হবিগঞ্জ প্রতিনিধিঃ আজ ১৮ সেপ্টেম্বর, হবিগঞ্জ জেলার লাখাই উপজেলার মুড়াকরি ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামের গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর স্থানীয় রাজাকার সাবেক আওয়ামীলীগের উপজেলা সভাপতি লিয়াকত আলী তার দোসরদের সহযোগিতায় পাকহানাদার বাহিনী ভোর বেলায় হঠাৎ আক্রমণ চালায়। এ সময় গ্রামের শত-শত নারী-পুরুষ স্থানীয় একটি পুকুরের পানিতে ডুব দিয়ে আত্মরক্ষার চেষ্টা করেন। শত-শত নারী-পুরুষ আত্মরক্ষা করতে পারলেও দুই শতাধিক গ্রামবাসীকে এক লাইনে দাঁড় করিয়ে ব্রাশফায়ার করে ১২৭ জনকে হত্যা করা হয়।
প্রতি বছর ১৮ সেপ্টেম্বর আসলেই যুদ্ধাহত শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তানরা স্বউদ্যোগে নির্মিত বৈদ্যভূমিতে ফুলদিয়ে দিনটি পালন করে থাকেন। তবে ১৮ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ বৈধ্যভূমির কাজ নিজেরাই সম্পন্ন করেছে । স্থানীয় একটি হাইস্কুলের পাশে নিজেদের অর্থায়নেই ১২৭ জনের মধ্যে পরিচয় পাওয়া ৪৫ জনের নামে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করেছেন। স্বাধীনতার ৪৯ বছর পেরিয়ে গেলেও নিহত এই ৪৫ জনের নাম শহীদদের তালিকায় স্থান পায়নি।
একাত্তরের ভয়াবহ স্মৃতির এ দিনটি প্রতি বছর নিরবেই কেটে যায়। প্রশাসন কিংবা মুক্তিযোদ্ধাদের কোন সংগঠনের পক্ষ থেকে বিশেষ কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয় না। ওই ঘটনায় শহীদ কিংবা যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের ঠাঁই হয়নি কোনও তালিকায়। নিহতদের স্মরণে ৭ বছরেও বৈধ্যভূমির নির্মান কাজ সম্পন্ন হয়নি।
স্থানীয় রাজকার সাবেক উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি লিয়াকত আলীর যুদ্ধপরাধ ট্রাইবুনালে ফাঁসির রায় হয়েছে। লিয়াকত আমেরিকা পালিয়ে গেলেও নিরব নিবৃতে কাঁদছে কৃষ্ণপুর গ্রাম।
১২৭ জন লোক ও শতাধিক আহত হওয়ার ঘটনার আজ অবদি তারা পায়নি শহিদদের তালিকায় নাম। পায়নি একটি বৈদ্যভূমি নির্মানের কোন সাহায্য বললেন স্থানীয় সাংসদ।