শেরপুর প্রতিনিধি: শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী পানিহাটা এলাকায় বন্য হাতির আক্রমণে অপূর্ব চাম্বুগং (৪৫) নামে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর যুবকের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৮ মে) মধ্যরাতে এ ঘটনা ঘটে। অপূর্ব চাম্বুগং ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার কুমরীয়া গ্রামের সুখেন ঘাগরার ছেলে। সে ১০ বছর আগে বিয়ে করে নালিতাবাড়ী উপজেলার পানিহাটা গ্রামে গারোপল্লীতে পরিবার নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় বন্য হাতির একটি দল গহীন অরণ্য থেকে নেমে আসে শেরপুরের নালিতাবাড়ী পানিহাটার পাহাড়ে। খবর পেয়ে এলাকাবাসী টর্চলাইট, মশাল জ্বালিয়ে লাটিসোঁটা নিয়ে মাঠে নামে হাতি প্রতিরোধে। পাহাড়ি উঁচু নিচু টিলা বেঁয়ে হাতির পাল নেমে আসে মাঠে। মাঠের ফসল আগেই খেয়ে শেষ করে দিয়েছে হাতি।
স্থানীয়রা জানান, ক্ষেতে ফসল না থাকায় হাতির দলটি আক্রমণ চালায় কাঁঠাল বাগানে। দীর্ঘ দুই ঘন্টা চলে হাতি মানুষের যুদ্ধ। কোনো বাঁধাই তারা মানে না। ইচ্ছেমতো কাঁঠাল খায় বন্য হাতির দল। শত শত লোক তাদের ধাওয়া করে। দলের ৪০/৫০টি হাতি কাঁঠাল খেয়ে পাহাড়ের দিকে রওয়ানা হয়। পিছনে থাকে তিনটি হাতি। হঠাৎ এই তিনটি হাতি উল্টো দৌঁড়ে এসে হামলা চালায় প্রতিরোধকারীদের। একটি হাতি দৌড়ে ধরে আদিবাসী যুবক অপূর্বকে। শূড় দিয়ে পেঁচিয়ে মাটিতে আছড়ে ফেলে পা দিয়ে পিষে মারে তাকে। এতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ওই যুবকের। পরে আক্রমণকারী হাতিরা ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা পাহাড়ের গহীন জঙ্গলে চলে গেলে স্বজনেরা তার লাশ উদ্ধার করে।
জোসেফ সাংমা, প্রবীন মানখিনসহ অনেকেই বলেন, পানিহাটার এই বিশপ পল্লীতে ২০০৭ সালে হাতিরা হামলা চালিয়ে বিপুল ও ফারুককে নিহত করে। মায়ের কোল থেকে কেড়ে নিয়ে শূড় দিয়ে পেঁচিয়ে আছড়ে মারে বিপুলকে। ২০১০ সালে জয়নাল আবেদীন নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছে হাতির হামলায়। হাতির এই দলটি তখন বিশপ পল্লীর সকল বাড়ি-ঘর ভেঙ্গে তছনছ করে দিয়েছিল। হাতির এই দলটির অত্যাচারে পাহাড়ি অঞ্চলে বসবাস খুবই ঝুঁকিপুর্ণ হয়ে গেছে। তাই বন্য হাতির আক্রমণের হাত থেকে মুক্তি চান তারা। নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বছির আহমেদ বাদল বলেন, খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যুর মামলা করা হয়েছে।