আগামী বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগে আয়োজিত রোহিঙ্গাদের জন্য টেকসই মানবিক সহায়তা বিষয়ক অনুষ্ঠানে প্রত্যাবাসনের ওপর জোর দেবে বাংলাদেশ। যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার ওই অনুষ্ঠানে সহ-আয়োজকরা ছাড়াও বাংলাদেশ, আসিয়ান, ভারত, জাপানসহ প্রায় ৫০ দেশ ও সংস্থা এতে অংশ নেবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার প্রত্যাবাসন। একইসঙ্গে মানবিক সহায়তার জন্য পৃথিবীর দেশ ও সংস্থার অবদানকে আমরা স্বাগত জানাই।’ তিনি বলেন, ‘এই সমস্যার টেকসই সমাধানের জন্য আসিয়ান ও অন্যান্য প্রতিবেশী দেশের গুরুত্বপূর্ণ ও কার্যকরী ভূমিকা আশা করছি আমরা।’
রোহিঙ্গাদের ফেরত যাওয়ার ক্ষেত্রে বড় সমস্যা হচ্ছে মিয়ানমারের ওপর রোহিঙ্গাদের আস্থার অভাব জানিয়ে তিনি বলেন, কোনও বেসামরিক মেকানিজমের মাধ্যমে রোহিঙ্গারা ফেরত যাওয়ার পরে তাদের পর্যবেক্ষণ করা হলে একটি আস্থার জায়গা তৈরি হবে।’ বাংলাদেশ স্ব-প্রণোদিত, নিরাপদ ও সম্মানজনক প্রত্যাবাসন চায় জানিয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘এজন্য রাখাইনে সহায়ক পরিবেশ তৈরি করতে হবে।’
মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশ সবসময় যোগাযোগ করতে প্রস্তুত জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা প্রত্যাবাসন সংক্রান্ত তিনটি চুক্তি করেছি এবং এগুলো বাস্তবায়নের জন্য যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করা হয়েছে। কিন্তু গত বছরের মাঝামাঝি এই গ্রুপের শেষ বৈঠক হয়েছে। এরপর বারবার তাগাদা দেওয়ার পরও মিয়ানমার বৈঠকে বসছে না।’ বাংলাদেশ এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ছয় লাখ রোহিঙ্গার তালিকা যাচাই বাছাই করার জন্য দিলেও এরমধ্যে মাত্র ১০ হাজারের যাচাই বাছাই শেষ হয়েছে বলে তিনি জানান।
২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার সেনাবাহিনী অপারেশন শুরু করলে হাজার হাজার রোহিঙ্গা নিহত হয়, নারীরা ধর্ষণ ও গণধর্ষণের শিকার হয় এবং প্রায় ৪০০ গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। প্রাণ বাঁচানোর জন্য প্রায় নয় লাখের মতো রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে।