বরগুনা প্রতিনিধিঃ মরনঘাতি করোনার প্রভাবে থমকে গেছে বরগুনার আমতলী সাব-রেজিষ্টার অফিস পাড়া। কিছুদিন আগেও যেখানে ছিল লোকের প্রচন্ড ভিড়। উচ্চ শব্দ ছাড়া যেখানে কথা বলাই ছিল দূরূহ ব্যাপার। এখন সেখানে নেই কোন কোলাহল। দীর্ঘদিন ধরে জমি বেচাকেনা ও রেজিষ্ট্রি বন্ধ থাকায় দলিল লেখকদের আয় রোজগারও বন্ধ হয়ে গেছে। এ কারনে উপজেলা ৯৫ জন দলিল লেখক ও তাদের সহকারীরা পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন।
দলিল লেখক সূত্রে জানাগেছে, আমতলী সাব-রেজিষ্ট্রার অফিসে ৯৫ জন দলিল লেখক ও তাদের সহকারীরা কাজ করেন। মহামারি করোনাভাইরাসের কারনে দীর্ঘদিন অফিস বন্ধ থাকায় তাদের প্রতিদিনের আয় রোজগার বন্ধ রয়েছে। এখানে যারা কাজ করেন তাদের দিন ভালই চলছিল। দলিল লেখকরা তাদের অসহায়ত্বের কথা কারো কাছে বলতে পারছেন না। এখন সংসার চালাতেই তারা হিমসিম খাচ্ছেন।
অপরদিকে অফিস ও বিভিন্ন দলিল লেখকদের চেম্বারে যেসব চেয়ার টেবিল ও বেঞ্চে বসে তারা কাজ করতেন সেই সব স্থানে এখন ময়লা পড়ে রয়েছে। এ বন্ধের সুযোগে সাবরেজিষ্ট্রি অফিস ভবনেও এখন চলছে চুনকাম ও রং করার কাজ।
Related Posts
আমতলী সাব-রেজিষ্টার অফিসের দলিল লেখক আলী আজগর বলেন, আমাদের রোজগারের একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে দলিল লেখা। করোনার কারনে অফিস বন্ধ থাকায় আমিসহ আমার মত এ উপজেলার ৯৫ জন দলিল লেখক ও সমপরিমাণ সহকারীর রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে।
অপর দলিল লেখক আব্দুল খালেক হাওলাদার বলেন, করোনার কারণে অফিস-আদালত বন্ধ থাকায় দলিল লিখতে না পাড়ায় আমাদের আয় রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে। সামনের দিনগুলোতে কিভাবে সংসারের ভরন পোষন করবো সেটা ভেবে পাচ্ছিনা। তাছাড়া হাতে গোনা ৪-৫ জন দলিল লেখক ছাড়া অন্যদের অবস্থাও তেমন একটা ভালো না। সামনে ঈদ এই সময়ে আয় রোজগার বন্ধ, কিভাবে আমাদের সংসার চলবে? তিনি আরো বলেন,আমাদের অসহায় দলিল লেখক ও সহকারীদের দিকে সরকার যাতে সু-দৃষ্টি দেন সেই দাবী জানাচ্ছি।
দলিল লেখক সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ও আমতলীর দলিল লেখক মোঃ আলমগীর কবির জানান, আমরা আসলে অন্য কোন কাজ করতে পারিনা। সামাজিক দিক দিয়ে চিন্তা করলে আমাদের পক্ষে কারো কাছে হাত পাতাও সম্ভব না। তাই অসহায় দলিল লেখকদের দিকে সরকারের পক্ষ থেকে একটু দৃষ্টি দিলে লেখক ও সহকারীরা খেয়ে বেঁচে থাকতে পারবে।