লিটন ঘোষ বাপি : দেবহাটা উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ ইউনিয়ন পারুলিয়া। পারুলিয়াকে বলা হয় দেবহাটা উপজেলার রাজধানী। কিছুদিন পরই ঘোষণা হবে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনী তফশিল। তাই আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দেবহাটা উপজেলার পারুলিয়া ইউনিয়নে বইতে শুরু করেছে নির্বাচনী হাওয়া। সম্ভাব্য প্রার্থী ও নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয়েছে জল্পনা-কল্পনা। হাটে, বাজারে, চায়ের দোকানে, মাঠে-ঘাটে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। সেই সাথে সম্ভাব্য প্রার্থীরাও এলাকার প্রতিটি গ্রাম পর্যায়ে গণসংযোগ, মটরসাইকেল শোভাযাত্র সহকারে শো-ডাউন বাড়িয়েছেন। এলাকার মানুষের কাছে গিয়ে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দেওয়ার সাথে নিজের অবস্থান ও জানান দিচ্ছেন । অনেকেই লবিং শুরু করেছেন দলীয় মনোনয়ন প্রাত্যাশায়। বিশেষ করে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের একাধিক প্রার্থী দলীয় মনোনয়নের প্রত্যাশা করে গণসংযোগ অব্যাহত রেখেছেন । পারুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ সহ আঙ্গসংগঠনের সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশী ৬ জন, বিএনপি থেকে ১ জন। তবে মামলার জটে পলাতক থাকায় দেবহাটা উপজেলা জামায়াতের দায়িত্বশীল কারোর সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি তবে ইউনিয়ন জুড়ে জামায়াতের হয়েছেন বড় অংকের ভোট ব্যাংক। জামায়াত অংশ না নিলেও তাদের ভোট জয় পরাজয় নির্ধারণ করতে পারে। আওয়ামীলীগ থেকে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিতে চান পারুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম। মাঠে রয়েছেন দেবহাটা উপজেলা আওয়ামীলীগের প্রস্তাবিত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুল ইসলাম (মনি), দেবহাটা উপজেলা আওয়ামী যুব লীগের সভাপতি মিজানুর রহমান মিন্নুর, দেবহাটা উপজেলা ওলামা লীগের সাবেক সভাপতি মাষ্টার মোঃ শফিকুল ইসলাম (সেজ খোকন), ২নং পারুলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন বিশ্বাস আবারা, মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদ দেবহাটা উপজেলা শাখার সভাপতি মোঃ হাফিজুল ইসলাম এর নাম শোনা যাচ্ছে। বিএনপির প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক বাবু । সরেজমিনে গিয়ে দেখা যাই, নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা না হলেও ইতোমধ্যে পারুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী সহ সকল প্রার্থীরা অগ্রিম ব্যানার ফেস্টুন ও প্যানা বোর্ড টানিয়েছেন। ভোটারদের দিচ্ছেন বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি। বর্তমান চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বলেন, দলীয় মনোনয়ন নিয়ে ২০১৬ সালে সাধারণ জনগন বিপুল ভোটের মাধ্যমে আমাকে নির্বাচিত করেছে। আমি আমার সর্বত দিয়ে চেষ্টা করেছি জন-সাধারনের পাশে থাকার। চেষ্টা করে চলেছি এলাকার বিভিন্ন উন্নয়নের কাজ করার। আগামী নির্বাচনে পুনরায় দলীয় মনোনয়নের ব্যাপারে আশাবাদী। মনোনয়ন পেয়ে পুনরায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে আমার অসমাপ্ত কাজগুলো সমাপ্ত করে একটি মডেল ইউনিয়ন পরিষদ করার লক্ষ্যে কাজ করে যাব। উপজেলা আওয়ামীলীগের প্রস্তাবিত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুল ইসলাম (মনি) বলেন, আমি দীর্ঘদিন ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত। পারুলিয়া ইউনিয়নকে মাদক, দুর্নীতি, দারিদ্রমুক্ত ও জবাবদিহিতা মূলক ইউনিয়নে পরিণত করতে হবে। সেই লক্ষে সাধারণ মানুষদের সাথে নিয়ে আমি কাজ করে চলেছি। দলীয় মনোনয়ন পেলে আগামী নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করবো এবং পারুলিয়া ইউনিয়ন কে স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতা মূলক ইউনিয়নে পরিণত করবো। উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান মিন্টুর জানান, আমি আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান ও দীর্ঘদিন ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত। বিগত দিনে পারুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদে আমি মেম্বার ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িক্ত পালন করেছি। জন-সাধারণ আমার পাশে রয়েছে। দলীয় মনোনয়নের ক্ষেত্রে দল আমার উপর আস্থা রাখবে। মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচিত হলে পারুলিয়া ইউনিয়নকে মডেল ইউনিয়নে পরিণত করবো। নৌকা প্রতীকের প্রাথী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে কাদের ভুমিকা থাকবে এ বিষয়ে দেবহাটা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন- তৃণমুল নেতৃবৃন্দের ভোটাভুটির মাধ্যমে বাছাই করা হবে, উপজেলা এবং জেলার ৬ জনের বোর্ড সে সকল নেতৃবৃন্দ তৃণমুল পর্যায়ে ভাল অবস্থানে থাকবে তাদের মধ্যে থেকে ৩ জনকে তালিকা করে কেন্দ্রে পাঠানো হবে। কেন্দ্র বিভিন্ন গয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকে তথ্য নিয়ে গ্রহনযোগ্য ব্যক্তিকে নৌকা প্রতিকের মনোনয়ন দিবেন, তিনিই প্রার্থী হবে বলে জানান। ইতিমধ্যে ইউনিয়নের বিভিন্ন জনপদে সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থীরা বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ড, মিটিং, গনসংযোগ, ব্যানার, ফেষ্টুন, লিফলেট এর মাধ্যমে তাদের প্রচার প্ররোচনা শুরু করেছে। নির্বাচন অফিস সূত্র হিসেবে পারুলিয়া ইউনিয়নে মোট ভোটার ২৭ হাজার ৮ শত ৪৫ জন। তার মধ্যে পুরুষ ১৪ হাজার ১ শত ৩৬ ও মহিলা ১৩ হাজার ৭ শত ৮ জন।