মামুনুর রশিদ :: ফরিদপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বর মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন এমপি বলেছেন, আজ থেকে আমার নির্বাচনী এলাকায় আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীদের মাঝে আর কোন ভেদাভেদ নেই। আমাদের রাজনৈতিক আদর্শ এক ও অভিন্ন। কারন বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনৈতিক শক্তি এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসীরা আজকে একই মঞ্চে উপস্থিত হতে পেরেছে বলে আমার চেয়ে বড় খুশী কেউ নয়!
রোববার বিকেলে ভাঙ্গা পৌরসভার চত্বরে মেয়র আবু রেজা মোঃ ফয়েজ মিয়ার যোগদান ও সংসদ সদস্যকে সংবর্ধনা উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান অতিথি এসময় বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বর কাজী জাফর উল্লাকে আহ্বান জানিয়ে আরও বলেন, আগামী দিনে ফরিদপুর-৪ আসনে আওয়ামীলীগের রাজনীতির উন্নয়ন করবেন আপনি (কাজী জাফর উল্লা) আর এলাকার উন্নয়নে কাজ করবো আপনার সন্তান সমতুল্য আমি নিক্সন চৌধুরী।
তিনি আরও বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা আপনাকে প্রেসিডিয়াম মেম্বর করেছে। আপনি আওয়ামীলীগের চেতনার একজন প্রবীন নেতা। ভাঙ্গায় আসুন আমাদের আশীর্বাদ করুন। দেখে যান আজকের পর থেকে ভাঙ্গা সদরপুর ও চরভদ্রাসন নির্বাচনী এলাকায় আওয়ামী লীগের কোন নেতাকর্মী এখন আর আওয়ামী রাজনীতির বাইরে নেই।
উল্লেখ্য ভাঙ্গা পৌরসভার মেয়র ও ভাঙ্গা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু রেজা মোঃ ফয়েজ ও তার পরিষদের কাউন্সিলরগণ ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সোবহান মুন্সি সাংসদ নিক্সন চৌধুরীর হাতে নৌকা প্রতীক সাদৃশ্যে নৌকা ও ফুলের তোরা দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগদান করেন।
নিক্সন চৌধুরীর আরও বলেন, ফরিদপুর-৪ আসনটি আওয়ামী লীগের ঘাটি হিসাবে যেমন পরিচিত ছিল আজও আওয়ামী লীগের ঘাটি হিসাবে রক্ষা করেছে জনগণ। শুধু নৌকার কাণ্ডারি হিসাবে যারা জনগণকে বুঝতে পারে নি জনগণ সেই নৌকার মাঝি পরিবর্তন করে উন্নয়ন ও মূল্যায়নের রাজনীতিকে তারা ফিরিয়ে এনেছে। একটি সময় আমার উপরে অনেকেই বিভিন্নভাবে নির্যাতন চালানো হয়েছিল। অনেকেই আজকে মঞ্চে উপস্থিত হয়েছেন। আমি কিন্ত আজ সবকিছু ভুলে গিয়েছি। আমি বিশ্বাস করি আওয়ামীলীগ পরিবারের রাজনৈতিক শক্তিকে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষে একসাথে কাজ করার কোন বিকল্প নেই। আপনি আসুন। আমাদের সাথে বসুন। আপনাকে আমি ও আমাদের নেতাকর্মীরা সর্বচ্চ সম্মান দিবে। কারন প্রধানমন্ত্রী আমাকে সংগঠন চালানোর জন্য একটি পদে অধিষ্ঠিত করেছেন সেই একই পদে আপনিও রাজনীতি করছেন। এবার থেকে আর কোন ভুল বোঝাবুঝি নয় মন খুলে আসুন আমরা চাচা-ভাতিজা ঐক্যবদ্ধ হয়ে মানুষের জন্য কাজ করি।
সাংসদ সদস্যে এসময় উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে বলেন, ভাঙ্গায় আওয়ামীলীগের রাজনীতিকে দুটি ভাগে বিভক্ত করে রাখা হয়েছিল। পৌর মেয়র মহোদয়ের যোগদানের মাধ্যমে ফের একই প্লাটফর্মে আওয়ামীলীগ দাঁড়িয়েছে। আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের সকল নেতা-কর্মী আজ এক মঞ্চে উপস্থিত হয়েছে। আজ ভাঙ্গার জনগণ উচ্ছাসিত।
পৌর মেয়র আবু রেজা মোঃ ফয়েজ বলেন, আমাদের নির্বাচিত সংসদ সদস্য বঙ্গবন্ধুর দৈহিত্রকে আজ আমরা কাছে পেয়েছি। তিনি ফরিদপুর-৪ আসনে প্রকৃতপক্ষে ব্যপকভাবে উন্নয়ন ও কর্মীদের মূল্যায়ন করেছেন বলে প্রধানমন্ত্রী আজ তাকে মূল্যায়ন করেছে। আগামীদিনে আমরা তাঁর পাশে থেকে ভাঙ্গা পৌর সভার উন্নয়ন করতে চাই।
যোগদান অনুষ্ঠানস্থল ভাঙ্গা পৌর ভরন চত্বরের দুপর হতেই শত শত নেতা-কর্মী জড়ো হতে থাকে। বিকালে সংবর্ধনাস্থলে নিক্সন চৌধুরী সভামঞ্চে আসন গ্রহণ করার পর থেকে বিভিন্ন ওয়ার্ডের সম্ভাব্য কমিশনার প্রাথীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে আসে। এসময় সেখানে জনসমুদ্রে পরিণত হয়। পৌর ভবন চত্বর ছাড়িয়ে তা হাই-ওয়ে এক্সপ্রেস পর্যন্ত জনতা সংসদ সদস্যের নামে শ্লোগান দিতে থাকে। এসময় উপস্থিত জনতাকে হাত নারিয়ে উষ্ণ শুভেচ্ছা জানান মঞ্চ থেকে সাংসদ ও পৌর মেয়র।
এসময় আরও বক্তব্যে রাখেন,ভাঙ্গা উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি কাজী হেদায়েত উল্লা সাক্লাইন, সাধারণ সম্পাদক ফাইজুর রহমান, উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম হাবিবুর রহমান, সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী যুবলীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন, পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদউল হক মিরু মুন্সী,আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সোবাহান মুন্সী, পৌর কাউন্সিলর ওমর ফারুক হবি প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, সদরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শফি কাজী, ভাঙ্গা উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি কাজী হেদায়েতউল্লাহ সাকলাইন ও সাধারণ সম্পাদক ফাইজুর রহমান, জেলা পরিষদের প্যানেল মেয়র শাহিনুর রহমান শাহিন,কাউন্সিলর বজলু মাতুব্বর, সাবেক কাউন্সিলর আবুল কালাম মাতুব্বর, কাউন্সিলর ওমর খরাতি, ভাঙ্গা বাজার বনিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ আবু জাফর মুন্সি। এছাড়াও বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগণ, আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।