ভারতের নতুন নাগরিকত্ব আইনের সমালোচনা করেছে জাতিসংঘ। এই আইনকে সে দেশের সংখ্যালঘু মুসলমানদের জন্য বৈষম্যমূলক হিসেবে বর্ণনা করে সেটি পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর।
ওই আইন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক মুখপাত্র জেরেমি লরেন্স সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় এক ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘ভারতের নতুন নাগরিকত্ব আইনটি মৌলিক চরিত্রের দিক দিয়েই বৈষম্যমূলক এবং এ বিষয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। আমরা জানি যে এই আইনের বৈধতা ভারতের সর্বোচ্চ আদালতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে এবং আমাদের আশা মানবাধিকার সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক আইনে ভারতের যে দায়বদ্ধতা রয়েছে আদালত তা বিবেচনায় নিয়ে নাগরিকত্ব আইনটির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে।’
জেরেমি লরেন্স বলেন, ওই আইনে ছয়টি ধর্মের মানুষের মত মুসলমান শরণার্থীদের জন্য একই রকম সুরক্ষার কথা বলা হয়নি। আর এর মধ্য দিয়ে সংবিধানে বর্ণিত সবার জন্য সমতা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতিকে যথাযথভাবে মূল্যায়ন করা হয়নি।
এর মাত্র একদিন আগে এই আইনের তীব্র নিন্দা করে বিবৃতি দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। বৃহস্পতিবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে ভারতের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষায় মোদি সরকারকে সচেষ্ট হওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়।
এর আগে বিজেপি নেতা ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের উদ্যোগে গত ১০ ডিসেম্বর বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলটি ভারতীয় পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভায় পাস হয়। পরে গত বুধবার সেটি উচ্চকক্ষ রাজ্যসভাতেও পাস হয়। বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্ট কোবিন্দ ওই বিলে স্বাক্ষর করার পর সেটি আইনে পরিণত হয়েছে।
নতুন আইনে প্রতিবেশী তিন দেশ বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ভারতে আশ্রয় নেয়া অমুসলিম তথা হিন্দু, খ্রিস্টান, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ ও পার্সি সম্প্রদায়ের মানুষকে ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা রয়েছে। তবে ওইসব দেশ থেকে আগত মুসলিমরা ভারতের নাগরিক হতে পারবে না।
এদিকে ওই আইনের প্রতিবাদে গত মঙ্গলবার থেকে সহিংস বিক্ষোভ চলছে ভারতেরবিক্ষোভে অচল হয়ে পড়েছে আসাম, ত্রিপুরা ও মেঘালয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এসব রাজ্যের বিভিন্ন অংশে কারফিউ জারি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার আসামের গৌহাটিতে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে নিহত হয়েছে কমপক্ষে পাঁচজন। শুক্রবার সংঘাত ছড়িয়েছে রাজধানী দিল্লিতেও।