নিজস্ব প্রতিবেদক: বান্দরবানের রুমা উপজেলার ছিলোপিপাড়া এলাকায় বৃহস্পতিবার সেনাবাহিনীর একটি টহলদল বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন কুকিচিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সদর দপ্তরসহ একটি গোপন প্রশিক্ষণ ক্যাম্প দখল করেছে। এ সময় কেএনএফের পুঁতে রাখা আইইডি (ইম্প্রোভাইসড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) বিস্ফোরণে এক সেনা সদস্য নিহত হন।
আইএসপিআর জানায়, কেএনএফের প্রশিক্ষণ ক্যাম্প এলাকার আশপাশে বসবাসরত স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের নিরাপত্তার স্বার্থে রুমা সেনা জোনের একটি টহলদল গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ওই ক্যাম্পের উদ্দেশে রওনা হয়। কেএনএফের প্রশিক্ষণ ক্যাম্পের কাছাকাছি পৌঁছলে সশস্ত্র সন্ত্রাসী দলটি পালিয়ে যায়।
তবে আনুমানিক সকাল ৯টা ২০ মিনিটে সেনা টহলদলটি ওই সন্ত্রাসীদের বিক্ষিপ্তভাবে পুঁতে রাখা আইইডি বিস্ফোরণে মুখে পড়ে। এতে আহত এক সেনা সদস্যকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হেলিকপ্টারযোগে দ্রুত চট্টগ্রাম সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সৈনিক তুজাম (৩০) মৃত্যুবরণ করেন।
সাধারণ জনগণের নিরাপত্তার স্বার্থে সেনাবাহিনীর বিশেষায়িত দলের এ ধরনের আরো সম্ভাব্য আইইডি শনাক্ত ও নিষ্ক্রিয়করণ প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।
সেনা সদস্যের অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুতে সেনাবাহিনী প্রধান গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
আইএসপিআর আরো জানায়, সাম্প্রতিক সময়ে কেএনএফ সন্ত্রাসীরা বান্দরবানের রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচি উপজেলার পাহাড়ি জনপদে ক্রমাগত হত্যা, অপহরণ, জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি ইত্যাদি মানবাধিকার লঙ্ঘনমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অরাজকতা সৃষ্টি করে চলেছে। তাদের এ ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রতিহত করার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীসহ অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী তৎপর রয়েছে।
১৬ মে বান্দরবানের রুমা উপজেলার সুংসুয়াং পাড়া এবং রাঙামাটি জেলার বিলাইছড়ি উপজেলার জারুলছড়ির মাঝামাঝি এলাকায় কেএনএফের পুঁতে রাখা আইইডি বিস্ফোরণ ও গুলিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দুই সৈনিক নিহত ও দুই কর্মকর্তা আহত হন।
এ ছাড়া গত ১২ মার্চ বান্দরবানের রুয়াংছড়ির খামতাং পাড়া ও রনিনপাড়া মধ্যবর্তী কাটাপাহাড় এলাকায় একটি মেডিক্যাল টিমের স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমের প্রস্তুতিকালে কেএনএর অতর্কিত গুলিবর্ষণে সেনাবাহিনীর মাস্টার ওয়ারেন্ট অফিসার নাজিম উদ্দিন নিহত এবং দুই সেনা সদস্য আহত হন।