নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম : সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘পাহাড়ে সন্ত্রাসী তৎপরতা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে। কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট কেএনএফের মূল ঘাঁটিসহ অধিকাংশ আস্তানা ইতিমধ্যে সেনাবাহিনী কবজায় নিয়েছে। শিগগিরই চূড়ান্ত সফলতা অর্জন করা যাবে। সেই সঙ্গে কেউ যদি স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চায় তাদেরও স্বাগতম জানানো হবে। শান্তিতে যে সমস্যার সমাধান সম্ভব, তার জন্য আমরা সংঘাতে কেন যাব।’
রোববার বান্দরবান সেনানিবাসে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘কেউ মরণ কামড় দিলে তা শক্ত হাতে প্রতিহত করা হবে। সেনাবাহিনী খুবই মানবিক। আমরা সারা বিশ্বে মানবিকতার জন্য বিখ্যাত। শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ ১ নম্বর শান্তিরক্ষাকারী দেশ। এটা অর্জনের পেছনে যেসব গুণাবলি আছে তার মধ্যে অন্যতম হলো–মানুষের প্রতি দরদ ও সহনশীলতা। আমরা কখনো মানবাধিকার লঙ্ঘন হয় এ ধরনের কোন কাজ সেনাবাহিনী কখনো করেনি।’
সেনাপ্রধান বলেন, ‘কেউ যদি দেশ ও জনগণের ক্ষতি করে, সেটা রোধ করতে যদি আমাদের শক্ত অবস্থানে যেতে হয়, অবশ্যই যাব। কিন্তু সেটা আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য না, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সবকিছুর সমাধান চাই। যদি সন্ত্রাসীরা স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে চাইলে তাদের স্বাগত জানানো হবে। অন্যথায় কঠোর হাতে দমন করা হবে।’
জেনারেল এসএম শফিউদ্দিন বলেন, ‘সন্ত্রাসীদের (কুকি চিন) মূল ঘাঁটি দখল করেছি, তাদের মূল প্রশিক্ষণ কেন্দ্র দখল করেছি। তারা এখন আর এই এলাকায় নেই। এখন জনগণের সঙ্গে মিশে আছে কেউ কেউ।’
বান্দরবানের তিন উপজেলায় অনির্দিষ্টকালের জন্য পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন-‘অশান্ত পরিস্থিতির কারণে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি শান্ত হলে নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়া হবে। আমি আশাবাদী, কারণ যেহেতু আমাদের দ্বিতীয় ধাপে যেটুকু দখল করার কথা, সেটুকু আমরা দখল করে ফেলেছি।
আমরা আশা করছি, আরও করব, বর্ডার রোড তৈরি হচ্ছে, পরিস্থিতি যখন শান্ত হবে।’ তখন পর্যটকেরা দলে দলে ঘুরতে আসবে এবং বান্দরবান বাংলাদেশের অন্যতম পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে উঠবে বলে মনে করেন সেনাপ্রধান।
এ সময় তার সঙ্গে সেনাবাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ (সিজিএস) লেফটেন্যান্ট জেনারেল আতাউল হাকিম সারওয়ার হাসান, জেনারেল অফিসার কমান্ডিং ২৪ পদাতিক (জিওসি) ডিভিশন ও এরিয়া কমান্ডার চট্টগ্রাম এরিয়া মেজর জেনারেল মিজানুর রহমান শামীম, রামু সেনা নিবাসের জিওসি মেজর জেনারেল মাসুদুর রহমান, বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল একেএম নাজমুল হাসান, বান্দরবানের রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল গোলাম মহিউদ্দীন আহমেদসহ ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তার উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সেনাপ্রধান বান্দরবান সেনানিবাসে সৈনিক ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।