মামুনুর রশিদ : সারাদেশে কোভিড-১৯ বা করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দিন দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে। করোনা প্রতিরোধে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য বিভিন্নভাবে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে জেলা ও উপজেলার প্রশাসন। কিন্তু কিছুতেই সর্বসাধারনের মাঝে বৃদ্ধি পাচ্ছে না গণসচেতনতা বোধ। একারনে জেলা প্রশাসন ফরিদপুর গতকাল বুধবার প্রকাশ করেছে গণবিজ্ঞপ্তি। অতপর সাধারণ মানুষের মাঝে জনসচেতনা ফিরিয়ে আনার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে এবার জেলা পুলিশ বাহিনীর সদস্যদরা জেলা জুরে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। জেলার প্রধান প্রধান সড়ক গুলোতে অন্য জেলার সাথে অপ্রয়োজনীয় আসা যাওয়া ক্ষেত্রে সংযোগ বিছিন্ন করতে ১৭টি চেক পোষ্ট বসিয়ে পুলিশ প্রশাসন।
সূত্র মতে, পুলিশের কঠোরতায় কার্যত বন্ধ হয়েগেছে মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কের সকল ধরনের যানবাহন ও ব্যক্তি পর্যায়ে আসা যাওয়া। সাধারন মানুষের দৃষ্টিতে এটি হচ্ছে অলিখিত এক লকডাউন। শহরের প্রবেশের প্রধান প্রধান সড়কগুলো মুখে ৩০টি স্থানে সকাল থেকে অবস্থান নেয় পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত জেলা সদর ও উপজেলাগুলোতে টহল জোরদার করেছে জেলা পুলিশ। সচেতন ফরিদপুরবাসীর সর্বময় মহল থেকে পুলিশের এই উদ্যেগকে জানিয়েছেন অভিনন্দন।
জানাযায়, কোভিড-১৯ সংক্রামণ রোধে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক এর নির্দেশক্রমে সকাল ৭টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত অত্যাকবশীয় নিত্য প্রয়োজনীয় দোকান খোলা থাকবে। অন্য সকল দোকান যথারীতি বন্ধ থাকিবে। তবে চিকিৎসা কেন্দ্র এবং ওষুধের দোকান খোলা থাকবে। গণ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এক জেলার যানবাহন প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া অন্য জেলায় যাবে না এবং অন্য জেলার যানবাহনও প্রবেশ করতে পারবে না। এর পর থেকে জেলা পুলিশ চলে যায় কঠোর অবস্থানে।
এ বিষয়ে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার আলিমুজ্জামান এশিয়ান টাইমসকে বলেন, জনগণকে আমরা বারবার বুঝাচ্ছি যে দয়াকরে আপনার পরিবারসহ সাধারণ মানুষ যাতে ঝুঁকিতে না পরেন এজন্য আপনার কারনে অকারণে ঘর থেকে যত্রতত্র বের হবেন না। সকলকে বাড়িতে থাকার আহ্বান জানানো হয়। কারো একান্ত প্রয়োজন হলে তিনি হেটে গন্তব্যে যাবেন। কিন্ত সেই দিকে অনেকেই ভ্রূক্ষেপ করছিল না। জেলা প্রশাসনের গণ বিজ্ঞপ্তির আলোকে বাধ্য হয়ে পুলিশ কঠোর অবস্থান নিয়েছে জেলা জুরে। জেলার প্রধান প্রধান সড়ক গুলোতে অন্য জেলার সাথে সংযোগ বিছিন্ন করতে ১৭টি চেক পোষ্ট বসিয়ে অপ্রয়োজনীয় সকল প্রকার আসা যাওয়া বন্ধ করা ও গণ পরিবহন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত জেলা প্রশাসনের গণ বিজ্ঞপ্তির পর থেকে ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাশেদুল ইসলামের নেতৃত্বে সকাল থেকে রাত অবধি শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে দিনরাত কাজ করে চলছেন পুলিশ সদস্যরা। শহরের সড়কদিয়ে যারা অযাচিত চলাফেরা করছে তাদের জিজ্ঞাসাবাদসহ নানা প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে। এমনকি অনেক যানবাহনকে ট্রাফিক আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাশেদুল ইসলাম বলেন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে শহরের পুলিশের ৩০টি টিম সক্রিয় ভাবে সড়ক গুলোতে অবস্থান নিয়েছে। কোন ভাবেই একাধিক মানুষ অযাচিত চলাফেরা করতে না পারে সে বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি রেখে কাজ করছি। তিনি বলেন জেলা পুলিশ সুপারের মহোদয়ের নির্দেশে দিনের সাথে সমান তালে রাতেও ডিউটি পালন করে চলছি। যাতে কোন ভাবে এই মহামারি কোভিড-১৯ বা করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বিস্তার না করতে পারে এ জেলায়।