সালথা (ফরিদপুর)প্রতিনিধি: ফরিদপুরের সালথা উপজেলা সদরের অবস্থিত সালথা সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একটি বহুতল ভবনের নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিডিউল অনুযায়ী কাজ না করে তাদের ইচ্ছেমতো কাজ করছেন। ভবনের প্রথম তলা কলামের সাথে উপরের দ্বিতীয়-তৃতীয় ও চতুর্থ তলার কলামের কোন মিল নেই। কলাম ঢালাই করতে স্টিলের সাটারিংয়ের পরিবর্তে কাঠের সাটারিং ব্যবহার করা হচ্ছে। শিা প্রকৌশল অধিদফতরের আওতায় দুই কোটি ৭৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা ব্যয়ে ভবনটির নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে।
জানা গেছে, সিজেন ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সালথা মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের চারতলা ভবনের এই নির্মাণ কাজ করছেন। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এই বিদ্যালয় ভবনের নির্মাণ কাজের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। এই বিদ্যালয় ভবনে নির্মাণ কাজ ২০১৯ সালের জুলাই মাসে শুরু হয়। ২০২১ সালের জানুয়ারী মাসের মধ্যে এ কাজ শেষ করার কথা। তবে বেধে দেওয়া সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে পারবে না। কারণ কেবল মাত্র চারতলা ভবনের তিনতলার ছাদ ঢালাই ও ইট গাথার কাজ করা হয়েছে। চারতলার ছাদ ঢালাইয়ের জন্য সাটারিংয়ের কাজ চলছে।
অভিযোগ রয়েছে, বিদ্যালয় ভবনের বেইজ ঢালাইসহ শর্ট কলাম ও কলাম নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম করা হয়েছে। ঢালাইতে নি¤œœমানের মরা সাদা পাথর, নি¤œমানের সিমেন্ট, খোয়া ও বালু ব্যবহার করা হয়েছে। শর্ট কলামের ওপরে গ্রেড ভিম ও কলাম ঢালাইর জন্য স্টিলের সাটারিং ব্যবহার করার কথা থাকলেও তা করা হয়নি। কাঠের সাটারিং দিয়ে ঢালাইয়ের কাজ করা হয়েছে। এছাড়া ভবনের ওয়ালে নি¤œমানের ইট গাথা হচ্ছে।
রবিবার দুপুরে সরেজমিনে নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করে দেখা গেছে, কলাম ও ছাদ ঢালাইয়ের জন্য কাঠ দিয়ে সাটারিং করা হয়েছে। নির্মাণাধীন ভবনের এক তলার কলামের সাথে আরেক তলার কলামের মিল নেই। অন্তত ২-৩ ইঞ্চি ব্যবধান প্রথম তলার কলামের সাথে দ্বিতীয় বা তৃতীয় তলার কলামের। কলামের রডে মরিচা ধরেছে। প্রতিটি কলামে কাঠের সাটার ব্যবহার করা হয়েছে। নিয়মানুযায়ী স্টিলের সাটারিং ব্যবহার করার কথা। পরিদর্শনকালে সংশ্লিষ্ট দফতরের কোন কার্য-সহকারী ও উপ-সহকারী প্রকৌশলীকে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক মিজানুর রহমান বলেন, আমি এ কাজের বিষয় তেমন কিছুই জানি না। ঠিকাদারের সাথেও আমার পরিচয় হয়নি। ঠিকাদার কাজের সাইডে কখনো আসেনি। কলাম এলোমেলোর বিষয় আমি কাজ দেখভালের দায়িত্বে থাকা প্রতিনিধিকে বলেছি। তিনি প্লাস্টারের সময় কলামের সমস্যাটি সমাধান করে দিতে চেয়েছেন। তাদের কাজে যা ধরা আছে সেটা দিয়ে করবেন। স্টিলের সাটারিং দিয়ে করার কথা থাকলেও এটা আমার জানা নেই। তারা তো কাঠ দিয়ে সাটারিং করে কাজ প্রায় শেষ করে দিলো।
নির্মাণ কাজের দেখভালের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারের প্রতিনিধি হারুন আর রশিদ বলেন, কলামের মিল খুজে বেড়াইতেছেন। আর কোন কাজ নেই আপনাদের। কাজ সঠিক নিয়মে করা হচ্ছে। কোন অনিয়ম করা হচ্ছে না।
নির্মাণ কাজের তদারকির দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, স্টিমেট অনুযায়ী কাজ হচ্ছে। কোন অনিয়ম করা হচ্ছে না। শুধু কলামে একটু সমস্যা হয়েছে। প্লাস্টারের সময় এটা ঠিক করে দেওয়া হবে। স্টিলের সাটারিংয়ের পরিবর্তে কাঠের সাটারিং ব্যবহার করা হচ্ছে কেন? এই প্রশ্ন করা হলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।