এক যুগ ধরে ভোট ডাকাতির উৎসব করছে আ’লীগ: রিজভী

আওয়ামী লীগ গত এক যুগ জোর করে ক্ষমতায় থেকে প্রতিটি নির্বাচনে ভোট ডাকাতির উৎসব করে চলেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

তার অভিযোগ, কেবল জাতীয় নির্বাচন নয়, স্থানীয় প্রশাসনের নির্বাচন থেকে শুরু করে পেশাজীবী সংগঠনের ভোটেও ক্ষমতাসীনরা ভোটারবিহীন নির্বাচনের ভাইরাস সংক্রমিত করেছে।

মঙ্গলবার দুপুরে দলের নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেন, এখন ভোট মানে প্রহসন। সরকার বিরোধী দলগুলোর জন্য গ্রেপ্তার, মামলা, হামলা ও সন্ত্রাসের হিম আতংক। নির্বাচন মানে মুজিব কোটধারীদের নৌকা প্রতীক লাভের আর্থিক প্রতিযোগিতা। এখন জনগণ জানে, যে কোনো নির্বাচনের আগে নৌকা প্রতীক টেন্ডারে তোলা হচ্ছে। যে প্রার্থী বেশি দামে কিনতে পারে তার ভাগ্যে শিকে ছেঁড়ে। নৌকা প্রতীক পাওয়া মানে নির্বাচিত হওয়া। এভাবে আওয়ামী লীগ এখন ভোট ‘ডাকাতলীগে’ পরিণত হয়ে বাংলাদেশের অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন ব্যবস্থাকে জাদুঘরে পাঠিয়ে দিয়েছে।

রিজভী বলেন, মধ্যরাতে ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতায় থাকতে হচ্ছে আওয়ামী লীগকে। এখন জনরোষের ভয়ে দিনেরবেলায় ভোট ডাকাতি করতেও ভয় পাচ্ছে। ধিক্কার জানাই এই আওয়ামী লীগকে।

‘আওয়ামী লীগের কাছে নির্বাচন, গণতন্ত্র, মানবাধিকার, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব- কিছুরই মূল্য নেই। তাদের কাছে জবরদস্তি করে ক্ষমতায় থেকে দুর্নীতি ও লুটপাট করে সব চেটেপুটে খাওয়াটাই মুখ্য।’

বিএনপির এ নেতা আরও বলেন, একটি ষড়যন্ত্রের নির্বাচনে ক্ষমতায় আসার পর থেকে গণতন্ত্রের সব দরজা-জানালা বন্ধ করে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। নাগরিক স্বাধীনতার গলায় ফাঁসির দড়ি লটকিয়ে দিয়েছে। নিঃশব্দ বোবাকণ্ঠই হচ্ছে আওয়ামী বাকশালীদের কাছে প্রিয়।

তিনি বলেন, ক্ষমতাসীনরা উৎপীড়নের পথ বেছে নিয়ে যেভাবে গণতন্ত্রকে বিষাক্ত গ্যাস চেম্বারে ঢুকিয়েছেন, তার পরিণতি হবে এই সরকারের জন্য ভয়াবহ।

রিজভী আরও বলেন, আজ ৫ জানুয়ারি বাংলাদেশের নির্বাচনের ইতিহাসে এক কালিমালিপ্ত দিন। ৭ বছর আগে ২০১৪ সালের এই দিনে সারা দেশে ভোটার ও বিরোধী দলের প্রার্থীবিহীন একতরফা বিতর্কিত, প্রতারণামূলক, হাস্যকর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। দেশ-বিদেশে প্রত্যাখ্যাত, জনধিক্কৃত একদলীয় নির্বাচন করতে গিয়ে আওয়ামী লীগ আবারও সারা দুনিয়ায় নিজেদের হেয়প্রতিপন্ন করে। আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও দলীয় সন্ত্রাসীদের দিয়ে গণহত্যা, গুম, নির্যাতন চালিয়েও ন্যূনতম ভোট আদায় করতে পারেনি আওয়ামী লীগ। সারা দেশে নির্বাচন কেন্দ্রগুলো ছিল একদম ফাঁকা।

পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আজ সারা দেশে বিএনপি কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে। পাশাপাশি দলের নেতা-কর্মীরা কালো ব্যাজ ধারণ করেছেন।

রিজভী আরও বলেন, ৩০০ আসনের সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিজেরা নিয়েছিল ২৯৩ আসন। মাত্র ৭টি আসন বিরোধী দলকে দেয়া হয়। ’৭৩ সালের নির্বাচনে জাসদ ২৩৭টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল। জাসদকে দেয়া হয়েছিল মাত্র ১টি আসন।

‘দুর্নীতি, সন্ত্রাস, গণতন্ত্র হত্যা, ভোটাধিকার হরণ আওয়ামী লীগের ইতিহাসে নতুন নয়। দেশের ইতিহাসে দেখা যায়, আওয়ামী লীগ কখনোই সুষ্ঠু নির্বাচনে বিশ্বাস করে না। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনী সংস্কৃতি আওয়ামী লীগ কখনোই পাত্তা দেয় না।’

Leave A Reply

Your email address will not be published.

Title