সুষ্ঠ হলে বিএনপির প্রার্থী জয়ী হবেন বলে তারা আশাবাদি।
অন্যদিকে, সাধারন ভোটাররা মনে করেন, সৎ, যোগ্য, কর্মঠ ও পৌরসভার উন্নয়নে যে প্রার্থী কাজ করবে এবং ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা দিবে তারা সে প্রার্থীকে ভোট দিবেন। প্রথমবারের মতো এ অঞ্চলে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ নিয়ে সাধারণ ভোটারদের মাঝে ব্যাপক কৌতুহল দেখা দিয়েছে, তারা বলছে এতে নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন হবে।
আওয়ামীলীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী আবদুল কাদের মির্জা ভোটারদের উদ্দেশ্যে বলেন, ভোটকেন্দ্রে গিয়ে নিজের পচন্দের প্রার্থীকে ভোট দেবেন। কেউ বাঁধা দিলে তাকে প্রতিহত করবেন। আমি চাই বসুরহাট এবার যেন অবাধ, সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ ভোটে মেয়র নির্বাচিত হয়।
বিএনপির মেয়র প্রার্থী কামাল উদ্দিন চৌধুরী বলেন, এখন পর্যন্ত নির্বাচনের পরিবেশ ভালো রয়েছে। জয়ের ব্যাপারে আমরা আশাবাদি।
স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মোশারফ হোসেন বলেন, ইভিএমে ভোটারদের নতুন অভিজ্ঞতা হবে। তিনি ইভিএমর সবুজ বাটনে মোবাইল মার্কায় টিপ দিয়ে তাকে নির্বাচিত করার জন্য ভোটারদের প্রতি আহবান জানান।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা সাইয়েদ মো. আনোয়ার খালেদজানান, নির্বাচন সুষ্ঠ, অবাধ ও নিরপেক্ষ করতে সবরকম প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে । পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের ৯টি কেন্দ্রে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
উল্লেখ্য, আগামী ১৬ জানুয়ারি নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত বিরতিহীন ভাবে ভোট গ্রহন চলবে। ১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠিত বসুরহাট পৌরসভার মোট জনসংখ্যা প্রায় ৪০ হাজার। ভোটার সংখ্যা ২১ হাজার ১১৫ জন। যার মধ্যে নারী ভোটার ১০ হাজার ৪৯৪ জন, পুরুষ ভোটার ১০ হাজার ৬২১ জন ।