নিজস্ব প্রতিবেদক প্রাইমটিভি :: ফরিদপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য তাঁর নির্বাচনী এলাকা চরভদ্রাসন উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাকে কটূক্তি ভাষায় বিবিধ আলাপনের যে অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়েছে সেটি পুরো বানোয়াট বলে দাবি করেছেন স্বতন্ত্র সাংসদ মুজিবর রহমান চৌধুরী নিক্সন। তিনি এওদাবি করেন তাঁর অডিও বক্তব্যকে ‘সুপার এডিট’ করা হয়েছে। তিনি অকথ্য ভাষায় কোন গালিগালাজ করেন নি।
আজ মঙ্গলবার ( ১৩ অক্টোবর বিকেলে) জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে মুজিবর রহমান এসব দাবি করেন। গত শনিবার অনুষ্ঠিত চরভদ্রাসন উপজেলার উপনির্বাচনে ফরিদপুর জেলা প্রশাসকের পক্ষপাতমূলক আচরণ ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে আজ ভাঙা সদরপুর চরভদ্রাসনের জনগণের ব্যানারে সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়। এসময় তাঁর সাথে উপস্থিত ছিলেন ভাঙা উপজেলা চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান, ভাঙা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ফাজুর রহমান, বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর মুন্সীসহ তাঁর নেতাকর্মীরা।
নিক্সন বলেন, নির্বাচনের দিন কেন্দ্রের মাঠে দাঁড়িয়ে সিগারেট খাওয়ায় আমাদের এক কর্মীকে গাড়িতে তোলেন ম্যাজিস্ট্রেট। আমি ইউএনওকে ফোন দিয়ে বিষয়টি জানাই। এর বাইরে যে বক্তব্য ছড়ানো হয়েছে, সেগুলো এডিট করা। এগুলোর কোনো ভিত্তি নেই। তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীরা এসব ছড়াচ্ছেন বলে তিনি দাবি করেন।
চরভদ্রাসনের ইউএনওর সঙ্গে তাঁর মধুর সম্পর্ক উল্লেখ করে মুজিবর রহমান বলেন, সংসদীয় আসনের তিন উপজেলার চরভদ্রাসন ও সদরপুরের ইউএনও নারী আর ভাঙ্গার ইউএনও একজন পুরুষ। তাঁদের সঙ্গে ভাই-বোনের মতো আমাদের সম্পর্ক। তাঁদের সঙ্গে মিলেমিশে এলাকার উন্নয়নে কাজ করছি।
স্বতন্ত্র সাংসদ আরও বলেন, গত শনিবারের উপনির্বাচনের জন্য ২৭ সেপ্টেম্বর চারজন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেয় জেলা প্রশাসন। নির্বাচনের আগের দিন কেন ১২ জন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়া হলো? ইসির কী এ–বিষয়ক চিঠি আছে? নির্বাচনের দিন বিজিবি সঙ্গে নিয়ে ম্যাজিস্ট্রেটদের মারমুখী আচরণ করতে দেখা গেছে। যেখানে নৌকার ভোট বেশি, সেখানেই ম্যাজিস্ট্রেটরা বেশি তাণ্ডব করেছেন বলে তিনি অভিযোগ করেন।
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসককে গত শনিবার নির্বাচনের দিন সন্ধ্যায় ‘দাঁতভাঙা জবাব’ দেওয়ার হুমকি দেন-এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের মুজিবর রহমান চৌধুরী নিক্সন বলেন, সারা দিন ম্যাজিস্ট্রেটরা ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছেন। এতে জনগণের মধ্যে চরম ক্ষোভ ছিল। সেই ক্ষোভের আগুন দমাতে কয়েক দফায় বিভিন্ন কৌশল আমাকে নিতে হয়েচ্ছিল। আমাদের নেতা-কর্মীরা এতটাই উত্তেজিত ছিল আমার কৌশলও কোন আসছিল না। পরে বাধ্য হয়ে প্রশাসনের অনুরোধে ফের আমি নেতা-কর্মীদের শীতল করতে গিয়েছিলেন।
আজ প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, স্বতন্ত্র সাংসদ মুজিবর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সন নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন।
এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে মুজিবর রহমান চৌধুরী নিক্সন দাবি করেন, তিনি (আমি) কোনো আচরণবিধি ভঙ্গ করেননি। যদি আচরণবিধি ভেঙে থাকেন তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে অবশ্যই মামলা হবে। তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের পরের দিন সকাল ১০টার দিকে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ইউএনও আমার ভাঙ্গার বাড়িতে যান। নির্বাচনের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ইউএনও কোনোভাবেই আমার বাড়িতে আসতে পারেন না। জেলা প্রশাসকও নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন বলে উল্টো অভিযোগ তুলেন তরুণ সাংসদ মুজিবর রহমান চৌধুরী নিক্সন।