প্রগতি গাড়ী বানাবে, নিজস্ব ব্রান্ড থাকবে; সে চিন্তা ভাবনা থেকেই প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড সৃষ্টি করা হয়ঃ শিল্প মন্ত্রী
নিজস প্রতিবেদক: শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন এমপি বলেছেন,
মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তি সময়ে যুদ্ধবিধ্বস্থ দেশে প্রগতি বাস-ট্রাকের মাধ্যমে পরিবহন ক্ষেত্রের যাত্রা শুরু হয়। বিট্রিশদের থেকে চেসিস নিয়ে এসে ট্রাক বানাত প্রগতি। বঙ্গবন্ধু সরকারের সময় সিডান কার বানানোর চেষ্টা শুরু হয়। সে প্রগতি থেকে একটি সিডান কার তৈরি করে বঙ্গবন্ধুকে দেয়া হয়েছিল। প্রগতি রাষ্ট্রায়ত্ব প্রতিষ্ঠান হিসেবে যে জায়গায় পৌঁছানোর কথা ছিল, সে জায়গায় আমরা যেতে পারিনি। প্রগতি বিদেশ থেকে যন্ত্রাংশ আমদানী করে এখানে এ্যাস্মেবিলিং করি। দেশে আজ অনেক উন্নয়ন হচ্ছে। আজকে সময় এসেছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার যে অঙ্গিকার আমরা করেছি; সে লক্ষ্যে কাজ করার। বিশ্বায়নের যুগে প্রতিযোগিতা করে আমাদের টিকে থাকতে হবে। মানসম্মত ও যুগোপযোগী পণ্য উৎপাদন করতে হবে। শুধুমাত্র সিডান কার না, সাশ্রয়ী মুল্যের গাড়ী ও মোটর সাইকেল উৎপাদন করতে হবে। তিনি আরো বলেন অচিরেই কোরিয়ার কারিগরি সহায়তায় প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডকে আধুনীকায়ন করে প্রগতি গাড়ী তৈরি করবে। জ্বালানী সাশ্রয়ই পরিবেশ বান্ধব ইলেকট্রিক ভেহিকল (ইভি) তৈরিরও পরিকল্পনা আছে।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন
বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশন (বিএসইসি)- এর প্রতিষ্ঠান
প্রগতি ইন্ডাষ্ট্রিজ লিমিটেড-এর আধুনিক শো-রুম ও সেলস্ সেন্টারের উদ্ভোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।
আজ রাজধানীর তেজগাঁও এ প্রগতি ইন্ডাষ্ট্রিজ লিমিটেড-এর ঢাকা অফিস প্রাঙ্গণে শো-রুম ও সেলস্ সেন্টারের উদ্ভোধন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্প
মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব
জাকিয়া সুলতানা। এছাড়া
সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের উধ্বর্তন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং
প্রগতি ইন্ডাষ্ট্রিজ লিমিটেডের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ আবুল কালাম আজাদ উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনের চেয়ারম্যান মোঃ মনিরুজ্জামান এতে সভাপতিত্ব করেন।
উল্লেখ্য বর্তমান সরকার দেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। দেশের এ অগ্রযাত্রাকে আরো বেগমান করতে কাজ করে যাচ্ছে বিএসইসি ও এর আওতাধীন সকল শিল্প প্রতিষ্ঠান। প্রগতি ইন্ডাষ্ট্রিজ লিমিটেডকে আধুনীকরণ করে গড়ে তোলা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে গ্রাহককের সেবা সহজীকরণ ও মানোন্নয়ন করার জন্য আধুনিক শো-রুম ও সেলস সেন্টারের স্থাপন করা হয়েছে। এর সাথে রয়েছে আধুনিক ওয়্যারহাউজ। গ্রাহকরা এখন এ শো-রুম হতে সহজেই গাড়ী অবলোকন ও ক্রয় করতে পারবেন। নিতে পারবেন বিক্রয় পরবর্তী সার্ভিস। অল্প সময়ের মধ্যেই গ্রাহকরা কার্যাদেশের মাধ্যমে গাড়ী সরাসরি গ্রহণ করতে পারবেন। খুব শীঘ্রই চালু করা হবে প্রগতি ত্রি-এস সেন্টার। সকল স্তরের গ্রাহরে চাহিদা বিবেচনায় প্রগতি ইন্ডাষ্ট্রিজ লিমিটেড সিডান কার সরবরাহেরও পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
১৯৬৬ সালে ইংল্যান্ডের জেনারেল মোটরস-এর কারিগরী সহযোগিতায় চট্টগ্রামের বাড়বকুন্ডে গাড়ী উৎপাদনের নিমিত্ত ব্যক্তি মালিকানায় গান্ধারা ইন্ডাষ্ট্রিজ লিঃ প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৭২ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শিল্প প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ অধ্যাদেশের মাধ্যমে প্রগতি ইন্ডাষ্ট্রিজ লিমিটেডকে জাতীয়করণ করেন। যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশে পরিবহন সেক্টরের উন্নয়নে ইংল্যান্ডের বেডফোর্ড কোম্পানীর বাস ও ট্রাক সংযোজন করার মাধ্যমে প্রগতি যাত্রা শুরু করে। এরপর ইংল্যান্ড থেকে সুপিরিয়র বাস ও বেডফোর্ড ট্রাক আমদানী করে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের কাজ শুরু হয়। পরবর্তীতে জাপানের মিৎসুবিসি,নিশান ও ইসুজুসহ ভারত, চীন, কোরিয়া ইত্যাদি দেশ থেকে বিভিন্ন ব্রান্ডের গাড়ীর সিকেডি আমদানীপূর্বক সংযোজন করে ব্যাপকভাবে বাজারজাত শুরু হয়।
বর্তমানে জাপানের মিৎসুবিসি মোটরস করপোরেশনের পাজেরো স্পোর্ট (কিউএক্স) জীপ, মিৎসুবিসি এল-২০০ ডাবল কেবিন পিকআপ-এর সিকেডি আমদানী করে সংযোজন ও বাজারজাতকরণ অব্যাহত রয়েছে। তাছাড়া জাপান হতে মিৎসুবিসি ব্রান্ডের এএসএক্স জীপ (কমপ্লিট বিল্ট ইন) সিবিইউ অবস্থায় আমদানী করে বাজারজাত করা হয়। অনেক সময় ক্রেতা সাধারণের চাহিদা বিবেচনায় প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড সোর্সিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গাড়ী সরবারহ করে থাকে।