লালমনিরহাট পাটগ্রামে প্রসূতিকে মারধর, নবজাতকের মুত্যু

লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ ২০১২ সালে আলতাফ হোসেনের সাথে বিয়ে হয় বিলকিস বেগমের। বিয়ের কয়েক বছর পর তাদের ঘরে জন্ম নেয় পুত্র সন্তান। যার নাম ইমরান। আবারও গর্ভবতী হয় বিলকিস। এই দম্পতি জানতে পায় তাদের এবার কন্যা সন্তান হবে। তাই নামও ঠিক করে রাখা হয় জান্নাতী। কিন্তু জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেড়ে বিলকিস বেগমকে মারধরের ঘটনায় জন্মের পর নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে।

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (৩০ এপ্রিল) ৫ জনকে আসামী করে পাটগ্রাম থানায় একটি মামলা হত্যা মামলা দায়ের করেন গৃহবধুর শ্বশুড় মতিয়ার রহমান। এর আগে গত ২২ এপ্রিল উপজেলার বাউড়া ইউনিয়নের নবীনগর এলাকার কাঠালতলা ম্যাচেরঘাটে গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে।

অভিযুক্তরা হলেন, নবীনগর এলাকার কাঠালতলা ম্যাচেরঘাট গ্রামের শামসুল হকের ছেলে তৈয়ব আলী (৩০), মৃত খচমুদ্দিনের ছেলে মজিবর রহমান (৬৫), মৃত সহির উদ্দিনের ছেলে শামসুল হক (৬২), শামসুল হকের স্ত্রী তহিয়া বেগম (৫০) ও তৈয়ব আলীর স্ত্রী জেসমিন আক্তার (২৪)।

জানা গেছে, মতিয়ার রহমান ও অভিযুক্ত শামসুল হক দুজনে সৎ ভাই। দীর্ঘ দিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ চলছে। এ নিয়ে একাধিকবার স্থানীয় ভাবে শালিসি বৈঠক হয়েছে। এ মতাবস্থায় ২২ এপ্রিল মতিয়ার রহমানের দখলে থাকা ২শতক জমিতে জোড় পূর্বক বাঁশের চারা রোপনের চেষ্টা করে শামসুল গংরা। এ সময় মতিয়ার রহমান বাধা তার উপর হামলা করা হয়। তার আত্মচিৎকারে বাড়িতে থাকা গর্ভবতী পুত্রবধূ ছুটে এসে তাকে বাচানোর চেষ্টা করে। কিন্ত অভিযুক্তরা ওই গর্ভবতী গৃহবধুকেও এলাপাতারি মারধর শুরু করে। এছাড়া তার পেটেও লাথি মারে। এ সময় তাদের চিৎকার শুনে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করারন। এমতাবস্থায় সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় গর্ভবতীর সন্তান প্রসব করে। কিন্তু নবজাতকের অবস্থা খারাপ হওয়ায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৮ এপ্রিল নবজাতকটি মারা যায়। মামলা থানায় নথিভুক্ত হওয়ার পর থেকে অভিযুক্তরা পালাতক রয়েছেন।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, নবজাতক শিশুর ছবি নিয়ে কান্নাকাটি করছেন আলতাফ হোসেন ও বিলকিস বেগম। কন্যাকে হারিয়ে প্রায় পাগল হয়ে গেছেন ওই দম্পতি। এ সময় বিলকিস বেগম কন্না করতে করতে বলেন, জমির জন্য ওরা আমার মেয়ে মেরে ফেলেছে। আমি আমার মেয়েকে ফিরে চাই। এর বিচার চাই।

এ বিষয়ে পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন মহন্ত বলেন, মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে। আসামীদের আটকের চেষ্টা করা হচ্ছে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

Title