অনলাইন ডেস্ক: ভারতের উত্তর প্রদেশে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করে বসবাসের অভিযোগে ৭৪ জন রোহিঙ্গা শরণার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির পুলিশ। সোমবার এক বিবৃতিতে পুলিশ বলেছে, উত্তর প্রদেশের ছয়টি শহর থেকে এই রোহিঙ্গা শরণার্থীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, ভারতীয় পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া ৫৫ জন পুরুষ ও ১৪ জন নারী রোহিঙ্গা শরণার্থীর মধ্যে ১০ জন কিশোর ও পাঁচজন শিশু রয়েছে।
এদিকে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম স্ক্রল জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃত নারীদের মধ্যে একজন অন্তসত্ত্বা নারী রয়েছেন বলে জানা গেছে।
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ওই মানুষেরা কতদিন ধরে উত্তর প্রদেশ এলাকায় বসবাস করছিলেন তা সুনির্দিষ্টভাবে জানা না গেলেও মানবাধিকার সংস্থা রোহিঙ্গা হিউম্যান রাইটস ইনিশিয়েটিভ জানিয়েছে, মিয়ানমারে জাতিগত নিপীড়ন থেকে পালিয়ে আসার পর অন্তত ১০ বছর ধরে তারা ওই এলাকায় বসবাস করছেন।
রোহিঙ্গা হিউম্যান রাইটস ইনিশিয়েটিভের পরিচালক সাব্বের কিয়াও বলেন, রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের এই মানুষেরা আবর্জনা সংগ্রহ থেকে শুরু করে নানা ধরনের কায়িক শ্রম দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তারা শুধু ভারতে আশ্রয় চেয়েছেন, আর কিছু চাননি।
মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের হাজার হাজার মানুষকে হত্যা, নারীদের ধর্ষণ ও অসংখ্য গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়ার পর লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী মিয়ানমান ছেড়ে প্রতিবেশি দেশ বাংলাদেশ ও ভারতে আশ্রয় নেয়।
জাতিসংঘ বলছে, গণহত্যার উদ্দেশ্য নিয়ে সামরিক অভিযান চালিয়েছে মিয়ামানের জান্তা সরকার। এ জন্য কয়েকজন জেনারেলকে আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের মুখোমুখি করা হচ্ছে।
ভারতে শরণার্থী সুরক্ষা আইন নেই। দেশটি ১৯৫১ সালের জাতিসংঘ শরণার্থী কনভেনশনেও স্বাক্ষর করেনি।
রোহিঙ্গা হিউম্যান রাইটস ইনিশিয়েটিভের সহ-প্রতিষ্ঠাতা আলী জোহর জানান, গত বছরের শুরুর দিকের হিসাবমতে, ভারতে বর্তমানে ১৮ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী বসবাস করছে।
এদিকে মানবাধিকার সংস্থাগুলো ভারত সরকারকে মানবাধিকারের প্রতিশ্রুতি পালনের আহ্বান জানিয়েছে। কিয়াও মিন বলেন, রোহিঙ্গারাও মানুষ। তাদেরও গণহত্যার হাত থেকে বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে। তারা ভারতে আশ্রয় চেয়েছে, কোনো অপরাধ করেনি।