সিনেমা হলগুলোর জন্য এক হাজার কোটি টাকার পুনঃ অর্থায়ন তহবিল গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই তহবিল থেকে সিনেমা হল সংস্কার, আধুনিকায়ন ও নতুন হল নির্মাণে পাঁচ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ নেয়া যাবে।
বিভাগীয় শহরের জন্য এই ঋণের সুদহার ৫ শতাংশ ও এর বাইরের এলাকার জন্য সাড়ে ৪ শতাংশ। আর এই ঋণ শোধ করা যাবে আট বছর পর্যন্ত। প্রথম বছরে ঋণ পরিশোধে ছাড় মিলবে (গ্রেস পিরিয়ড)।
বাংলাদেশ ব্যাংক আজ এই পুনঃ অর্থায়ন তহবিল গঠন নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এই তহবিল থেকে ঋণ পেতে আগ্রহী ব্যাংকগুলোকে আবেদনের আহ্বান জানিয়েছে। সরকারের উচ্চপর্যায়ের নির্দেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই তহবিল গঠন করেছে।
তহবিল থেকে ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে দেড় শতাংশ হারে পুনঃ অর্থায়ন সুবিধা নিতে পারবে। আর বিভাগীয় শহরের জন্য সুদহার হবে ৫ শতাংশ ও অন্যান্য এলাকায় সাড়ে ৪ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের আবহমান সংস্কৃতি, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রাখার ক্ষেত্রে চলচ্চিত্রের অবদান অপরিসীম। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার, বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি, শিল্পী ও কলাকুশলীদের দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে চলচ্চিত্রশিল্পে নবজাগরণ সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১২ সালের ৩ এপ্রিল চলচ্চিত্রকে শিল্প হিসেবে ঘোষণা করেন। সুস্থ জাতি গঠনে নির্মল বিনোদনের ভূমিকা অনস্বীকার্য।
প্রজ্ঞাপনে আরো বলা হয়েছে, বিনোদন জগতের সর্ববৃহৎ মাধ্যম চলচ্চিত্র এবং সিনেমা হলকে কেন্দ্র করেই মূল চলচ্চিত্রশিল্প বিকশিত হয়। নব্বইয়ের দশকে এ দেশে প্রায় ১ হাজার ৪০০টি সিনেমা হল ছিল। কিন্তু নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে এ সংখ্যা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে। দেশের সিনেমাপ্রেমী দর্শকদের সুস্থ ধারার বিনোদন উপহার দেওয়ার লক্ষ্যে বিদ্যমান প্রেক্ষাগৃহগুলো সংস্কার এবং আধুনিক মানের নতুন সিনেমা হল নির্মাণ করা প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে সিনেমা হলমালিকদের স্বল্প সুদে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ প্রদান করা হলে সিনেমা হলমালিকেরা নতুন নতুন সিনেমা হল নির্মাণের পাশাপাশি বিদ্যমান প্রেক্ষাগৃহগুলো সংস্কার ও আধুনিক যন্ত্রপাতি সংযোজন করতে সক্ষম হবেন। সার্বিক বিবেচনায়, সিনেমা হলমালিকদের ঋণ বিতরণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক এক হাজার কোটি টাকার পুনঃ অর্থায়ন তহবিল গঠন করেছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সিনেমা হল সংস্কার, আধুনিকায়ন ও মেশিনারি, যন্ত্রাংশ, প্রযুক্তি ক্রয় এবং নতুন সিনেমা হল নির্মাণের উদ্দেশ্যে এই তহবিল থেকে ঋণ মিলবে। বিভিন্ন শপিং কমপ্লেক্সে বিদ্যমান সিনেমা হলসহ নতুনভাবে নির্মিত সিনেমা হলগুলোও এই তহবিলের আওতায় ঋণ সুবিধা পাবে।
তবে চলতি মূলধন বাবদ কোনো রূপ ঋণ দেয়া হবে না। এ ছাড়া এ তহবিলের আওতায় গৃহীত ঋণ দিয়ে কোনোভাবেই অন্য কোনো ঋণের দায় শোধ করা যাবে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব তহবিল থেকে এই পুনঃ অর্থায়নের অর্থ দেবে। প্রথম ধাপে বিতরণ করা ৫০০ কোটি টাকা ঋণের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত হওয়ার পর দ্বিতীয় ধাপে ৫০০ কোটি টাকা বিতরণযোগ্য হবে।
এ তহবিল থেকে ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে দেড় শতাংশ হারে পুনঃ অর্থায়ন সুবিধা নিতে পারবে। আর বিভাগীয় শহরের জন্য সুদহার হবে ৫ শতাংশ ও অন্যান্য এলাকায় সাড়ে ৪ শতাংশ।
জানা যায়, মূলত ব্যাংকগুলো এই ঋণ প্রদান করবে, এর বিপরীতে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে পুনঃ অর্থায়ন নিতে পারবে। আর সময়মতো ঋণ শোধ না করলে ব্যাংকগুলোর হিসাব থেকে কেটে নেবে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে বিচার-বিবেচনা করে ব্যাংকগুলোকে এই ঋণ দিতে হবে।