বড়াইগ্রামে সুদের টাকা শোধরাতে বাইশ দিনের চাঁদনীকে বিক্রি!

ডিসি’র সহায়তায় পূণরায় মায়ের কোলে

বিভিন্ন সমিতিতে Ĺণগ্রস্থ হয়ে পড়ে দিন মজুর রেজাউল করিম। পাশাপাশি এলাকার সুদ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মোটা অংকের সুদে Ĺণ নেয় সে। এই Ĺণ শোধ করতে না পেরে দিশেহারা পিতা ২২ দিন বয়সী চাঁদনীকে মাত্র ১লাখ ১০হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয় এক নিঃসন্তান দম্পত্তির কাছে। কিন্তু এ সংবাদ ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে দ্রæত ব্যবস্থা নেন জেলা প্রশাসক। নাটোরের বড়াইগ্রামের নগর ইউনিয়নের কয়েন গ্রামে এ ঘটনা ঘটার পর জেলা প্রশাসক মো. শাহরিয়াজ পিএএ উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহাঙ্গীর আলম, থানার অফিসার্স ইনচার্জ আনোয়ারুল ইসলাম ও নগর ইউপি চেয়ারম্যান নিলুফার ইয়াসমিন ডালুর সহযোগিতায় চাঁদনীকে উদ্ধার করে মা-বাবার কোলে ফিরিয়ে দেন। বুধবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে তিনি স্থানীয় সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে শিশুটিকে মা-বাবার কাছে ফিরিয়ে দেন। জেলা প্রশাসক এ সময় চাঁদনীর পরিবারকে নগদ ১০ হাজার টাকা, বিভিন্ন ধরণের খাদ্য সামগ্রী উপহার দেন। একই সাথে চাঁদনীর পরিবারকে মুজিব বর্ষের উপহার হিসেবে জমি সহ ঘর, একটি অটোভ্যান, দুস্থ ভাতা কার্ড প্রদান করবেন বলে ঘোষনা দেন।
জানা যায়, নগরের কয়েন গ্রামের রেজাউল করিম ও ফুলজান বেগম দম্পত্তির ৮ ও ৫ বছর বয়সী দুই ছেলের পর কন্যা শিশুর জন্ম হয়। পূর্ণিমার চাঁদের আলোর মতো ঘর আলো করে ফুটফুটে কন্যার জন্ম হওয়ার আনন্দে তার নাম রাখা হয় চাঁদনী। কিন্তু সুদে কারবারীদের Ĺণের টাকা শোধরাতে সেই ঘর অন্ধকার করে গত সোমবার সন্ধ্যায় চাঁদনীকে বিক্রি করা হয় পাবনা জেলার দাশুরিয়া এলাকার এক কলেজ শিক্ষক দম্পত্তির কাছে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে মুহুর্তে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়। ঘটনা জানার পর জেলা প্রশাসক মো. শাহরিয়াজ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের মধ্য দিয়ে শিশুটিকে ফিরিয়ে আনেন।
বড়াইগ্রাম থানার ওসি আনোয়ারুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে শিশুটিকে পাবনার শিক্ষক দম্পত্তি দত্তক হিসেবে গ্রহণ করেছিলো। দত্তক নেয়ার সময় শিশুটির দরিদ্র বাবার হাতে তারা ওই টাকা উপহার হিসেবে তুলে দেন। তবে সুদে কারবারীদের কারণে শিশুটির বাবা এ কাজ করেছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রমাণ পেলে সংশ্লিষ্ট সুদে কারবারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

অমর ডি কস্তা
নাটোর প্রতিনিধি

Leave A Reply

Your email address will not be published.

Title