হার দিয়ে এশিয়া কাপ শুরু বাংলাদেশের

ক্রীড়া প্রতিবেদক: ব্যাটিংয়ে লড়তে পারলেন না কেউই। কেবল নাজমুল হোসেন শান্ত চেষ্টা করলেন একা।

দল পায়নি ভালো পুঁজি। শুরুতে উইকেট নিয়ে কিছুটা আশা জুগিয়েছিলেন বোলাররা। কিন্তু শেষ অবধি আর আটকে রাখা যায়নি শ্রীলঙ্কাকে। বড় স্বপ্ন নিয়ে এশিয়া কাপ খেলতে গিয়ে হতাশার হারে শুরু হয়েছে টুর্নামেন্ট।

বৃহস্পতিবার ক্যান্ডিতে বাংলাদেশকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে শ্রীলঙ্কা। শুরুতে ব্যাট করতে নেমে ১৬৪ রানে অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ। জবাব দিতে নেমে ৬৬ বল আগেই জয় পেয়ে যায় লঙ্কানরা।

ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতে ধাক্কা খেয়েছিল শ্রীলঙ্কা। ইনিংসের তৃতীয় ওভারের প্রথম বলে দুর্দান্ত এক ডেলেভারিতে দিমুথ করুণারত্নেকে বোল্ড করেন তাসকিন আহমেদ। পরের ওভারে পাথুম নিশাঙ্কাকে আউট করে লঙ্কানদের আরও চাপে ফেলেন শরিফুল ইসলাম।

তার অফ স্টাম্পের বাইরে দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া বল নিশাঙ্কার ব্যাটের কানায় লেগে চলে যায় উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিমের গ্লাভসে। ১৩ বলে ১৪ রান করে সাজঘরে ফেরত যান নিশাঙ্কা। সাকিবের হাত ধরে তৃতীয় উইকেটও চলে আসে দ্রুতই। ২১ বল খেলে ৫ রান করা কুশল মেন্ডিসকে বোল্ড করেন তিনি।

কিন্তু এরপরই হাল ধরেন চারিথ আশালাঙ্কা ও সাদিরা সামারাবিক্রমা। দুজন মিলে গড়েন ৭৮ রানের জুটি। ম্যাচ থেকেও ক্রমেই ছিটকে যায় বাংলাদেশ। ৭৭ বলে ৫৪ রান করা সামারাবিক্রমাকে মাহেদী আউট করেন। পরে ৭ বলে ২ রান করা ধনঞ্জয়া ডি সিলভাকে বোল্ড করেন তিনি।

তবে ততক্ষণে অনেকটা দেরি হয়ে গেছে। ৯২ বলে ৬২ রান করে আশালাঙ্কা অপরাজিত থেকে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন। ২১ বলে ১৪ রান আসে অধিনায়ক দাসুন শানাকার ব্যাট থেকে।

এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশের জন্য হতাশার শুরুটা হয় ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই। এ ম্যাচে অভিষেক হয় তানজিদ হাসান তামিমের। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী এই ক্রিকেটার কয়েকদিন আগে শ্রীলঙ্কায় হওয়া ইমার্জিং এশিয়া কাপে ভালো পারফর্ম করেছিলেন, তাকে নিয়ে আশাও তাই ছিল বেশি। কিন্তু তানজিদ নিজের আন্তর্জাতিক অভিষেকে ফেরেন ডাক মেরে।

মাহেশ থাকসেনার প্রথম বলে অস্বস্তি পড়েন। দ্বিতীয়টি ব্যাট-প্যাডের ফাঁকা জায়গা দিয়ে পায়ে লাগে বল। আম্পায়ার আউট দেন তাকে। আরেক উদ্বোধনী ব্যাটার নাঈম শেখ এ ম্যাচেই পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো দুই অঙ্কে নেন ব্যক্তিগত সংগ্রহ, কিন্তু বড় করতে পারেননি সেটি। ২৩ বলে ১৬ রান করে ডি সিলভার বলে আউট হন তিনি। এগিয়ে এসে খেলতে গেলে ডি সিলভার স্লো হওয়া বল ব্যাটে ঠিকঠাক মতো লাগেনি, ক্যাচ যায় পয়েন্টে দাঁড়ানো নিশাঙ্কার হাতে।

তিনে খেলতে নেমে দলকে পথ দেখাতে পারেননি অধিনায়ক সাকিব আল হাসানও। ১১ বলে ৫ রান করে পাথিরানার বাউন্সার কাট করতে গিয়ে উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ দেন তিনি। সাকিবের বিদায়ের পর দলের হাল ধরেন তাওহীদ হৃদয় ও শান্ত। এ দুজনের ব্যাটে বাংলাদেশও নতুন করে আশা খুঁজে পেয়েছিল।

যদিও জুটিতে শুরুতে যেভাবে রান আসছিল, পরে আসেনি সেটি। প্রথম ১৪ বলে ১০ রান করা হৃদয় যখন আউট হন তখন তার নামের পাশে ৪১ বলে ২০ রান। চাপে পড়ে যাওয়া এই ব্যাটার দাসুন শানাকার বলে এগিয়ে আসলে বল প্যাডে লাগে, শুরুতে আম্পায়ার আউট না দিলেও রিভিউ নিয়ে সফল হয় শ্রীলঙ্কা। ৮০ বলে শান্তর সঙ্গে তার ৫৯ রানের জুটি ভেঙে যায়।

পরের ব্যাটারদের তেমন সাহায্য না পেলেও দলকে একাই টেনে নেন শান্ত। এদিকে বাড়ছিল রান তোলার চাপও। মাঝখানে অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম ২২ বলে ১৩ রান করে আউট হন। এই ব্যাটার একবার উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিলেও আম্পায়ার আউট দেননি, ততক্ষণে রিভিউ শেষ হয়ে গেছে লঙ্কানদের। তার আউটও ছিল হতাশার। পাথিরানার ওয়াইড হবে এমন বলে আপারকাট করতে গিয়ে থার্ড ম্যানে দাঁড়ানো দিমুথ করুণারত্নের হাতে ক্যাচ দেন।

এ ম্যাচে বাংলাদেশ নেমেছিল আট ব্যাটার নিয়ে। সাতে খেলতে নামা মিরাজ ১১ বলে ৫ রান করে রান আউট হন। মিরাজ স্কয়ার লেগে বল পাঠালে রান নেওয়ার জন্য দৌড় শুরু করেন নন স্ট্রাইক প্রান্তে থাকা শান্ত। কিন্তু মিরাজ অল্প একটু বেরিয়ে আর নড়েননি। তার আগেই ক্রিজে পৌঁছানোয় আউট হননি শান্ত, মিরাজকে ফিরতে হয় সাজঘরে।

আটে নামা মাহেদীও ১৬ বলে ৬ রান করে এলবিডব্লিউ হন ওয়ালালগের বলে। নবম ব্যাটার হিসেবে শান্ত আউট হন ৭ চারে ১২২ বলে ৮৯ রান করে। মাহেশ থিকসেনার বলে বোল্ড হন এই ব্যাটার। এরপর বাংলাদেশের অলআউট হতেও খুব বেশি সময় লাগেনি।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

Title