অনলাইন ডেস্ক: গণতান্ত্রিক রাজনীতি ও সাংবিধানিক প্রক্রিয়ার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার জন্য সব রাজনৈতিক দলের নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি নেতারাসহ একটি চিহ্নিত মহল নির্বাচন কমিশন আইন প্রণয়নের মহৎ উদ্যোগকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চাইছেন। তারা তাদের চিরাচরিত অপপ্রচার ও মিথ্যাচারের অপরাজনীতিতে লিপ্ত হয়েছেন।
বুধবার এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশের বিশিষ্টজন ও নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলো সংবিধানের নির্দেশনা মেনে নতুন আইন প্রণয়নের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে। সেখানে বিএনপি ও তাদের দোসর দেশবিরোধী অপশক্তি দূরভিসন্ধিমূলক বক্তব্য দিয়ে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির পাঁয়তারা চালাচ্ছে।
নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল, সমাজের বিশিষ্টজন ও সংশ্নিষ্টদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন আইন প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ এবং মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকে এ সংক্রান্ত খসড়া আইন অনুমোদন পাওয়ায় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সংশ্নিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, আইনটি চূড়ান্ত হওয়ার প্রক্রিয়ায় জাতীয় সংসদে প্রধান বিরোধী দল এবং বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্যরা তাদের মতামত ও প্রস্তাব উপস্থাপনের সুযোগ পাবেন। অথচ গণতান্ত্রিক শিষ্টাচার না মেনে পূর্বনির্ধারিত দূরভিসন্ধি অনুযায়ী বিএনপি নেতারা এ আইন নিয়ে বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করতে শুরু করেছেন।
তিনি আরও বলেন, প্রকৃতপক্ষে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল ও স্বৈরতন্ত্রের গর্ভে জন্ম নেওয়া এবং ষড়যন্ত্র-চক্রান্তের আবর্তে পরিচালিত বিএনপির রাজনৈতিক অবস্থান সবসময়ই গণতান্ত্রিক রীতি-নীতি ও সাংবিধানিক প্রক্রিয়াবিরোধী। যেকোনো উপায়ে ক্ষমতা দখল ও গোষ্ঠী স্বার্থ চরিতার্থের অভিপ্রায়েই নির্ণিত হয় বিএনপির রাজনৈতিক গতিপথ। তাই বিএনপি নেতারা নির্বাচন কমিশন সংক্রান্ত আইন প্রণয়নের উদ্যোগকে স্বাগত না জানিয়ে বিষয়টি নিয়ে অপরাজনীতিতে লিপ্ত হয়েছেন।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আইনটি নিয়ে সুস্পষ্ট ধারণা না থাকার জন্যই বিএনপি নেতারা অন্ধকারে ঢিল ছুড়ছেন। কারণ তাদের জন্মই হচ্ছে সাংবিধানিক ও প্রচলিত আইন লঙ্ঘন করে চোরাগুপ্তা পথে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের মধ্য দিয়ে। এই আইন প্রণয়ন নিয়ে কোনো ধরনের লুকোচুরি করা হয়নি। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে রাষ্ট্রপতির সংলাপে এ বিষয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। কিন্তু গণতান্ত্রিক রীতি ও প্রক্রিয়াকে ভয় পায় বলেই বিএনপি সংলাপে অংশ নেয়নি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে প্রণীত সংবিধানে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন প্রণয়নের বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়। দীর্ঘ প্রায় ৫০ বছর অতিবাহিত হলেও কোনো সরকারই এই আইন প্রণয়নে উদ্যোগ নেয়নি। একমাত্র বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারই টেকসই গণতন্ত্রের শক্তিশালী কাঠামো বিনির্মাণে নির্বাচন কমিশন আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে।
তিনি বলেন, গণতন্ত্রের পুষ্পপত্র একদিনে প্রস্টম্ফুটিত হয় না। সুনিবিড়ি পরিচর্যা ও অনুশীলনের মধ্য দিয়েই গণতন্ত্রের পরিপূর্ণ বিকাশ ঘটে। তবে পরিতাপের বিষয় এখনও গণতন্ত্রবিরোধী অপশক্তি ছদ্মবেশে গণতন্ত্রের পিঠে ছুরিকাঘাত করে চলেছে।
এসময় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন আইনের অনুমোদিত খসড়া সম্পর্কে গঠনমূলক আলোচনা ও দায়িত্বশীল আচরণের জন্য সব রাজনৈতিক দলের নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের।
