বাগমারা (রাজশাহী)প্রতিনিধিঃ আগামী ১৬ জানুয়ারী পৌর নির্বাচনের তারিখ নির্ধারনের পর পরই জমে উঠেছে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার ভবানীগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচনী প্রচারোনা। বড় দুই দল বাংলাদেশ আ’লীগ ও জাতীয়তাবাদী বিএনপি’র একক প্রার্থী ছাড়াও স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ গ্রহন করছেন আরো দুইজন।
উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, দলীয় একক মনোনয়ন পেয়েছে ক্ষমতাসীন আ’লীগের মেয়র প্রার্থী বর্তমান মেয়র ও উপজেলা আ’লীগের সহসভাপতি আব্দুল মালেক মন্ডল (নৌকা), জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র সাবেক মেয়র ও পৌর বিএনপি’র সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক প্রাং (ধানের শীষ), স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ গ্রহন করেছেন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, তৎকালীন সময়ের উত্তরবঙ্গের এমএনএ শাহ মোহাম্মদ জাফরুল্লাহর ভাতিজা, ভবানীগঞ্জ পৌর আ’লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশীদ মামুন ( জগ) ও আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী কামাল হোসেন (নারিকেল গাছ) প্রতিক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সমানে সমানে প্রচারোন চালিয়ে যাচ্ছেন নির্বাচনে অংশ গ্রহনকারী মেয়র প্রার্থী ও তাদের সমর্থকেরা। দুই একটি বিছিন্ন ঘটনা ঘটলেও ছাড় দিতে নারাজ একে অপরকে।
প্রচার প্রচারনায় ব্যাপক এগিয়ে রয়েছেন, ক্ষমতাসীন দল আ’লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী আব্দুল মালেক মন্ডল। তিনি দলবল নিয়ে রাতের ঘুম হারাম করে পৌরসভার আনাচে কাচানে ভোটাদের বাড়ি বাড়ি ভোট প্রার্থনা করছেন। তিনি সুষ্ঠ নির্বাচনের আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। পৌরসভার বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ডের কারনে দলমত নির্বিশেষে সকলেই তাকে পৌরসভার উন্নয়নের ধারা বজায় রাখতে আবারো ভোট দিয়ে মেয়র বির্নাচিত করবেন বলে তিনি আশা করেন।
বিএনপি’র একক প্রার্থী আব্দুর রাজ্জাক হলেও দলীয় কোন্দলের কারনে দলের স্থানীয় পর্যায়ের নেতার্মীরা নির্বাচনী প্রচারোনায় তেমন লক্ষ করা হয়নি। দলের কোন্দল মিটানোর জন্য কেন্দ্রের নির্দেশে জেলা পর্যায়ের শীষ এক নেতা প্রায় বাগমারাতেই পড়ে আছেন। দলের কোন্দল মিটলে বিএনপি’র প্রার্থী আব্দুর রাজ্জাক নির্বাচনে এগিয়ে যাতে পারবেন বলে মাঠ পর্যায়ের বিএনপি’র একাধিক সমর্থক জানিয়েছেন। তাবে আব্দুর রাজ্জাক দাবী করেছেন, তার নির্বাচনী প্রচারোন চালানোর সময় বিভিন্ন স্থানে তার দলীয় নেতাকর্মীদের উপর হামলা চালানো হচ্ছে। এছাড়াও অফিস ভাংচুর, পোষ্টার ছিড়াসহ নানা ধরনের অভিযোগ তুলছেন তিনি। সুষ্ঠ ভোট হলে তিনি আ’লীগ, স্বতন্ত্র সবাইকে পরাজিত করে মেয়র নির্বাচিত হবেন। সুষ্ঠ ভোট নিয়ে তিনি শংকার মধ্যে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
প্রচারোনায় পিছিয়ে নেই স্বতন্ত্র প্রার্থী মামুনুর রশীদ মামুন। তিনিও দলবল নিয়ে পৌরসভার সকল বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন। তিনি দাবী করে বলেন, দল আমাকে মনোয়ন দেননি। তৎকালীন সময়ে পাকিস্তান সরকারের এমএনএ থেকে পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধের সংগঠিত করে দেশের স্বাধীনতা অর্জনকারীর একমাত্র উত্তরসুরি যোগ্য ভাতিজা হিসেবে স্বতন্ত্র প্রার্থী থেকে নির্বাচন অংশ গ্রহন করেই আমি মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে আমার গ্রহন যোগ্যতার প্রমান করব। তিনিও সুষ্ঠ নির্বাচন নিয়ে সংকিত রয়েছেন। সুষ্ঠ নির্বাচন হলে তিনি বড় দুই দলের মনোনীত প্রার্থীদের পরাজিত করে বিজীয় হবেন বলে তিনি জানিয়েছেন।
অপর দিকে ব্যতিক্রমী প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী কামাল হোসেন। তিনিও সুষ্ঠ ভোটের শংকা প্রকাশ করেছেন। অন্যান্য প্রার্থীরা রাতের ঘুম হারাম করে নির্বাচনী প্রচারনা চালানেও কামাল হোসেন দিনের বেলায় কৃষকদের মাঠে, ঘাটে, মসজিদসহ বিভিন্ন স্থানে দেখা ভোট প্রার্থনার মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি নির্বাচিত হলে ভবানীগঞ্জ পৌরসভায় ব্যাপক উন্নয়ন করবেন বলে ভোটারদের জানিয়ে দিচ্ছেন। কামাল হোসেন তরুন বলে অনেকেই তার দিকে ঝুঁকি নিচ্ছেন। তিনি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নৈশ প্রহরীর চাকরী ছেড়ে দিয়ে নির্বাচনে অংশ গ্রহন করেছেন। সুষ্ঠ ভোট হলে জনগনের ভোটেই তিনি মেয়র নির্বাচিত হবেন বলে জানিয়েছেন। আসন্ন নির্বাচনে ভবানীগঞ্জ পৌরসভায় ১৪ হাজার ৪০৫ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন বলে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার দপ্তর সূত্রে জানা গেছে।