ইসি গঠনে রাষ্ট্রপতির সংলাপ: ইসি গঠনে আইন প্রণয়নের দাবি ওয়ার্কার্স পার্টির

নিজস্ব প্রতিবেদক: নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদের সাথে সংলাপ শেষ করেছেন ওয়ার্কার্স পার্টি। মঙ্গলবার বিকালে রাশেদ খান মেননের নেতৃত্বে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সাথে সংলাপে বসে দলটি।

সংলাপে রাষ্ট্রপতির কাছে ইসি গঠনে আইন প্রণয়নের দাবি তুলে ধরেন প্রতিনিধি দল। সংবিধান অনুযায়ী ইসি গঠনে জরুরি ভিত্তিতে আইন প্রণয়ন সম্ভব বলে মনে করে তারা।

বঙ্গভবনে সংলাপ শেষে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, আমরা রাষ্ট্রপতিকে লিখিত প্রস্তাব দিয়েছি। রাষ্ট্রপতি আলোচনাকালে আমাদের জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন হওয়া উচিত। তিনি নিজেও আইন প্রণয়নের ব্যাপারে ইতিবাচক। ইসি গঠন বিষয়ে আইন করা সম্ভব। এটি জাতীয় দাবি, রাষ্ট্রপতি উদ্যোগ নিলেই এটি কার্যকর হয়।

ওয়ার্কার্স পার্টির পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপতিকে যে লিখিত প্রস্তাব দেয়া হয়েছে সেগুলো হলো:

১. নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। তাই এর প্রতি তদ্রুপ মান্যতা ও মর্যাদা থাকতে হবে যাতে করে নির্বাচন পরিচালনা, তত্ত্বাবধানে নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণমুক্ত স্বাধীন পরিবেশে কাজ করতে পারে।

২. সংবিধানের ১১৮ বিধি বাস্তবায়নার্থে আইনের বিধান অনুসারে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের জন্য একটি আইন তৈরি করতে হবে। জাতীয় সংসদের নতুন বছরের প্রথম অধিবেশনের শুরুতেই এই আইন উত্থাপন করে জরুরি ভিত্তিতে তা পাস করা যেতে পারে। এখানে উল্লেখ করতে চাই দেশের সকল রাজনৈতিক দলই এই আইন প্রণয়নের পক্ষে। নাগরিকবৃন্দের পক্ষ থেকেও একই দাবি উত্থাপিত হচ্ছে।

নির্বাচন কমিশন নিয়োগসংক্রান্ত সংবিধান বর্ণিত বিধি পরিপূরণে আপনি সরকারকে এই নির্দেশ দিতে পারেন। অন্যথায় প্রতিবারের মতো এবারও নির্বাচন কমিশন নিয়ে বিতর্ক জন্ম দেবে এবং এ ধরনের আস্থাহীনতার পরিবেশে নির্বাচন কমিশন যথাযোগ্য ভূমিকা পালন করতে পারবে না।

৩. এই আইন অনুযায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্য কমিশনারগণ নিয়োগের জন্য নিম্নোক্ত ব্যক্তিদের নিয়ে একটি সাংবিধানিক কাউন্সিল থাকবে। প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলের নেতা, স্পিকার, প্রধান বিচারপতি ও অ্যাটর্নি জেনারেলকে নিয়ে এই সাংবিধানিক কাউন্সিল গঠিত হবে। এই সাংবিধানিক কাউন্সিল রাষ্ট্রপতির নিকট প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগের জন্য নাম প্রস্তাব করবেন। রাষ্ট্রপতি তাদের পরামর্শমত প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও কমিশনারদের নিয়োগ করবেন।

৪. যদি আইন প্রণয়ন একান্তই সম্ভব না হয় তবে বিকল্প হিসেবে যে সার্চ কমিটি গঠন করার প্রস্তাব করা হচ্ছে সে ক্ষেত্রে সাংবিধানিক পদাধিকারীদের নিয়ে তা গঠন করা যেতে পারে। তারা প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ কমিশনার নিয়োগের জন্য প্রতি পদে চারজনের নাম প্রস্তাব করবে। সার্চ কমিটির দেয়া নামের তালিকা সংসদের কার্য উপদেষ্টা কমিটি বাছাই করে সেখান থেকে একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা রাষ্ট্রপতির কাছে পেশ করবে। রাষ্ট্রপতি ওই তালিকা থেকে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ কমিশনের সদস্যদের নিয়োগ দেবেন।

৫. নির্বাচন কমিশনের পাঁচ সদস্যের মধ্যে দুজন নারী সদস্য থাকবে।

৬. নির্বাচন কমিশনকে নির্বাচনী আইনসমূহের যথাযোগ্য প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।

ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননের নেতৃত্বে ৭ সদস্যের প্রতিনিধি দল বিকালে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি সংলাপে অংশ নেন। প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা ছিলেন পলিটব্যুরোর সদস্য কমরেড আনিসুর রহমান মল্লিক, কমরেড নজরুল ইসলাম হক্কানী, কমরেড কামরুল আহসান, কমরেড মাহমুদুল হাসান মানিক, কমরেড আলী আহমেদ এনামুল হক এমরান এবং কমরেড নুর আহমদ বকুল।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

Title