রাসেল হাওলাদার, বরগুনা প্রতিনিধি : উপকূলে আঘাত হানতে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় ইয়াস মোকাবিলায় এক কোটি ৩৩ লাখ টাকা বরাদ্দ রেখেছে বরগুনার ত্রাণ ও পুনর্বাসন অধিদপ্তর। এছাড়াও খাদ্য সহায়তা হিসেবে ৩৫৭ মেট্রিক টন চালও বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরগুনার ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. লুৎফর রহমান। তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস মোকাবিলায় জরুরি সহায়তার জন্য জেলায় এক কোটি ৩৩ লাখ টাকা ও খাদ্য সহায়তার জন্য ৩৫৭ মেট্রিক টন চাল মজুদ রাখা হয়েছে। এছাড়াাও ছয় লাখ টাকার শিশু খাদ্য ও ছয় লাখ টাকার গো খাদ্যও মজুদ আছে।
তিনি আরো বলেন, এই মু্হুর্তে আমাদের কোনো শুকনা খাবার মজুদ নেই। তাই নগদ টাকা থেকে আমরা শুকনা খাবার মজুদ শুরু করেছি। এছাড়াও ঘ‚র্ণিঝড়ে মানুষের নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য ৬৪০টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে।
ঘ‚র্ণিঝড় ইয়াস মোকাবিলায় জেলার সব দপ্তর প্রধানের সঙ্গে ভার্চ্যুল প্রস্তুতি সভা করেছে বরগুনা জেলা প্রশাসন। সভায় ঘ‚র্ণিঝড় প‚র্ববর্তী ও করণীয় নির্ধারণ করা হয।
বরগুনার সিভিল সার্জন ডা. মারিয়া হাসান বলেন, ঘ‚র্ণিঝড়ে হতাহত মানুষের জন্য জেলার সব স্বাস্থ্যকেন্দ্র ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও জেলার ছয়টি উপজেলায় ছয়টি মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে।
বরগুনার পানি উন্নয়ন বোডের নির্বাহী প্রকৌশলী কায়সার আলম জানান, ঘ‚র্ণিঝড়ের কারণে সৃষ্ট জলোচ্ছাসে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামতের জন্য একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। এছাড়াও ঝুঁকিপ‚র্ণ বাঁধ দ্রুত মেরামতের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) উপ পরিচালক কিশোর কুমার সরদার বলেন, বরগুনা সদর, আমতলী, তালতলী ও পাথরঘাটা উপজেলায় সিপিপির সাড়ে ছয় হাজার স্বেচ্ছাসেবী ইতোমধ্যেই কাছ শুরু করেছেন। তারা ঘূর্ণিঝড়ের পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সময়ে উদ্ধার অভিযানসহ সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।
এ বিষয়ে বরগুনা জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস মোকাবিলায় আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। আমাদের পর্যাপ্ত নগদ টাকা ও খাদ্যসামগ্রী মজুদ আছে। মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ চিহ্নিত করে তা দ্রুত মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে জেলাজুড়ে প্রচারণার কাজও শুরু হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, জেলার ঝুঁকিপূর্ণ সব মানুষকে আমরা আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যেতে চাই। তাই আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে যাতে সামাজিক দ‚রত্ব বজায় রাখা হয় এ জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট সব জনপ্রতিনিধিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে জেলায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াস’র ভয়াবহতা থেকে উপক‚লের মানুষের জানমাল রক্ষায় প্রস্তুতি শুরু করেছে প্রশাসন। এ লক্ষ্যে বরগুনা জেলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৩৫১টি সাইক্লোন শেল্টার এবং আরও ৭৫৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।