আবু রায়হান, জয়পুরহাটঃ জয়পুরহাট জেলার কালাই উপজেলাতে নবান্ন উৎসব উপলক্ষে জমজমাট ভাবে শুরু হয়েছে একদিনের মাছের মেলা।এ উপজেলাতে মূলত প্রতি বছর জামাইদের নিয়ে মাছের মেলা হলেও স্থানীয়ভাবে সবাই এটাকে বলে মাছের মেলা।
জেলার কালাই উপজেলার পাঁচশিরা বাজারে এক দিনের ঐতিহ্যবাহী মাছের মেলাকে ঘিরে এখানে দিনব্যাপী চলে বিভিন্ন সাইজের হরেক রকমের মাছ কেনা-বেচার উৎসব। এই দিনটির জন্য পুরো বছর অপেক্ষায় থাকেন কালাই উপজেলাবাসি। পঞ্জিকা অনুসারে মঙ্গলবার পহেলা অগ্রহায়ণ হওয়ায় উপজেলার পাঁচশিরা বাজারে বসে বিভিন্ন জাতের মাছের মেলা।
অগ্রহায়ণ মাসে কিছুটা ঠান্ডা হলেও মেলা জুড়ে ছিল ক্রেতা বিক্রেতা আর কৌতুহলী মানুষের শত ঢল। প্রায় একশত বছর পূর্ব থেকে চলে আসা মেলায় নদী, দীঘি ও পুকুরে স্বাভাবিক ভাবে বেড়ে উঠা দেশীয় প্রজাতির টাটকা মাছ কিনতে ক্রেতারা ও পাইকাররা ভিড় জমায়। এই অগ্রহায়ণ মাসে মাঠ থেকে নতুন ফসল কৃষকদের ঘরে উঠলেই নবান্ন উৎসবের আয়োজন করেন উপজেলার সকল কৃষকেরা এবং এই উৎসব পালন করতে আসেন তাদের জামায়-মেয়ে ও বিয়াই-বিয়ানসহ আত্মীয়-স্বজনরা।
এ সময়ে অত্র এলাকার গ্রামীন জনপদের প্রত্যেক কৃষকদের ঘরে ঘরে শুরু হয় নতুন চালের নবান্ন এবং চলে পিঠা-পুলি,পায়েস, ক্ষীর, খই ও মুড়ি। কৃষকদের ঘরে হয় যেন এক মিলন মেলা। স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ীরা আগের দিন থেকেই পাঁচশিরা বাজারে তাদের আড়ৎ ঘরে জেলা-উপজেলার বিভিন্ন দীঘি, পুকুর, নদী থেকে নানান জাতের বড় বড় মাছ সংগ্রহ করেন।
মাছের মেলা উপলক্ষে এ দিনে এলাকার বিভিন্ন শ্রেনীর পেশাজীবি মানুষেরা উচ্চ মুল্যে ঐসব মাছগুলো ক্রয় করেন। এই বছরে মাছের মেলাতে বোয়াল, রুই, মৃগেল, কাতলা, চিতল, সিলভার কার্প, পাঙ্গাস, ব্রিগেট, বাঘাআইরসহ ৫ কেজি থেকে ১৪কেজি ওজনের মাছের সমাগম হয়েছে।
মাছ ব্যবসায়ী মো.সাইফুল ও আব্দুল লতিফ বলেন, এই মাছের মেলাতে জন্য বিভিন্ন পুকুর, দীঘি ও নদী থেকে নানান জাতের বড় বড় মাছ সংগ্রহ করা হয়। কাতলা, রুই, মৃগেল ৭শ থেকে ৮শ টাকা কেজিতে এবং বাঘাআইর, বোয়াল ও চিতল মাছ হাজার থেকে ১২শ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও মাঝারি আকারের মাছ ৪৫০ টাকা থেকে ৫শ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। এছাড়া ২৫০ টাকা দরে বিগহেড ও সিলভার কার্প বিক্রি হচ্ছে।
মেলায় মাছ কিনতে আসা ক্রেতারা জানান, অন্য বছরের চাইতে এবার মাছের দাম একটু বেশী। প্রতিটি দোকানে সাজানো হয়েছিল বোয়াল, রুই, মৃগেল, কাতলা, চিতল, সিলভার কার্প, পাঙ্গাস, ব্রিগেট,বাঘাআইরসহ নানা ধরনের মাছ। এবারের মেলায় সর্বোচ্চ ১৪ কেজি ওজনের মাছ বিক্রি হয়েছে।